আপনি কিভাবে ঘুমান? পাশ ফিরে, চিত হয়ে, নাকি উপুড় হয়ে? যেভাবেই ঘুমান না কেন, মনে রাখবেন ঘুমানোর ধরন খুব গুরুত্বপূর্ণ। কেননা ঘুমের সময় আপনার শোয়ার পজিশন বিভিন্ন নিউরোলজিকাল বা স্নায়বিক সমস্যার কারণ হতে পারে। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ঘুমের সময় চিত বা উপুড় হয়ে শোয়ার কারণে আলঝেইমারস ডিজিস, পারকিনসনস ডিজিস সহ বেশ কিছু ভয়াবহ সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ঘুম আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য অংশ। ঘুমের সময় মস্তিষ্ক যাবতীয় বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশন করে। আমাদের দেহে প্রতিটি অঙ্গের বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশনে লসিকা তন্ত্র বা লিম্ফেটিক সিস্টেম বড় ভূমিকা পালন করে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে আমাদের মস্তিষ্কে কোন লিম্ফেটিক সিস্টেম নেই। মস্তিষ্ক তার বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য পদার্থ সেরেব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড থেকে ব্যাপন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ইন্টারস্টিশিয়াল ফ্লুইড কে দিয়ে দেয়। এই ইন্টারস্টিশিয়াল ফ্লুইড পরবর্তীতে মস্তিষ্কের বর্জ্য অপসারণ করে। গবেষকরা এই সিস্টেমের নাম দিয়েছেন গ্লিম্ফেটিক সিস্টেম। কারন ধারণা করা হয় এর পিছনে মস্তিষ্কের গ্লিয়াল সেল বড় ভুমিকা পালন করে। বিজ্ঞানীদের ধারণা আমাদের মস্তিষ্ক যদি ঠিক মত বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশন করতে না পারে তবে এই জমা হওয়া বর্জ্য মস্তিষ্কের নার্ভ বা স্নায়ুর ক্ষতি করে। যার পরিনতি হিসেবে আলঝেইমার্স ডিজিস, পারকিনসনিজম এর মত রোগ হতে পারে।
এবার আসুন ঘুমের সাথে এদের সম্পর্ক যাচাই করে দেখি। বিজ্ঞানীরা ঘুমের সময় বিভিন্ন পজিশনের MRI বা ম্যাগনেটিক রেজোনেন্স ইমেজিং করে দেখতে পেয়েছেন যে, পাশ ফিরে শুলে মস্তিষ্ক বেশি বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশন করতে পারে। উপুড় বা চিত হয়ে শুলে পুরোপুরি বর্জ্য নিষ্কাশন হয় না। তাই পাশ ফিরে শুলে মস্তিষ্কের বিভিন্ন রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। বিজ্ঞানীদের মতে, এ কারনেই পশুদের মধ্যেও পাশ ফিরে শোয়া অনেক জনপ্রিয়।
তাই সুস্থ থাকতে এবং মস্তিষ্কের জটিল রোগ এড়াতে পাশ ফিরে শোয়ার অভ্যাস করুন।