কারেন্সি ট্রেডের বিভিন্ন উপায়: কারেন্সি বিভিন্নভাবে ট্রেড করা যায়। এদের মধ্যে ফরেক্স, ফিউচারস, অপশন্স এবং এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড (ইফটি) উল্লেখযোগ্য।
ফরেক্স এর সুবিধা:
কোন কমিশন নেই: আপনি মূলত ব্রোকারকে কোন কমিশন দেন না। আপনার ব্রোকার আপনাকে মূলত যা চার্জ করবে তা হল “আস্ক – বিড = স্প্রেড”।
কোন মিডলম্যান নেই: আপনি সরাসরি ট্রেড শুরু করতে পারবেন। ট্রেড শুরু করার জন্য আপনাকে কোন তৃতীয় পক্ষকে বলতে হবে না।
নিধারিত লট সাইজ নেই: আপনি কতটুকু ট্রেড করবেন তা আপনার উপর নির্ভর করবে।
স্বল্প খরচ: ট্রেড করতে আপনার ব্রোকার আপনাকে খুব অল্প চার্জ করে। সেটাকে আমরা স্প্রেড বলে থাকি। এটা সাধারনত আপনার লট সাইজের উপর নির্ভর করে।
২৪ ঘন্টার মার্কেট: অন্যান্য মার্কেট সাধরনত সকালে খুলে বিকেলে বন্ধ হয়ে যায়। আর ট্রেডের জন্য আপনাকে পরের দিনের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। ফরেক্স মার্কেট সোমবার খুলে আর শুক্রবার বন্ধ হয়। আর এর মাঝে ২৪ ঘন্টাই খোলা থাকে।
মার্কেট নিয়ন্ত্রন করা যায় না: ফরেক্স মার্কেট এত বড় যে যদি কোন দেশের সেন্ট্রাল ব্যাংক যদি প্রাইস নিজের ইচ্ছামত মুভ করতে চায়, তাহলে তা বেশিক্ষনের জন্য করতে পারবে না।
লেভারেজ: আমারা লেভারেজ সম্পর্কে জানবো। আমরা অল্প অর্থে বিনিময়ে অনেক অর্থ দিয়ে ট্রেড করতে পারি।
মার্কেটে এন্ট্রি সহজ: কম্পিউটার/মোবাইল/ট্যাব আর ইন্টারনেট কানেকশনই যথেষ্ট।
প্রচুর তথ্য পাবেন: ফরেক্স লিখে যদি গুগলে সার্চ দেন তাহলে দেখবেন যে কি পরিমান তথ্য পান। ইন্টারনেটে এত তথ্য আছে যা আপনার জন্য পর্যাপ্ত পরিমানের চেয়ে অনেক বেশি। তাই আপনার তথ্যের অভাব হবে না।
আপনি হয়ত বুঝতে পেরেছেন যে ফরেক্স অন্যান্য মার্কেটের তুলনায় অনেক ভালো আর বেশি সুবিধা প্রদান করে থাকে। নিচের টেবিলটি দেখুন:
Forex | Stock | Futures | |
24-Hour Trading | Yes | No | No |
Minimal or no Commission | Yes | No | No |
Instant Execution of Market Orders | Yes | No | No |
Short-selling without an Uptick | Yes | No | No |
No Middlemen | Yes | No | No |
No Market Manipulation | Yes | No | No |
Leverage | 1:500 | 1:2 | No |
স্পট ফরেক্স মার্কেট: স্পট ফরেক্স মার্কেটটি ডিসেন্ট্রালাইজড মার্কেট। এই জন্য প্রাইস কোট ভিন্ন বোকারে ভিন্ন রকম দেখতে পারেন। এটা আপনার কাছে ভালো নাও লাগতে পারে। কিন্তু আপনি যদি জানেন যে ফরেক্স মার্কেটে প্রচন্ড প্রতিযোগিতার কারনে ব্রোকার আপনাকে প্রায় সবসমযই সবচেয়ে ভালো ডিল অফার করবে। তাহলে আপনি কি বলবেন?
এই সেই কারনের জন্য ফরেক্স মার্কেট একেবারে খাটি একটি মার্কেট না। আবার ডিসেন্ট্রালাইজড দেখে মার্কেটে বিশৃঙ্খলাও নেই।
সারিতে প্রথমে মেজর ব্যাংকগুলোকে দেখতে পাচ্ছেন। অংশগ্রহনকারীরা ইলেকট্রনিক ব্রোকারেজ সার্ভিস (EBS) অথবা রয়টার্স ডিলিং ৩০০০ স্পট ম্যাচিং এর মাধ্যেমে সরাসরি ট্রেড করে থাকে। এই ২টা কোম্পানী কোক আর পেপসির মত। সবসময় মক্কেলের জন্য মারামারি করে। দুটো কোম্পানীই প্রায় একই ধরনের কারেন্সি পেয়ার প্রদান করে থাকলেও, কিছু কিছু কারেন্সি পেয়ারে ১টা তে আরেকটার চেয়ে বেশি তারল্য দেখা যায়।
ইবিএস প্লাটফর্মে EUR/USD, USD/JPY, EUR/JPY, EUR/CHF, and USD/CHF বেশি তারল্য দেখা যায়। রয়টার্স প্লাটফর্মে GBP/USD, EUR/GBP, USD/CAD, AUD/USD, and NZD/USD বেশি তারল্য দেখা যায়। ইন্টারব্যাংকে অংশগ্রহনকারী ব্যাংকগুলো এই প্রাইস দেখতে পায়। এর মানে এটা না যে তারা সেইরেটে ট্রেড করে। এখানে অনেক কিছু আছে যা রেট ভিন্নভাবে পোষন করে।
পরের সারিতে আসে হেজ ফান্ড (Hedge Funds), কর্পোরেশন (Corporations), রিটেইল মার্কেট মেকার (Market makers) এবং রিটেইল ECN। যেহেতু এরা ইন্টারব্যাংকে সরাসরি ট্রেড করতে পারে না, তাদের কমার্শিয়াল ব্যাংকের সাথে ট্রেড করতে হয়। এর মানে তাদের জন্য খরচ একটু বেড়ে যায় আর তাদের ইন্টারব্যাংকের অংশগ্রহনবারীদের চেয়ে একটু বেশি চার্জ করতে হয়।
একদম শেষের সারিতে রিটেইল ট্রেডাররা পরে। মানে আমরা। ফরেক্স মার্কেটের অসংখ্য সুযোগ সুবিধার জন্য আমরা এই মার্কেটে অনেক বড়বড় সত্ত্বাদের সাথে ট্রেড করতে পারি।
ফরেক্সে কিভাবে উপার্জন করা যায়?
আমরা পূর্বেই বলেছি ফরেক্স মার্কেটে ট্রেড করা হয় মূলত কারেন্সির জোড়ায় জোড়ায়।
ছবিতে eur/usd পেয়ারের প্রাইস দেখা যাচ্ছে। এখন আপনি যদি বাই অর্ডার করেন আর এই পেয়ারের প্রাইস যদি আরো বেড়ে যায় তাহলে আপনার লাভ হবে, অন্যথায় লস হবে। আবার আপনি যদি সেল অর্ডার করেন আর এই পেয়ারের প্রাইস যদি আরো কমে যায় তাহলে আপনার লাভ হবে কিন্তু অন্যথায় আপনার লস হবে।
এখানে ইউরো হলো বেস কারেন্সি আর ইউএসডি হলো কোট কারেন্সি। যখন আপনি কিনেন তখন আপনি দেখতে পারেন যে আপনার ১ ইউনিট বেস কারেন্সি কিনতে কত ইউনিট কোট কারেন্সি প্রয়োজন। আপনি যখন বিক্রি করেন তখন আপনি দেখতে পারেন যে, আপনি ১ ইউনিট কোট কারেন্সির বিনিময়ে কত বেস কারেন্সি পাবেন। আপনি তখন কিনবেন যখন মনে করবেন যে, বেস কারেন্সির মুল্য বৃদ্ধি পাবে। আপনি তখন বিক্রি করবেন যখন মনে করবেন যে, বেস কারেন্সির মুল্য কমবে।
আপনি প্রথমে নির্ধারন করবেন যে, আপনি কারেন্সির পেয়ার (জোড়া) বাই না সেল করবেন। যদি আপনি বাই (ক্রয়) করতে চান তাহলে আপনি চিন্তা করছেন যে কারেন্সির ভ্যালূ বাড়বে। এই কেনাকে Long বলা হয়। যদি আপনি সেল (বিক্রয়) করতে চান তাহলে আপনি চিন্তা করছেন যে কারেন্সির ভ্যালু কমবে। এই সেল করাকে Short বলা হয়।
Bid/Ask: যে কোন কারেন্সি পেয়ারে দুইটি প্রাইস দেখা যায়। নিচের ছবিটি দেখুন। প্রথমটি হল Bid প্রাইস আর পরেরটি হল Ask প্রাইস। Bid প্রাইসের ভ্যালু সবসময় Ask প্রাইসের চেয়ে কম থাকবে।
Bid – Ask = Spread (ব্রোকারের লাভ)
Spread হল ব্রোকারের লভ্যাংশ যা আপনার ট্রেডের ভিতর থেকে কেটে নেয়। লক্ষ্য করবেন যে আপনি যখন Buy অর্ডার দেন, তখন ট্রেড Ask মূল্যে শুরু হয় আর যখন Sell অর্ডার দেন, তখন ট্রেড Bid মূল্যে শুরু হয়। তাছাড়া আরো লক্ষ্য করবেন যে, আপনার ট্রেড কিছুটা লস দিয়ে শুরু হয়েছে। এটার কারন হল যে ব্রোকার আপনার ট্রেড থেকে স্প্রেড কেটে নিয়েছে। মনে রাখবেন যে সব কারেন্সির স্প্রেড সমান না।