কিডনি ডায়ালাইসিস সম্পর্কে যা অবশ্যই জানা দরকার

কিডনি হচ্ছে সীমের বিচির মত দুটি অঙ্গ, যা আমাদের শরীরের পিছনের দিকে মেরুদণ্ডের দুপাশে থাকে। কিডনি শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করে দেয় এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে গুরত্বপূর্ন ভূমিকা রাখে। এছাড়া হাড়ের গঠনেও কিডনি ভূমিকা রাখে। কিডনি আরো বেশ কয়েকটি গূরুত্বপূর্ণ কাজ করে। যেমন এটি শরীরে সোডিয়াম ও পটাশিয়াম-এর সঠিক মাত্রা নিশ্চিত করে এবং ইরিথ্রোপোয়েটিন তৈরি করে।

কিডনির কার্যকারিতা হ্রাস পেলে যখন তা ঠিকমত কাজ করতে পারেনা তখন ডায়লাইসিস করা হয়। সাধারণত রক্তে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা ৬ এর বেশি হলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা ডায়ালাইসিস করার পরামর্শ দেন।

ডায়ালাইসিসের ধরন:

ডায়ালাইসিস মূলত ২ ধরনের:

১। হেমোডায়ালাইসিস

২। পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস

১. হেমোডায়ালাইসিস: সাধারনত একটি মেশিনের মাধ্যমে হেমোডায়ালাইসিস করা হয়। মেশিনটি শরীরের বাইরে স্থাপিত থাকে এবং এর মধ্যকার ফিল্টারের মধ্য দিয়ে রক্ত প্রবাহিত করা হয়। পরিশোধন শেষে রক্ত পুনরায় শরীরে ফেরত পাঠানো হয় ।

২. পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস: এই প্রক্রিয়ায় রোগীর শরীরের মধ্যেই রক্ত পরিশোধন করা হয়। একধরনের বিশেষ তরল পেটের ভিতরে রাখা হয় যেটি বর্জ্য পদার্থ গ্রহণ করে নেয় এবং নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া শেষে তরল বের করে নেয়া হয়। পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস সাধারনত বাসায় করা হয় ।

কখন ডায়ালাইসিস প্রয়োজন:

দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ (ক্রনিক কিডনি ডিজিজ)-এ আক্রান্ত রোগী যাদের EGFR- < 15-30 এবং S. Creatinine > 66 তাদের ডায়ালাইসিস কিংবা কিডনি ট্রান্সপ্লান্টের প্রয়োজন হয় ।

হেমোডায়ালাইসিস কিভাবে কাজ করে:

হেমোডায়ালাইসিস করার জন্য প্রথম কাজ হলো একটি ছোট অপারেশনের মাধ্যমে ব্লাড একসেস তৈরী করতে হয় । সাধারনত ইমার্জেন্সী ক্ষেত্রে বা অতীব জরুরি অবস্থায় ক্যাথেটার করা হয়। স্থায়ী প্রয়োজনে পরবর্তীতে ফিস্টুলা করা হয় ।

ক্যাথেটার সাধারণত ২ টি স্থানে করা যায়।

১। জুগুলার ভেনাস ক্যাথেটার

২। ফিমোরাল ক্যাথেটার

ফিস্টুলা: এটির অপর নাম আর্টারিও-ভেনাস ফিস্টুলা। এই প্রক্রিয়ায় একটি আর্টারি বা ধমনীর সাথে একটি ভেইন বা শিরার সংযোগ স্থাপন করা হয়। পুরোপুরি চালু হাওয়া কিংবা ডায়ালাইসিস করার মত অবস্থায় যেতে এটি সাধারনত ৪ থেকে ৫ সপ্তাহ সময় নেয়।

গ্রাফট: A-V Graft বা আর্টারিও ভেনাস গ্রাফট তৈরী করা হয় একটি প্লাস্টিক টিউব দিয়ে। এটি ২ সাপ্তাহ সময় নেয় পুরোপুরি চালু হওয়ার জন্য। তবে এটা আর্টারিও-ভেনাস ফিস্টুলার মত দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবহার করা যায় না । তবে আর্টারিও-ভেনাস গ্রাফট একবার নষ্ট হলে পূনরায় করা যায়।

পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস কিভাবে কাজ করে:

পেরিটোনিয়াল পদার্থকে কাজে লাগিয়ে পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস করা হয়। এক্ষেত্রে নাভির পাশে একটি ক্যাথেটার স্থাপন করা হয়। ক্যাথেটার দিয়ে বিশেষ তরল পদার্থ ঢুকিয়ে পেটে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত রেখে তারপর পূনরায় সে তরল পর্দাথ বের করে আনা হয়। পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস ২ ধরনের: CAPD এবং CCPD।

InfotakeBD

View posts by InfotakeBD
InfotakeBD is a information sharing blog, We share information for you. Please visit us and if you want to contribute for this blog please email us infotakebd@gmail.com. Thank you

Leave a Reply

Scroll to top
error: Content is protected !!