গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কাদের বেশি
ডায়াবেটিস আমাদের কাছে খুবই পরিচিত স্বাস্থ্য সমস্যা। আমাদের চারপাশের অনেকে এই জটিল সমস্যায় ভুগছেন। কিন্তু আজ আমরা ভিন্ন ধরনের এক ডায়াবেটিসের কথা জানব। এর নাম জেসটেশনাল ডায়াবেটিস বা সোজা বাংলায় গর্ভকালীন ডায়াবেটিস। মূলত গর্ভকালীন সময়ে নারীদের এটা হয়ে থাকে। নারীদের জন্য তাই এই রোগ সম্পর্কে জেনে রাখা অতীব জরুরী।
গর্ভকালীন ডায়াবেটিস কি ?
আগে ডায়াবেটিস ছিল না এমন নারীদের যদি গর্ভকালীন সময়ে রক্তে সুগারের পরিমাণ স্বাভাবিকের চাইতে অত্যাধিক বেশি থাকে তবে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হয়েছে বলে ধরে নেয়া হয়। এটা সাধারনত সন্তান জন্মগ্রহনের পরে বিলুপ্ত হয়ে যায়। মূলত গর্ভকালীন সময়ে দেখা দেয় বলেই এর নাম গর্ভকালীন ডায়াবেটিস। সাধারনত এই ডায়াবেটিস গর্ভধারনের ২৪-২৮ সপ্তাহ (৬-৭ মাস) বয়স সময়কালে দেখা দেয়।
রোগ নির্ণয়ের উপায়:
গর্ভধারণের ২৪-২৮ সপ্তাহের মধ্যে রক্তে সুগার বা গ্লুকোজের মাত্রা পরিমাপ করে এই ডায়াবেটিস নির্ণয় করা যায়। অধিক ঝুঁকিপূর্ণ মায়েদের ক্ষেত্রে এর আগেই রক্তে সুগারের পরিমাণ দেখা উচিত।
কারা ঝুঁকিপূর্ণঃ
গর্ভকালীন ডায়াবেটিস মা ও শিশু উভয়ের জন্যই ঝুঁকিপূর্ণ। এই রোগে আক্রান্ত হলে নানা ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই কাদের আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেশি তা জেনে নেয়া জরুরি। কেননা এর মাধ্যমে হয়ত এ সম্পর্কিত জটিলতা অনেকটাই এড়ানো সম্ভব হবে। চলুন জেনে নেই গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের জন্য কারা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ-
১) যারা ৩০ বা ততোধিক বয়সে গর্ভধারণ করেন,
২) যারা অতিরিক্ত শারীরিক ওজনের অধিকারী,
৩) যারা এর আগে গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়েছিলেন,
৪) যাদের পরিবারের কাছের সদস্যদের গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবার নজির রয়েছে,
৫) যাদের ডিম্বাশয়ে বহুসংখ্যক সিস্ট রয়েছে,
৬) যারা পূর্বে বেশি ওজনের (>৪০০০ গ্রাম) শিশু জন্ম দিয়েছেন,
৭) যারা এর আগে প্রসবকালীন জটিলতার শিকার হয়েছেন,
8) যারা পূর্বে জমজ শিশু জন্ম দিয়েছেন।
ঝুঁকিপূর্ণ হলেই ভয় পাওয়ার কিছু নেই। বরং নিজের ঝুঁকি সম্পর্কে জানলে সেই অনুযায়ী চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে ও নিয়ম মেনে চললে গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের জটিলতা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব।