পিত্তথলি বা গলব্লাডারে পাথর খুবই পরিচিত একটি রোগের নাম। আত্মীয়-পরিজন বা আশেপাশের চেনাজানা মানুষের মধ্যে কারো এই রোগ হয়নি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। পিত্তথলির পাথর থেকে ক্যান্সার সহ আরো অনেক ধরনের জটিলতা তৈরী হতে পারে। অথচ কোন লক্ষণ ছাড়াই এই রোগ শরীরে বাসা বাঁধে। ডাক্তারি ভাষায় এই রোগের নাম কোলেলিথিয়াসিস।
পিত্তথলিতে পাথর কি?
পিত্তথলি লিভারের নিচের দিকে অবস্থিত একটি থলের মত অংশ। লিভার বা যকৃতে যে পিত্তরস উৎপাদিত হয় তা ধারন করা এবং এর ঘনত্ব বৃদ্ধি করাই পিত্তথলির কাজ। পিত্তরস চর্বি জাতীয় খাবার পরিপাকে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। নানাবিধ কারণে বিভিন্ন ধরনের পদার্থ জমে পিত্তথলিতে পাথরের সৃষ্টি হয়। পিত্তথলির পাথর ছোট ছোট বালুর দানার আকৃতি থেকে শুরু করে মটরের দানা বা তার চেয়ে বড় শক্ত আকৃতির হতে পারে। এটি কোলেস্টেরল, বিলিরুবিন বা ক্যালসিয়াম দিয়ে তৈরী হতে পারে এবং সাধারণত হালকা বাদামি, সাদা বা কালো বর্ণ ধারন করে থাকে। পিত্তথলিতে পাথর একটি নীরব ব্যাধি যা সচরাচর রোগীর পক্ষে বুঝা সম্ভব হয় না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অন্য কোন রোগ নির্ণয়কালীন সময়ে আল্ট্রাসনোগ্রাম করলে এই রোগের অস্তিত্ব টের পাওয়া যায়।
পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার কারন:
১. পিত্তরস জমে যাওয়া,
২. পিত্তথলির প্রদাহ,
৩. পিত্তরসের রাসায়নিক পরিবর্তন।
কাদের ঝুঁকি বেশি:
১. অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণ,
২. স্হূলতা বা অত্যঅধিক শারীরিক ওজন,
৩. পুরুষ অপেক্ষা নারীদের এই রোগ বেশি হয়,
৪. চল্লিশোর্ধ বয়স,
৫. হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া ব্যক্তি,
৬. জন্মনিরোধক পিল গ্রহণ এবং
৭. গর্ভাবস্থা।
প্রতিরোধে করণীয়:
১. প্রতিদিন কমপক্ষে ২ লিটার পানি পান করতে হবে,
২. চর্বিযুক্ত খাবার কম খেতে হবে,
৩. শরীরের অতিরিক্ত ওজন হঠাৎ না কমিয়ে ধীরে ধীরে কমাতে হবে,
৪. রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে,
৫. ধূমপান এবং মাদক গ্রহণ পরিত্যাগ করতে হবে,
৬. প্রচুর পরিমাণ আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে,
৭. টিনজাত ও প্রক্রিয়াজাতকৃত খাবার পরিহার করা উত্তম,
৮. দীর্ঘদিন যাবত জন্মবিরতিকরণ পিল গ্রহণ না করা বা এ বিষয়ে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলা।