যদি এমন কোন পদ্ধতি থাকতো যাতে আপনি মার্কেটের টপে সেল আর বটমে বাই করতে পারতেন, তাহলে কেমন হত? আচ্ছা এমন হলে কেমন হত যে, আপনি একটা লং পজিশনে আছেন আর চার্টে দেখতে পারছেন যে এখন ট্রেড ক্লোজ করার সময় হয়েছে? মনে মনে বলছেন, ধুর ছাই এইটা কি করে সম্ভব। আসলে এরকম একটা উপায় আছে আর তার নাম লজেন্স থুক্কু ডাইভারজেন্স ট্রেডিং। ডাইভারজেন্স দেখা যায় যখন আপনি প্রাইস অ্যাকশন আর কোন ইনডিকেটর ব্যবহার করেন। কোন ইনডিকেটর ব্যবহার করবেন সেটা তেমন জরুরী না। আপনি আরএসআই, এমএসিডি, স্টোকাস্টিক, সিসিআই ইত্যাদি ব্যবহার করে ডাইভারজেন্স বের করতে পারেন। ডাইভারজেন্সের বিশেষত্ব হল এটাকে আপনি লিডিং ইনডিকেটর হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন, আর এটা চার্টে খুজে পাওয়া খুব কষ্টকর কিছু না। যদি সঠিকভাবে এটা দিয়ে ট্রেড করতে পারেন তাহলে আপনি সমানে লাভের পরে লাভ করতে পারবেন। ডাইভারজেন্সের আরেকটা বিশেষত্ব হল যে আপনি টপের দিকে সেল অ্যান্ড বটমের দিকে বাই করতে পারবেন। এটা আপনার রিস্কের তুলনায় রিওয়ার্ড বাড়িয়ে দেয়।
ডাইভারজেন্সের যে ধারনা: যখন প্রাইস হাইয়ার হাই এবং লোয়ার তৈরি করে, ইনডিকেটরেরও হাইয়ার হাই এবং লোয়ার তৈরি করার কথা থাকে। যখন সেটা না হয় তখন প্রাইস আর ইনডিকেটর ভিন্নমত পোষণ করে। তথা ডাইভারজেন্স। ডাইভারজেন্স ট্রেন্ডের দুর্বলতা অথবা রিভার্সাল চিহ্নিত করার জন্য একটা কার্যকরী ট্যুল। মাঝেমাঝে এটা ট্রেন্ড কন্টিনিউয়েশনের সিগন্যাল হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।
ডাইভারজেন্স প্রধানত ২ প্রকারঃ ১. রেগুলার ২. হিডেন
রেগুলার ডাইভারজেন্স: রেগুলার ডাইভারজেন্স ট্রেন্ড রিভার্সালের সম্ভাব্য লক্ষন হিসেবে ব্যাবরিত হয়।
রেগুলার বুলিশ ডাইভারজেন্স:যখন প্রাইস লোয়ার লো আর ইনডিকেটর হাইয়ার লো তৈরি করে তখন সেটাকে রেগুলার বুলিশ ডাইভারজেন্স বলে।
এটা সাধারনত ডাউনট্রেন্ডের শেষের দিকে দেখা যায়। যখন প্রাইস ২য় লো বানায় আর ইনডিকেটর নতুন লো তৈরি করতে ব্যার্থ হয়, তখন সেখানে একটা প্রাইস রিভার্সালের সম্ভাবনা থাকে। যেহেতু প্রাইস আর ইনডিকেটরের স্বভাবত একই রকম আচরন করা উচিত আর এখানে সেটা হচ্ছে না।
রেগুলার বিয়ারিশ ডাইভারজেন্স: প্রাইস হাইয়ার হাই আর ইনডিকেটর লোয়ার হাই তৈরি করে তখন সেটাকে রেগুলার বুলিশ ডাইভারজেন্স বলে।
এটা আপট্রেন্ডের দিকে পাওয়া যায়। প্রাইস ২য় হাই তৈরি করার পর ইনডিকেটর নতুন হাই তৈরি করতে ব্যার্থ হয়, আর তখন আপনি প্রাইস রিভার্সালের আশা করতে পারেন।
হিডেন ডাইভারজেন্স: ডাইভারজেন্স শুধুমাত্র ট্রেন্ড রিভারসালেরই সংকেত দেয় না, কখন ট্রেন্ড কন্টিনিউ করবে, তারও সংকেত দেয়। মনে আছে, ট্রেন্ড হল আপনার ফ্রেন্ড? তাই যখন ট্রেন্ড কন্টিনিউ করার সিগন্যাল পাবেন, সেটা আপনার জন্য ভালোই হবে। হিডেন ডাইভারজেন্স হল ট্রেন্ড কন্টিনিউ করার জন্য সিগন্যাল দেয়।
হিডেন বুলিশ ডাইভারজেন্স: যখন প্রাইস হাইয়ার লো আর ইনডিকেটর লোয়ার লো তৈরি করে তখন তাকে হিডেন বুলিশ ডাইভারজেন্স বলা হয়।
এটা প্রাইস যখন আপট্রেন্ডে থাকে তখন দেখা যায়। যখন প্রাইস হাইয়ার লো তৈরি করে দেখুন যে ইনডিকেটরও একই কাজ করছে কিনা। যদি না করে থাকে তাহলে আমরা হিডেন ডাইভারজেন্স পাচ্ছি।
হিডেন বিয়ারিশ ডাইভারজেন্স: যখন প্রাইস লোয়ার হাই আর ইনডিকেটর হাইয়ার হাই তৈরি করে তখন তাকে হিডেন বুলিশ ডাইভারজেন্স বলা হয়।
এতক্ষণে হয়ত ধারনা করে ফেলেছেন যে এটা ডাউনট্রেন্ডের সময় দেখা যায়। যখন এটা চার্টে ধরা পরে তখন প্রাইস ফল করার সম্ভাবনা থাকে।
ডাইভারজেন্স কীভাবে ট্রেড করতে হয়: এতক্ষণ আমরা দেখছিলাম যে ডাইভারজেন্স কিভাবে চিহ্নিত করতে হয়। এখন ডাইভারজেন্স দিয়ে কিভাবে লাভ করতে হয় সেটা দেখি।
রেগুলার বুলিশ ডাইভারজেন্স: নিম্নের চার্টে আমরা প্রথমে ডাউনট্রেন্ড দেখতে পাচ্ছি। তারপর প্রাইস লো তৈরি করেছে আর তার সাথে এমএসিডিতেও লো দেখা যাচ্ছে। পরে প্রাইস রিট্রেস করে নতুন লো তৈরি করেছে কিন্তু এমএসিডি নতুন লো তৈরি করতে পারে নি। এটা আমাদের সংকেত দিচ্ছে যে ডাউনট্রেন্ড এখন শেষ হতে যাচ্ছে। যেই কথা সেই কাজ। পরে আমরা দেখতে পারছি যে প্রাইস ঠিকই রিভার্স করেছে।
রেগুলার বিয়ারিশ ডাইভারজেন্স: নিম্নের চার্টে আপট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে আর প্রাইস হাইয়ার হাই এবং আরএসআই লোয়ার হাই তৈরি করেছে। এখানে আমরা রেগুলার বিয়ারিশ ডাইভারজেন্স চিহ্নিত করেছি। তারপর প্রাইস ফল করলো। ডাইভারজেন্স কাজ করেছে।
হিডেন বুলিশ ডাইভারজেন্স: আপট্রেন্ড আর প্রাইস হাইয়ার লো এবং ইনডিকেটর লোয়ার লো তৈরি করেছে। আমরা জানি যে এটা হিডেন বুলিশ ডাইভারজেন্স। পরবর্তীতে প্রাইস উপরে ওঠার সংকেত দিচ্ছে।
হিডেন বিয়ারিশ ডাইভারজেন্স: ডাউনট্রেন্ড আর আমরা চার্টে বিয়ারিশ ডাইভারজেন্স দেখতে পাচ্ছি। আমরা জানি যে এটা পরবর্তীতে প্রাইস ফল করার সংকেত দিচ্ছে। আমরা সেল করার প্রস্তুতি নেব।
আপনি হয়ত মনে মনে বলছেন যে, এইসব তো ব্যাপার না, ট্রেড কিভাবে করে তা তো আর দেখালেন না।
ডাইভারজেন্স খুব ভালো সিগন্যাল দেয় দেখে, এটাকে অন্ধভাবে ট্রেড করবেন না। নিজের ট্রেডিং প্লান তৈরি করুন আর যেভাবে আপনার জন্য ভালো হয় সেভাবে ট্রেড করুন।
মোমেন্টাম ট্রিকস: যদিও ডাইভারজেন্স আপনার ট্রেডিং ট্যুলবক্সের জন্য ভালো একটি ট্যুল, অনেকসময় এটাও আপনাকে লসের সম্মুখীন করবে। কোন মেথডই আপনাকে ১০০% সঠিক সিগন্যাল দিবে না। তাই আরও কনফারমেশন নিয়ে ট্রেড করলে লস কম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
ইনডিকেটরের সাহায্যে এন্ট্রিঃ
ইনডিকেটর ক্রসওভারঃ ডাইভারজেন্স দেখার পরে ইনডিকেটর ক্রসওভারের (যেমন এমএসিডি, স্টোকাস্টিক) অপেক্ষা করুন।
ওভারবট/ওভারসোল্ড থেকে বের হওয়াঃ ডাইভারজেন্স দেখার পরে, ইনডিকেটরের ওভারবট অথবা ওভারসোল্ড জোন থেকে বের হওয়ার অপেক্ষা করতে পারেন।
ইনডিকেটর/ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করার অপেক্ষা করুনঃ আমরা সাধারনত প্রাইসে ট্রেন্ডলাইন ব্যবহার করি কিন্তু আগে ইনডিকেটরে ট্রেন্ডলাইন ব্যবহার করা দেখেছি। সেটাও ব্যবহার করতে পারেন।
ডাইভারজেন্স বের করা খুব কষ্টকর না। এগুলো চোখ বন্ধ করে ট্রেড করা গেলেও অন্যান্য টেকনিক্যাল অ্যানালিসিস মেথড ব্যবহার করে ট্রেড করার পরামর্ষ দিব।
চলুন একটা গল্প দেখিঃ
আমরা নিদর্শনের “ডাইভারজেন্স কীভাবে ট্রেড করতে হয়” থেকে রেগুলার বিয়ারিশ ডাইভারজেন্সের উদাহরনের চার্টটা ব্যবহার করবো।
উপরের চার্ট থেকেঃ
১) AB=CD পূর্ণ হয়েছে। ডাইভারজেন্স দেখা যাচ্ছে। পরবর্তীতে বিয়ার ক্যান্ডেল। যদি ডাইভারজেন্স কাজ করে তাহলে এখানে যদি কম রিস্কে সেল দেই তাহলে অনেক লাভ পাবো। ১% রিস্ক নিয়ে ভাগ করে দিলাম ২ টা সেল। ধরুন ট্রেড ১ ও ২।
২) প্রাইস সাপোর্ট জোনে এসেছে। ওপেন করা ট্রেড থেকে কিছু লাভ নেয়ার জন্য ট্রেড ১ ক্লোজ করে দিলাম। বাকি ট্রেডেটাকে ব্রেকএভেনে আনবো কি আনবো না?
৩) সাপোর্ট ব্রেক করে প্রাইস নিচে নেমে আবার উপরের দিকে রিট্রেস করলো। এখন সেটা রেজিস্টান্স হিসেবে কাজ করতে পারে। যদি না করে এই চিন্তা করে ট্রেড ২ কে ব্রেকএভেনে আনলাম। দেখা যাচ্ছে রেজিস্টান্স ভাঙেনি, আবার আগের নিয়মে দিলাম ২ টা সেল। ধরি ট্রেড ৩ আর ৪।
৪) প্রাইস AD মুভের প্রায় ৬১.৮% রিট্রেস করেছে। আবার হিডেন বুলিশ ডাইভারজেন্স দেখা যাচ্ছে। সব সেল ট্রেড ক্লোজ করার সময় এখানে। মনে মনে বলছি, যদি ডাইভারজেন্স কাজ না করে, তাহলে কতগুলো পিপ হাতছাড়া হবে। এই চিন্তা করে ট্রেড ৩ আর ৪ কে ক্লোজ করে দিলাম। ট্রেড ২ এর স্টপ লস এখন প্রফিটে এনে রাখলাম। আমার এখন কোন লস নেই। নতুন যে ডাইভারজেন্স পেলাম, এখন সেটা ট্রেড করবো। সেই ভেবে দিলাম ২টা বাই। ধরে নেই ট্রেড ৫ ও ৬।
৫) দেখা যাচ্ছে প্রাইস রেজিস্টান্স তৈরি করার চেষ্টা করছে। পরে দেখা যাচ্ছে যে ক্যান্ডেলস্টিক বিয়ারিশ সিগন্যাল দিচ্ছে। ভয় লাগছে, ট্রেড ৫ ক্লোজ করে দিলাম, লস কমানোর জন্য। আর ট্রেড ২ এর স্টপ লস বর্তমান রেজিস্টান্সের উপরে এনে দিলাম।
দেখা যাচ্ছে রেজিস্টান্স ভাঙতে কষ্ট হচ্ছে। প্রাইস ৩য় বারেও রেজিস্টান্স ভাঙতে পারেনি। ট্রেড ৬ কিছুটা লসে ক্লোজ করে দিলাম।
৬) দেখা যাচ্ছে চার্টে আরেকটা রেগুলার বুলিশ ডাইভারজেন্স এসেছে। মনে মনে বলছি, একটু আগে বুলিশ ডাইভারজেন্সে ধরা খেলাম। এইটা ধরা যাবে না।
৭) ট্রেড ২ স্টপ লসে যেয়ে বন্ধ হয়ে গেলো। যা মামা, এই ডাইভারজেন্সটা তো কাজ করলো আর রেজিস্টান্সটাও ভাঙল। এইটা ধরলে কত পিপ পেতে পারতাম। কি যে মিস করলাম চিন্তা করে জিহ্বা ৬ ইঞ্চি বের হয়ে গেলো।
৮) পরবর্তীতে দেখছি সাপোর্ট হোল্ড করছে। এখন কি একটা ট্রেডে লাফ দেয়া যায়?
গল্প শেষ… “হিস্টোরি রিপিটস ইটসেলফ!”
ডাইভারজেন্স ট্রেডিংয়ের নিয়মকানুন: এতক্ষণ খুব মজায় ছিলেন এই চিন্তা করে, যে ডাইভারজেন্স ট্রেডের জন্য কোন নিয়মনীতি নেই, তাই না? আপনার মজা এখন শেষ। ডাইভারজেন্স ট্রেডিঙের কিছু নিয়মকানুন আছে যা মেনে চলা প্রয়োজন। যদি এগুলো মেনে চলেন তাহলে আপনার জন্য ভালো, আর না মানলে চার্টের দিকে না তাকিয়েই ডাইভারজেন্স ট্রেড করতে পারবেন। (মানে লস খাবেন)
ডাইভারজেন্স ট্রেডিঙের ৯ টি বিধান নিম্নে দেয়া হলঃ
১) ডাইভারজেন্স পেতে হলে নিম্নলিখিত যেকোনো গুনাগুন থাকতে হবেঃ
– আগের হাইয়ের চেয়ে, হাইয়ার হাই।
– আগের লো এর চেয়ে লোয়ার লো।
– ডাবল বটম।
– ডাবল টপ।
যদি এগুলোর কোন একটাও চার্টে না পাওয়া যায়, তাহলে সেখানে কোন ডাইভাজেন্স নেই।
২) পরপর টপস অথবা বটমে লাইন আঁকুন। শুধুমাত্র এই জিনিষগুলো লক্ষ্য করবেনঃ হাইয়ার হাই, ফ্ল্যাট হাই, লোয়ার লো, ফ্ল্যাট লো।
৩) টপের সাথে টপ এবং বটমের সাথে বটম কানেক্ট করুন।
৪) চোখ সবসময় প্রাইসে থাকবে
প্রাইস আপনাকে কি বলতে চায় তা দেখেন। ইনডিকেটর আপনার সহায়ক হিসেবে চার্টে লাগানো হয়।
৫) প্রাইস এবং ইনডিকেটরের টপ ও বটম একই এরিয়াতে থাকবে। যদি প্রাইস এক যায়গায় টপ অথবা বটম তৈরি করে আর ইনডিকেটর আরেক যায়গায়, তাহলে সেটা ভ্যালিড ডাইভারজেন্স না।
৬) লাইন ঠিক রাখেন
আপনি যে হাই আর লো চার্টে খুজে বের করেন, ইনডিকেটর হাই অথবা লো একই যায়গায় থাকতে হবে।
৭) স্লোপ রাইড করা
ডাইভারজেন্স দেখা যায় যখন ইনডিকেটরের টপ/বটমের স্লোপ লাইন প্রাইসের টপ/বটমের সাথে ভিন্নমত দেয়। এই ক্ষেত্রে প্রাইসে আমরা উদ্ধগামি, নিম্নগামী, অথবা ফ্ল্যাট স্লোপ দেখতে পাবো।
৮) ডাইভারজেন্স মিস করলে, পরেরটার জন্য অপেক্ষা করুন। প্রতিটা ডাইভারজেন্স ধরা সম্ভব না। মাঝেমাঝে প্রাইস দূরে চলে যাওয়ার পরে ডাইভারজেন্স দেখতে পারেন। যদি সুযোগ মিস করে থাকেন, তাহলে যা চলে গেছে তা গেছে। পরেরটার জন্য অপেক্ষা করেন।
৯) বড় টাইমফ্রেম ব্যবহার করা
ছোট টাইমফ্রেমে অনেক ডাইভারজেন্স পাওয়া যাবে। কিন্তু সেখানে ফলস সিগন্যালও বেশী পাওয়া যাবে। বড় টাইমফ্রেমে কম ফলস সিগন্যাল পাওয়া যায়। যে উপদেশ দেব তা হল, কমপক্ষে ১ ঘণ্টার চার্ট ব্যবহার করার।
উপরের নিয়মগুলো মেনে চললে আপনার ডাইভারজেন্স ট্রেডের সফলতার হার অনেক বেড়ে যাবে।
এক্সাজেরেটেড ডাইভারজেন্স:
এতক্ষণ যে ডাইভারজেন্স প্যাটার্ন দেখেছি, তা ছাড়াও চার্টে অন্য ধরনের ডাইভারজেন্স প্যাটার্ন দেখা যায়। সেগুলো আগে যে ডাইভারজন্স দেখেছি, তার মত নির্ভরযোগ্য না। এক্সাজেরেটেড ডাইভারজেন্স রেগুলার ডাইভারজেন্সের মতই। পার্থক্য হল যে প্রাইস ডাবল টপ অথবা ডাবল বটম বানাবে। প্রাইসে টপ অথবা বটম একরকম দেখা যাবে আর ইনডিকেটর ভিন্নমত পোষণ করতে দেখা যাবে।
এক্সাজেরেটেড ডাইভারজেন্স সাধারনত কাউন্টারট্রেন্ড টাইপের ডাইভারজেন্স কিন্তু এটা ট্রেন্ড আনুসারি হিসেবেও ট্রেড করা যায়। বড় একটা মুভের পরে খেয়াল করবেন যে মার্কেট যখন বিশ্রামের (ফ্ল্যাট মার্কেট) প্রস্তুতি নেয়ার কথা, তখন বিশ্রাম না নিয়ে প্রাইস অন্য ডায়রেকশনে ছুটেছে। চলুন দেখি এগুলো কেমন হয়ঃ
এক্সাজেরেটেড বিয়ারিশ ডাইভারজেন্স:
এটা সাধারনত বড় মুভের শেষের দিকে দেখা যায়। মার্কেট ডাবল টপের মত প্রাইস প্যাটার্ন তৈরি করবে। মানে পারফেক্ট ডাবল টপ হওয়ার প্রয়োজন নেই। ডাবল টপ তৈরি করার পরে, ইনডিকেটরে দেখা যাবে যে আগের হাইয়ের মত হাই তৈরি করতে পারেনি। নিচের চিত্রটি দেখুনঃ
উপরের চিত্রে দেখতে পারছেন যে প্রাইস ডাবল টপের মত প্যাটার্ন বানিয়েছে আর ইনডিকেটরের ২য় হাই প্রাইসের তুলনায় যথেষ্ট পরিমানে নিচে। পরবর্তীতে প্রাইস ফল করার সম্ভাবনা থাকে।
এক্সাজেরেটেড বুলিশ ডাইভারজেন্স:
সাধারনত বড় একটা মুভের শেষের দিকে দেখা যায়। মার্কেট ডাবল বটমের মত প্রাইস প্যাটার্ন তৈরি করবে যা পারফেক্ট হওয়ার প্রয়োজন নেই। নিচের ছবিটি দেখুনঃ
উপরের চিত্র থেকে দেখতে পারছেন যে প্রাইসের পারফেক্ট ডাবল বটম হওয়ার প্রয়োজন নেই আর ইনডিকেটরের ২য় লো যথেষ্ট পরিমানে উপরে আছে। পরবর্তীতে প্রাইসের উপরে যাওয়ার আশা করা যায়।
ডাইভারজেন্স সারাংশ: মনে রাখবেন যে, ডাইভারজেন্সকে সিগন্যাল হিসেবে ব্যবহার না করে ইনডিকেটর হিসেবে ব্যবহার করা ভালো। শুধুমাত্র ডাইভারজেন্সের উপর ভরসা করে ট্রেড করা ভালো না। এটা ১০০% সঠিক সিগন্যাল দেয় না। অন্যান্য ট্রেডিং ট্যুল এর সাথে ব্যবহার করে ট্রেডে লাভের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। ডাইভারজেন্স হাইয়ার টাইমফ্রেমে ভালো কাজ করে। ডাইভারজেন্সের সাথে অন্য ট্যুল ব্যবহার করার কিছু উপায় আমরা দেখেছি। যদি কখনো ডাইভারজেন্সের উপরে বিশ্বাস না হয়, তাহলে ট্রেড না করে পরের সুযোগের অপেক্ষায় থাকবেন।
চার্টে যেসব ডাইভারজেন্স দেখতে পাই তা হলঃ
– রেগুলার ডাইভারজেন্স
– হিডেন ডাইভারজেন্স
– এক্সাজেরেটেড ডাইভারজেন্স
সফলভাবে ডাইভারজেন্স ট্রেড করার উপায় হল, যথাসময়ে ডাইভারজেন্স চিহ্নিত করা আর সঠিক ডাইভারজেন্স বাছাই করা।
ডাইভারজেন্স চিট শীট