ফিবোনাচ্চি

ফিবোনাচ্চি পরিচিতি: লিওনার্দো ফিবোনাচ্চি একজন বিখ্যাত ইটালিয়ান গনিতবিদ ছিলেন। তিনি কিছু সংখ্যা নিয়ে গবেষনা করেছিলেন যা প্রাকৃতিক অনুপাত অনুসরন করে। সেগুলো এই রকম ছিল ১,১,২,৩,৫,৮,১৩,২১,৩৪,৫৫,৮৯,১৪৪ এবং চলতে থাকবে। এই সংখ্যাগুলো দিয়ে কি বুঝায়। আপনি ১+১ = ২ পান। আবার ২+১ = ৩ পান। সেই ভাবে ৩+২ = ৫ পান। একইভাবে পিছনের ২টা সংখ্যা যোগ করে আপনি পরের সংখ্যাটি পাবেন। কিছু সংখ্যা গননা করার পর যদি আপনি একটা সংখ্যাকে তার পরবর্তী সংখ্যা দ্বারা ভাগ দেন তাহলে আপনি ০.৬১৮ পাবেন। যেমন ৩৪/৫৫= ০.৬১৮ হবে। আবার আপনি যদি পরের পরের সংখ্যা দ্বারা ভাগ দেন তাহলে আপনি ০.৩৮২ পাবেন। যেমন ৩৪/৮৯= ০.৩৮২। এই রেশিওগুলোকে “গোল্ডেন মিন” বলা হয়ে থাকে। যদিও ফিবোর কয়েকটা অ্যাপলিকেশন আছে আমরা মূলত ফিবো রিট্রেসমেন্ট ও এক্সটেনশন নিয়ে কাজ করব।  যেই ফিবো রিট্রেসমেন্ট লেভেলগুলোর দিকে আপনাদের লক্ষ্য রাখতে হবে তা হল – ০.২৩৬, ০.৩৮২, ০.৫০০, ০.৬১৮, ০.৭৬৪

ফিবো এক্সটেনশন লেভেলগুলো হল – ০, ০.৩৮২, ০.৬১৮, ১, ১.৩৮২, ১.৬১৮

ফিবো রিট্রেসমেন্ট লেভেলগুলো সাপোর্ট ও রেজিস্টেন্স হিসেবে ব্যাবহৃত হয়ে থাকে আর ফিবো এক্সটেনশন প্রফিট লেভেল নির্ধারনেব জন্য ব্যাবহৃত হয়ে থাকে। যেহেতু প্রচুর সংখ্যক ট্রেডাররা এগুলো এন্ট্রি ও এক্সিটের জন্য ব্যবহার করে থাকে তাই এটা স্বপূরক হিসেবে কাজ করে। ভয় পাবার কিছু নেই। আমদের এতকিছু গননা করতে হবে না। ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মে ফিবো ট্যুলগুলো দেয়া থাকে। আর আপনাকে শুধু সুইং হাই ও সুইং লো বের করে ফিবো ড্র করতে হবে। সুইং হাই ক্যান্ডেলস্টিক হল সেটা যার আগে ও পেছনের ক্যান্ডেলের চেয়ে হাই উপরে থাকে। আর সুইং লো হল সেটা যার আগে ও পেছনের ক্যান্ডেলের চেয়ে লো নিচে থাকে। না বুঝতে পারলে পরবর্তীতে ফিবো ব্যাবহারের সময় বুঝবেন।

 

ফিবোনাচ্চি রিট্রেসমেন্ট: ফিবোনাচ্চি ট্রেন্ডিং মার্কেটে সবচেয়ে ভাল কাজ করে থাকে। ট্রেডের কারন হল আপট্রেন্ডে যখন প্রইস রিট্রেস করবে তখন বাই করা। আর ডাউনট্রেন্ডে রিট্রেসমেন্টের সময় সেল করা।

কিভাবে ফিবো রিট্রেসমেন্ট ড্র করবেন?

বাই ট্রেডের জন্য: সুইং লো থেকে সুইং হাই পর্যন্ত ফিবো টেনে নিন।

সেল ট্রেডের জন্য: সুইং হাই থেকে সুইং লো পর্যন্ত ফিবো টেনে নিন।

 

আপট্রেন্ডে ফিবো রিট্রেসমেন্ট: নিম্নের চার্টটি দেখুন। আমাদের প্রথম কাজ হল চার্টে বাই অথবা সেল সেটআপ নির্ধারন করা। চার্টে আমরা আপট্রেন্ড নির্ধারন করলাম, তাই আমরা বাই করার সিদ্ধান্ত নিলাম। এখন সুইং লো থেকে সুইং হাই পর্যন্ত ফিবো টানি।

আমাদের উদ্দেশ্য হল রিট্রেসমেন্ট পয়েন্ট থেকে বাই করা। এখানে রিট্রেসমেন্ট লেবেলগুলো হলো ২৩.৬% (.৭৯৫৫), ৩৮.২% (.৭৭৬৪), ৫০.০% (.৭৬০৯), ৬১.৮% (.৭৪৫৪) এবং ৭৬.৪% (.৭২৬২) ফিবো লেভেলে। চলুন দেখি পরবর্তীতে কি হয়।

প্রাইস ৩৮.২ ফিবো লেভেল ব্রেক করে নিচে নামতে ব্যর্থ হল। তাহলে ৩৮.২ ফিবো লেভেল সাপোর্ট হিসেবে কাজ করছে। তাহলে এটা কি এন্ট্রির জন্য ভাল পয়েন্ট?

ডাউনট্রেন্ডে ফিবো রিট্রেসমেন্ট: এখন আমরা ডাউনট্রেন্ড দেখতে পাচ্ছি। তাহলে এখন আমরা সেল সেটআপ খুজব। আমরা ফিবো রিট্রেসমেন্টে সেল ট্রেডে এন্ট্রি করবো। সুইং হাই থেকে সুইং লো পর্যন্ত ফিবো রিট্রেসমেন্ট টানি।

আমাদের উদ্দেশ্য হল রিট্রেসমেন্ট পয়েন্ট থেকে সেল করা। এখানে রিট্রেসমেন্ট লেবেলগুলো হলো ১.৩৯৩৩ (২৩.৬%), ১.৩৯৮৩ (৩৮.২%), ১.৪০২৩ (৫০.০%), ১.৪০৬৪ (৬১.৮%) এবং ১.৪১১৪ (৭৬.৪%). চলুন দেখি পরবর্তীতে কি হয়।

আমরা ফিবো রিট্রেসমেন্টে প্রাইস কোন পর্যায়ে যেতে পারে সেই লেভেলগুলো দেখতে পাচ্ছি। চলুন পরে কি হয় দেখি।

চার্টে দেখতে পাচ্ছেন যে ৩৮.২% এবং ৫০% ফিবো লেভেল ভাল এন্ট্রি পয়েন্ট হিসেবে কাজ করেছে।
উপরের উদাহরন ২টি তে আমরা দেখতে পেয়েছি যে, ফিবো লেভেলগুলো খুব ভালো সাপোর্ট ও রেজিস্টেন্স হিসেবে কাজ করেছে। যেহেতু অনেক ট্রেডাররা এই লেভেলগুলোর দিকে নজর রাখে, সেহেতু এগুলো স্বপূরক হিসেবে কাজ করে।

একটা জিনিস মনে রাখবেন যে, প্রাইস সবসময় ওইসব লাইন থেকে ফেরৎ আসবে না। ফিবো অনেক সময় ব্যর্থ হবে। এর কারন হল মার্কেট সবসময় ট্রেন্ডিং অবস্থায় থাকে না।

ফিবোনাচ্চির ব্যর্থতা: আমরা আগে দেখেছি যে সাপোর্ট ও রেজিস্টেন্স যতই শক্তিশালী হোক না কেন, একসময় না একসময় তা ব্রেক করে। তা আবার ফিবোর ক্ষেএেও সত্য। আমরা আগে বলেছিলাম যে ট্রেন্ডিং মার্কেটে ফিবো সবচেয়ে ভাল কাজ করে। আমরা রিট্রেসমেন্টের সময় ট্রেডে এন্টার করে থাকি। কিন্তু যখন রিভার্সাল হয়, তখন আর ফিবো কাজ করে না।  ফিবোর আরেকটা সমস্যা হল যে সুইং হাই ও সুইং লো নির্নয় করা। কারন সবাই একই টাইম ফ্রেম ব্যবহার করে না তাই মার্কেটে ভিন্ন মত দেখা যায়।

দেখতে পাচ্ছি যে মার্কেট ডাউনট্রেন্ডে আছে আর আমরা রিট্রেসমেন্ট লেভেলে সেল করব। পরবর্তীতে দেখি কি হয়!

৫০% (১.৫০৯৪) ফিবো লেভেল আপনাকে ভাল একটি এন্ট্রি পয়েন্টের সংকেত দিচ্ছে। তাই আপনি ৫০% ফিবো লেভেল থেকে সেল করার চিন্তা করতে পারেন। পরবর্তীতে দেখলেন যে প্রাইস রিভার্স করেছে।

ফিবো লেভেল অন্যান্য টেকনিক্যাল টুলের মত সার্থকতার উচ্চ সম্ভাবনা প্রদান করে, কিন্তু ফিবো সময়তে ব্যর্থও হয়। আপনি এটা বলতে পারবেন না যে কখন প্রাইস রিভার্স করবে। আপনি আগেও দেখেছেন যে, কোন সময় প্রাইস ৩৮.২% ফিবো লেভেল থেকে ব্যাক করেছে আবার ৫০% লেভেলে থেকেও ব্যাক করেছে। এখন আবার দেখলেন যে প্রাইস সবগুলো ফিবো লেভেল ভেঙ্গে রিভার্স করেছে। বিভিন্ন ট্রেডাররা বিভিন্নভাবে চার্ট অ্যানালাইজ করে। আবার ভিন্ন টাইমফ্রেম ব্যবহার করে থাকে। আবার ট্রেডারদের মার্কেটের প্রতি নিজস্ব বায়াসনেস অথবা পক্ষপাতও আছে।

 

ফিবোনাচ্চি এবং সাপোর্ট ও রেজিস্টেন্স: আগে আমরা বলেছিলাম যে, বিভিন্ন টেকনিক ব্যবহার করে আমরা ফিবোর সার্থকতার হার বাড়াতে পারি। তার মধ্যে একটি হল ফিবোকে সাপোর্ট ও রেজিস্টেন্স এর সাথে ব্যবহার করে। যদি আমরা সাপোর্ট ও রেজিস্টেন্স ফিবো লেভেলের কাছাকাছি দেখি তাহলে সেই লেভেলটা না ভাঙ্গার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। আপনার মনে হয়ত প্রশ্ন জাগতে পারে যে কেন এই সম্ভাবনা বাড়ে? এর কারন হল, অন্যান্য ট্রেডাররাও এইসব লেভেলগুলোতে নজর রাখতে পারে। চলুন একটা উদাহরন দিয়ে দেখি

১. আমরা আপট্রেন্ড দেখতে পাচ্ছি

২. আমরা বাই করার জন্য সুইং লো (১.০১৩২) থেকে সুইং হাই (১.০৮৯৯) পর্যন্ত  ফিবো ড্র করি।

৩. আমরা ১.০৫১০ এ একটি রেজিস্টেন্স ড্র করলাম।

৪. ৫০% ফিবো এবং ১.০৫১০ রেজিস্টেন্স এর মধ্যের জায়গাটা কি এন্ট্রির জন্য একটা ভাল পয়েন্ট?

৫.  পরবর্তীতে পড়ার আগে আপনি একটা ডিসিসন নিন। আপনি ট্রেড ধরে রাখবেন, নাকি ক্লোজ করে দিবেন?

৬. প্রাইস ফিবো ০ লেভেল থেকে ফেরত যাওয়াতে অনেক ট্রেডাররা ট্রেড ক্লোজ করে দিতে পারে।

৭. এখানে কি আমরা কিছু বাদ দিয়ে এসেছি?

৮. আমরা যদি সাপোর্ট ও রেজিস্টেন্স জোন ব্যবহার করি তাহলে কি সেটা আরো বেশি কনফিডেন্স যোগ করে না?

৯. এর কারন কি?

অনেক ট্রেডাররা ফিবো এবং সাপোর্ট ও রেজিস্টেন্স ব্যবহার করে। ওইসব লেভেলগুলো বাই ও সেলের জন্য কী (Key) লেভেল হিসেবে কাজ করে। রিট্রেসমেন্টে সবাই ট্রেড থেকে বের হয়ে যায় না। যদিও কোন গ্যারান্টি নেই যে প্রাইস ট্রেন্ডের বিপরীতে ছুটবে না কিন্তু অন্তত পক্ষে আপনি যখন ট্রেড করেন তখন আপনি এইসব টুল দিয়ে একটু বেশি কনফিডেন্স নিয়ে ট্রেডে এন্টার করতে পারেন। মনে রাখবেন যে আমরা ভবিষ্যৎ দেখতে পাই না। আমরা ট্রেড করি সম্ভাবনার উপর ভিওি করে। তাই যদি উচ্চ সম্ভাবনা দিয়ে ট্রেড করতে পারি তাহলে আমাদের ট্রেডে প্রফিট করার হার বেড়ে যায়।

 

ফিবোনাচ্চি আর ট্রেন্ডলাইন: আগে আমরা বলেছিলাম যে ফিবো ট্রেন্ডিং মার্কেটে সবচেয়ে ভাল কাজ করে। ট্রেন্ডলাইন ট্রেডারদের ট্রেন্ড নির্ধারন করতে সহায়তা করে। তাহলে আপনারা ধারনা করতে পারছেন যে ফিবো আর ট্রেন্ডলাইন আপনাকে ভালো সুযোগ খুজে বের করতে সহায়তা করবে। নিচের চার্টে আমরা ট্রেন্ডলাইন দেখতে পাচ্ছি যা আপট্রেন্ড এর সংকেত দিচ্ছে। তার সাথে ফিবো রিট্রেসমেন্ট যোগ করলাম। এখানে আমদের উদ্দেশ্য হবে যে প্রাইস যখন ট্রেন্ডলাইনের কাছাকাছি আসবে তখন বাই দেয়া।

আমরা আশা করতে পারি যে প্রাইস ৫০% ফিবো টাচ করবে। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে প্রাইস ট্রেন্ডলাইন টাচ না করে উপরের দিকে গেছে। তাহলে আমরা বাই করার সুযোগটা মিস করলাম। প্রাইস এখনো আপট্রেন্ডে আছে। আমরা তাহলে ফিবোটাকে মডিফাই করি। ফিবোটাকে মডিফাই করে আমরা আবার প্রাইস ট্রেন্ডলাইনে টাচ করার অপেক্ষা করি। পরের চার্টটি দেখুন।

এবার প্রাইস ট্রেন্ডলাইন ও ৫০.০% (৮৩.২২) ফিবো টাচ ২ টাই করল। তাহলে এটা বাই করার জন্য একটা ভাল পয়েন্ট হতে পারে। পরবর্তীতে কি হয়েছে তা আপনি চার্টে দেখতে পাচ্ছেন।

ফিবোকে ট্রেন্ডলাইনের সাথে ব্যবহার করলে ভাল ফলাফল পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এর কারন অনেক ট্রেডাররা এইসব টুল ব্যবহার করে থাকে। এখানে যদিও আমরা জানি না যে অন্যরা কি ভাবে ট্রেন্ডলাইন ড্র করছে কিন্তু আমরা জানি যে এখানে ট্রেন্ড ফর্ম হচ্ছে। আর আপনি যদি জানেন যে ট্রেন্ড ফরম হচ্ছে, তাহলে আপনি অবশ্যই সেই দিকে ট্রেড করার চিন্তা করবেন।

 

ফিবোনাচ্চি ও ক্যান্ডেলস্টিক সমন্বয়: আগে আমরা দেখেছি যে ট্রেন্ডলাইন এবং সাপোর্ট ও রেজিস্টেন্স আমদের ভাল এন্ট্রি পয়েন্ট খুজে বের করতে সাহায্য করে। আগে আমরা আরো দেখেছি যে ক্যান্ডেলস্টিক আমাদের ট্রেন্ড দুর্বল ও রিভার্সালের সংকেত দিয়ে থাকে। তাই আমরা ফিবোকে যদি ক্যান্ডেলস্টিকের সাথে ব্যবহার করি তাহলে ট্রেন্ডের এক্সস্টিভ (exhaustive) পয়েন্ট (মানে যেথানে ট্রেন্ড শেষ অথবা প্রাইস অপরদিকে মুভ করতে পারে) খুজে বের করতে সহায়তা পারে। চলুন দেখি

আমারা আপট্রেন্ড দেখছি। সুইং লো থেকে সুইং হাই পর্যন্ত ফিবো ড্র করলাম। আমরা দেখছি যে প্রাইস এখন অন্যদিকে মুভ করছে। আমাদের টার্গেট হল ভাল একটি ফিবো পয়েন্টে বাই করা। পরবর্তীতে কি হয় দেখি।

আমরা দেখতি পাচ্ছি যে প্রাইস ৫০% ফিবো লেভেলে এসে একটা দোজি ফর্ম করেছে। আমরা আপট্রেন্ডে আছি আর রিট্রেসমেন্টে দোজি ফর্ম করা মানে বিয়াররা এই পয়েন্টে ক্লান্ত (exhausted) হয়ে গেছে। তাহলে ৫০% ফিবো রিট্রেসমেন্টে যদি বাই করি তাহলে এটা আমাদের ট্রেডে লাভের আশংকা বাড়িয়ে দেয়। পরবর্তীতে দেখতে পাচ্ছি যে প্রাইস ৫০% ফিবো থেকে আবার ট্রেন্ডের ডায়রেকশনে যাচ্ছে। যখন ০% ফিবো তে গেল তখন আবার পুলব্যাক দেখতে পাচ্ছি। সেই পয়েন্টে অনেক ট্রেডাররা তাদের ট্রেড ক্লোজ করে দিয়েছে। আর যারা ট্রেড ধরে রেখেছে তারা আরো প্রফিটের আশায় ট্রেড এখনো ধরে রেখেছে।

 

ফিবোনাচ্চি এক্সটেনশন: ফিবো এক্সটেনশন আমরা ব্যবহার করে থাকি একটা সম্ভাব্য পয়েন্ট বের করতে, যেখানে প্রাইস যেতে পারে। আমরা ফিবো রিট্রেসমেন্টের মত করেই ফিবো এক্সটেনশন ড্র করে থাকি। যদি প্রাইস ট্রেন্ড ডায়রেকশনে মুভ করে থাকে তাহলে আমরা আগ্রিম সাপোর্ট ও রেজিস্টেন্স জোন পেয়ে থাকি। চলুন দেখি

আমরা আপট্রেন্ড দেখতে পাচ্ছি। সুইং লো থেকে সুইং হাই পর্যন্ত ফিবো ড্র করলাম। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে ৫০% আমদের জন্য ভাল একটা এন্ট্রি পয়েন্ট। এখন আমরা ফিবো এক্সটেনশন ড্র করি। ফিবো এক্সটেনশন ড্র করার জন্য সুইং লো থেকে সুইং হাই পর্যন্ত টানি।

আমরা এখন ফিবো এক্সটেনশন লেভেলগুলো দেখতে পাচ্ছি। ফিবো এক্সটেনশন লেভেল ৬১.৮% থেকে শুরু হয়। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে প্রাইস ফিবো এক্সটেনশন লেভেলগুলো ভেঙে আবার রিট্রেস করছে। চার্ট দেখলে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে আমরা ২৫০ এর বেশি পিপসের প্রফিটে থাকতাম। এখন আপনি এই পর্যায়ে ট্রেড ক্লোজ করে দিতে পারেন অথবা আরো লাভের আশায় ট্রেড ধরে রাখতে পারেন। আপনি এখানে যেই ডিসিসনই নেন, আপনার ট্রেড প্রফিটেবল অবস্থায় ক্লোজ হত। যদি আপনি ট্রেড ধরে রাখতেন, তাহলে দেখি কি হত। নিম্নের চার্টে আমরা দেখতে পারছি যে ০% ফিবো রিটেসমেন্ট এবং ৬১.৮% ফিবো এক্সটেনশন একটা সাপোর্ট জোন তৈরী করেছে। এটা ব্রেক করতে পারে কিন্তু যদি এটা ব্রেক না করে তাহলে আমরা আরো অনেক পিপ প্রফিট করতে পারি।

এটা ব্রেক করতে পারে কিন্তু যদি এটা ব্রেক না করে তাহলে আমরা আরো অনেক পিপ প্রফিট করতে পারি। এটা আপনার চিন্তার বিষয় যে আপনি ট্রেড ধরে রাখার রিস্ক নিবেন নাকি ট্রেড ক্লোজ করে দিবেন। মনে রাখবেন ২ টার যেই ডিসিশনই নেন না কেন আপনি এখানে লাভবান।

আপনি যদি আরো প্রফিটের আশায় ট্রেড ধরে রাখতেন তাহলে দেখছেন যে প্রাইস ১৬১.৮% ফিবো এক্সটেনশন ও ব্রেক করে গেছে।

ফিবো এক্সটেনশনের কিছু সমস্যা আপনাদের জানা দরকার:

  • ফিবো এক্সটেনশন লেভেলগুলো যেভাবে সাপোর্ট ও রেজিস্টেন্স প্রদান করার কথা তা করেনা। যে কোন সময় একটা সাপোর্ট ও রেজিস্টেন্স কাজ না করতে পারে।
  • অন্য একটা সমস্যা হল ফিবো এক্সটেনশন ড্র করতে সুইং হাই ও সুইং লো নির্ধারন করা। আপনি যা করতে পারেন তা হল যেখানে ফিবো রিট্রেসমেন্ট ড্র করেছেন, সেখানেই ফিবো এক্সটেনশন ড্র করেন। অথবা পূর্বের ৩০ টা ক্যান্ডেলের মধ্য থেকে সুইং লো এবং সুইং হাই বেছে নিন।
  • এখানে কোন সঠিক নিয়ম নেই। সময়ের সাথে সাথে আপনি আরো ভাল ডিসিশন নিতে শিখবেন।

ট্রেড ক্লোজে ফিবোনাচ্চির ব্যবহার: আমরা যখন ট্রেডে এন্টার করি তখন আমাদের একসময় না একসময় ট্রেড ক্লোজও করতে হবে। ট্রেড ক্লোজ করতে আমরা বিভিন্নভাবে ফিবো ব্যবহার করতে পারি। একটা পদ্ধতি হল যে, আপনি যেই ফিবো লেভেলে এন্ট্রি করছেন, তার পরের ফিবো লেভেল ছাড়িয়ে স্টপলস দেয়া।

আপনি চার্টে আপট্রেন্ড দেখছেন। আপনি একটা ভাল এন্ট্রি পয়েন্ট খুজবেন। ভাল এন্ট্রি পয়েন্ট হল ফিবো ৩৮.২% – ৬১.৮% এর মধ্যে। পরবর্তীতে পড়ার আগে আপনি কোন পয়েন্টে এন্টার করতে চান তা নির্ধারন করুন। যদি আপনি ৩৮.২% এ এন্টার করেন তাহলে স্টপ লস ৫০% ফিবোর নিচে সেট করবেন। যদি ৫০% ফিবোতে এন্টার করেন তাহলে স্টপ লস ৬১.৮% ফিবোর নিচে সেট করবেন।

যদি আপনি ৩৮.২% ফিবোতে এন্টার করতেন তাহলে আপনি লসের সম্মুখীন হতেন। আর যদি ৫০% ফিবোতে এন্টার করতেন তাহলে আপনার ট্রেড লাভের মুখ দেখত। এই পদ্ধতির একটা অসুবিধা হল যে আপনার এন্ট্রি খুব সঠিক হতে হবে। আর এটা তখন হয় যখন আপনি একেবারে নিশ্চিত যে প্রাইস সাপোর্ট ও রেজিস্টেন্স লেভেল ভাঙবে না। মনে রাখবেন যে মার্কেট আপনার আশামত সবসময় মুভ করবে না। তাই সবসময় স্টপ লস সেট করতে হবে। আরেকটা পদ্ধতি হল স্টপলস সুইং হাই অথবা সুইং লো এর থেকে দূরে সেট করা। এটা আপনার ট্রেডকে মুভ করার জন্য বেশি জায়গা দেয়। এই ধরনের স্টপ লস লং টার্ম ট্রেডের জন্য কার্যকর। একটা কথা মনে রাখবেন, আপনার লট সাইজ স্টপ লস অনুযায়ী সেট করে নিবেন। উপরের চার্টটা আরেকবার দেখুন। ৩৮.২% এর ট্রেডটা আপনার স্টপ লস হিট করত। কিন্তু যদি আপনার স্টপ লসটা সুইং লো এর নিচে থাকত তাহলে এটা লাভজনক ট্রেডে পরিনত হত।

স্টপ লস সম্পর্কে কিছু জিনিস সবসময় মাথায় রাখবেন:

  • আপনার স্টপ লস অনুযায়ী লট সাইজ ঠিক করে নেন।
  • ফিবো কিন্তু স্টপলস নির্ধারন করার জন্য একমাএ টুল না।
  • বর্তমান মার্কেট এনভায়রনমেন্ট অ্যানালাইজ করাটা উপকারী হবে।
  • ভিন্ন টুল ব্যবহার করলে আপনি উওম স্টপলস পয়েন্ট পেতে পারেন।

InfotakeBD

View posts by InfotakeBD
InfotakeBD is a information sharing blog, We share information for you. Please visit us and if you want to contribute for this blog please email us infotakebd@gmail.com. Thank you

Leave a Reply

Scroll to top