বলিঙ্গার ব্যান্ডস জন বলিঙ্গার নামে একজন তৈরী করেছিলেন। বলিঙ্গার ব্যান্ডস মার্কেটের ভলাটালিটি পরিমাপ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও বলিঙ্গার ব্যান্ডস দ্বারা আরো অনেক প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া যায়। যেসব তথ্য আমরা বলিঙ্গার ব্যান্ডসের মাধ্যমে পেতে পারি তা হল:
ট্রেন্ডের দিকনির্দেশনা
- ট্রেন্ড সম্প্রসারন অথবা মার্কেট কনসোলিডেশন (একীকরন) পেরিয়োড
- আসন্ন বড় ধরনের ভলাটাইল ব্রেকআউট
- মার্কেটের আনুমানিক টপ ও বটম
- প্রাইস টার্গেট
বলিঙ্গার ব্যান্ডস চার্টে ৩ টি লাইন আকারে দেখা যায়। প্রাইস শতকরা ৮৫% সময় এই লাইনগুলোর সীমানার মধ্যে থাকে। লাইনগুলি হল:
- মধ্যের লাইনটা হল সিম্পল মুভিং এ্যাভারেজ যার ডিফল্ট ভ্যালু হল ২০ পেরিয়োডের।
- লোয়ার ব্যান্ড – এসএমএ বিয়োগ ২ স্ট্যান্ডার্ড ডেভিয়েশন।
- আপার ব্যান্ড – এসএমএ যোগ ২ স্ট্যান্ডার্ড ডেভিয়েশন।
নিম্নের ছবিটি দেখুন
যখন প্রাইস বলিঙ্গার ব্যান্ডসের মধ্যের লাইনের নিচে থাকে তখন সেটাকে ডাউনট্রেন্ড হিসেবে ধরা হয়। যখন প্রাইস বলিঙ্গার ব্যান্ডসের মধ্যের লাইনের উপরে থাকে তখন সেটাকে আপট্রেন্ড হিসেবে ধরা হয়। চার্টে আরেকটা জিনিস লক্ষ্য করবেন যে ব্যান্ডগুলো উপরমুখী এবং নীচমূখীভাবে মুভ করে। সেটা থেকেও আপনি ধারনা নিতে পারেন যে পরবর্তীতে প্রাইস কোন দিকে যেতে পারে। আরো লক্ষ্য করুন যে ব্যান্ডগুলো সমান্তরালভাবে মুভ করছে না। নিম্নের ছবিটি দেখুন:
উপরের ছবিগুলো দিয়ে বুঝতে পারছেন যে বোলিঙ্গার ব্যান্ড বহু ধরনের তথ্য প্রদান করে থাকে আর এটাকে বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা যায়। নিম্নের বলিঙ্গার ব্যান্ড ব্যবহারের ২২ টি জনপ্রিয় প্রবাদ দেয়া হল:
১. বলিঙ্গার ব্যান্ড হাই এবং লো এর সীমানির্দেশনা দিয়ে থাকে। প্রাইস হাই হল আপার ব্যান্ডে আর প্রাইস লো হল লোয়ার ব্যান্ডে।
২. উপরের সংজ্ঞা দিয়ে আমারা প্রাইস এ্যাকশন এবং ইন্ডিকেটর এ্যাকশন এর মধ্যে তুলনা করতে পারি এবং যথাযথ বাই অথবা সেল করার ডিসিসন নিতে পারি।
৩. মার্কেটের উপযুক্ত দিক নির্দেশনা দেখতে মোমেন্টাম, ভলিউম, সেন্টিমেন্ট, ওপেন ইনট্রেস্ট, ইন্টারমার্কেট ডাটা ইত্যাদি সূচকের সাহায্য নিতে পারেন।
৪. যদি একটার বেশি ইন্ডিকেটর ব্যবহার করেন তাহলে লক্ষ্য রাখবেন যে ২ টা যেন একই ইঙ্গিত না দেয়। যেমন: একটা মোমেন্টাম ইন্ডিকেটর একটা ভলিউম ইন্ডিকেটরের অনুপুরক হিসেবে কাজ কাজ করতে পারে। সেক্ষেএে ২টা ইন্ডিকেটর ১ টা ইন্ডিকেটরের চেয়ে ভাল কাজ করবে।
৫. বলিঙ্গার ব্যান্ড প্রাইস এ্যাকশন প্যাটার্ন চিনতে সাহায্য করে। যেমন: “M” টপ এবং “W” বটম, মোমেন্টাম শিফট ইত্যাদি।
৬. প্রাইস আপার অথবা লোয়ার ব্যান্ড ছোয়া মানে সিগন্যাল পাওয়া না। প্রাইস আপার ব্যান্ডে টাচ করলেই সেল সিগন্যাল আসে না আবার প্রাইস লোয়ার ব্যান্ডে টাচ করা মানে বাই সিগন্যাল পাওয়া না।
৭. ট্রেন্ডিং মার্কেটে প্রাইস আপার বলিঙ্গার ব্যান্ড আপার অথবা লোয়ার ব্যন্ড ছোয়াটা স্বাভাবিক।
৮. বলিঙ্গার ব্যান্ডের বাইরে প্রাইস ক্লোজ হওয়া সাধারনত ট্রেন্ড সম্প্রসারনের ইঙ্গিত দেয়। (এটা অনেক ভলাটিলিটি ব্রেকআউট সিস্টেমের ভিওি হিসেবে কাজ করে থাকে)।
৯. বলিঙ্গার ব্যান্ডের ডিফল্ট প্যারামিটারগুলো সাধারনত ব্যবহার হয়ে এসেছে। প্যারামিটার বিভিন্ন মার্কেট কন্ডিশনের জন্য পরিবর্তন করে নিতে পারেন।
১০. মিডেল বলিঙ্গার ব্যান্ডটাকে ক্রসওভারের জন্য ব্যবহার করা উচিত নয়। এটাকে মধ্যবর্তী টার্মের ট্রেন্ড নির্ধারনের জন্য ব্যবহার করতে পারেন।
১১. উপযুক্তভাবে প্রাইস নিয়ন্ত্রনের জন্য যদি ব্যান্ডের পেরিয়োড পরিবর্তন করেন তাহলে ডেভিয়েশনটাও সাথে সাথে পরিবর্তন করে নিবেন। যেমন: ২০ পেরিয়োড এবং ২ ডেভিয়েশন ডিফল্ট সেটিং, আপনি যদি ১০ পেরিয়োড করতে চান, তাহলে ডেভিয়েশন কমিয়ে ১.৯ করে দিন।
১২. ট্রেডিশনাল বলিঙ্গার ব্যান্ড সিম্পল মুভিং এ্যাভারেজের উপর ভিওি করে থাকে। এর কারন হল স্ট্যান্ডর্ড ডেভিয়েশন গননায় সিম্পল এ্যাভারেজ ব্যবহার করা হয়েছে আর আমরা এটাকে লজিক্যালি সামঞ্জস্যপূর্নভাবে পরিচালনা করতে দেখতে চাই।
১৩. এক্সপোনেন্সিয়াল বলিঙ্গার ব্যান্ড বড় প্রাইস চেঞ্জের কারনে কিছুটা প্রস্থ কমিয়ে দিতে পারে। এক্সপোনেন্সিয়াল এ্যাভারেজ নিলে অবশ্যই মিডেল ব্যান্ড এবং স্ট্যান্ডার্ড ডেভিয়েশন ২ টার গননার জন্যই ব্যবহার করতে হবে।
১৪. যেহেতু বলিঙ্গার ব্যান্ড গননায় স্ট্যান্ডার্ড ডেভিয়েশন ব্যবহার করা হয়, সেই কারনে কোন স্ট্যাটিস্টিক্যাল ধারনা বলিঙ্গার ব্যান্ডে পোষন করতে যাবেন না। প্রাইস ডিসট্রিবিউশন অস্বাভাবিক আর যে স্যম্পল সাইজ বলিঙ্গার ব্যান্ডে ব্যবহার করা হয় তা স্ট্যাটিস্টিক্যাল সিগনিফিক্যান্সের জন্য খুব ছোট। (চার্টে আমরা ডিফল্ট প্যারামিটার ব্যবহার করে শতকরা ৯০%-৯৫% ভাগ সময় প্রাইসকে ব্যান্ডের ভিতর দেখতে পাই।)
১৫. %b আমাদের দেখায় যে আমরা বলিঙ্গার ব্যান্ডের তুলনায় কোথায় আছি। ব্যান্ডের মধ্যের অবস্থানটি Stochastics এর একটি ফর্মুলা ব্যবহার করে গননা করা হয়।
১৬. %b এর অনেক ব্যবহার আছে। এদের মধ্যে বেশি দরকারী হল ডাইভারজেন্স চিহ্নিত করা, প্যাটার্ন চিহ্নিত করা এবং বলিঙ্গার ব্যান্ড ব্যবহার করে ট্রেডিং সিস্টেম কোড করা।
১৭. কিছু fixed thresholds বাদ দিয়ে %b ইন্ডিকেটরকে নরমালাইজ করা যায়। এর জন্য ৫০ পেরিয়োড অথবা আরো বেশি পেরিয়োডের বলিঙ্গার ব্যান্ড একটা ইন্ডিকেটওর ব্যবহার করুন। এরপর ওই ইন্ডিকেটরের %b গননা করুন।
১৮. বলিঙ্গার ব্যান্ড কতটা প্রস্থ তা আমরা BandWidth দিয়ে দেখতে পাই। অপরিশোধিত প্রস্থটি মিডেল ব্যান্ড দিয়ে নরমালাইজ করা হয়। ডিফল্ট প্যারামিটারে BandWidth কোফিসিয়েন্ট অফ ভ্যারিয়েশনের ৪ গুন।
১৯. BandWidth এর অনেক ব্যবহার আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হল স্কুইজ চিহ্নিত করা এবং ট্রেন্ড চেঞ্জ চিহ্নিত করা।
২০. বলিঙ্গার ব্যান্ড বিভিন্ন বিভিন্ন টাইম সিরিজে ব্যবহার করা যায়। যেমন: – equities, indices, foreign exchange, commodities, futures, options এবং bonds.
২১. বলিঙ্গার ব্যান্ড বিভিন্ন টাইমফ্রেমে ব্যবহার করা যায়। যেমন: ৫ মিনিট, ১ ঘন্টা, দৈনিক, সাপ্তাহিক ইত্যাদি। আসল হল যে প্রাইস বারগুলোর পর্যাপ্ত পরিমানে কার্যকলাপ থাকতে হবে যাতে বলিঙ্গার ব্যান্ড আপনাকে প্রাইস ফরমেশনের যথাযথ ধারনা দিতে পারে।
২২. বলিঙ্গার ব্যান্ড আপনাকে একটানা পরামর্শ দেয় না। এটা আপনাকে এমনসব সেটআপ বের করতে সাহায্য করে যেখানে আপনার লাভের সম্ভবনা বেশি থাকে।