বিয়ের আগেই স্বামী-স্ত্রীর ব্লাড গ্রুপ জানা কেন জরুরি?

বিয়ের আগে অন্য আর সব বিষয় জেনে নেয়ার পাশাপাশি স্বামী এবং স্ত্রীর ব্লাড গ্রুপ সম্পর্কে জেনে নেয়া অত্যাবশ্যক।  তা না হলে পরবর্তীতে নানা সমস্যায় পড়তে হয়। দুঃখজনকভাবে আমাদের দেশে এখনো এই ট্রেন্ড চালু হয় নাই। তবে সচেতন মানুষদের অবশ্যই এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে।

প্রথমেই চলুন ব্লাড গ্রুপ সম্পর্কে জেনে নেই। ব্লাড গ্রুপকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা হয়। প্রথমত, ABO system (A, B, AB & O) এবং দ্বিতীয়টা হচ্ছে, Rh factor অর্থাৎ Rh positive(+ve) ও Rh negative(-ve)।এই  Rh factor এর উপর নির্ভর করে ব্লাড গ্রুপ পজেটিভ হবে নাকি নেগেটিভ হবে। এর উপর ভিত্তি করেই  ৮ ধরনের ব্লাড গ্রুপ পাওয়া যায়। এগুলো হচ্ছে,  A+ve, A-ve, B+ve, B-ve, AB+ve, AB-ve, O+ve এবং O-ve.

যখন কোনো Rh নেগেটিভ গ্রুপের ব্যক্তিকে Rh পজেটিভ গ্রুপের ব্লাড দেয়া হয় তখন সাধারনত প্রথমবার কিছু হয় না। কিন্তু এর বিরুদ্ধে রোগীর শরীরে এন্টিবডি তৈরী হয়ে যায়। ফলে আবার যদি কখনো রোগী পজেটিভ ব্লাড নেয় তাহলে তার রক্ত কোষগুলো ভেঙ্গে যাবে। যার কারনে রোগীর জ্বর থেকে শুরু করে কিডনি বিকল হয়ে যাওয়া এমনকি হঠাৎ মৃত্যুও হতে পারে। ডাক্তারি ভাষায় একে বলে ABO incompatibility.

এখন জেনে নেয়া যাক, স্বামী-স্ত্রীর ব্লাড গ্রুপ কি ধরনের হওয়া দরকার। স্বামীর ব্লাড গ্রুপ যদি পজেটিভ হয় তাহলে স্ত্রীর ব্লাড গ্রুপও পজেটিভ হতে হবে। কোনোভাবেই নেগেটিভ হওয়া চলবে না।  আর স্বামীর ব্লাড গ্রুপ যদি নেগেটিভ হয় তাহলে স্ত্রীর ব্লাড গ্রুপ পজেটিভ বা নেগেটিভ যেকোন একটি হলেই হবে।

এখন আসি, যদি স্বামীর ব্লাড গ্রুপ পজেটিভ হয় আর স্ত্রীর ব্লাড গ্রুপ নেগেটিভ হয় তাহলে কী সমস্যা হবে?

রক্তের গ্রুপ মিলে গেলে কোন সমস্যা হয় না। তবে স্ত্রী যদি নেগেটিভ হয় আর স্বামী যদি পজিটিভ হয় তাহলে ‘লিথাল জিন’ বা ‘মারন জিন নামে একটি জিন তৈরি হয় যা পরবর্তীতে জাইগোট তৈরিতে বাধা দেয়। এটা মূলত জাইগোট মেরে ফেলে। সেক্ষেত্রে মৃত বাচ্চার জন্ম হয়। যদি স্বামীর ব্লাড গ্রুপ পজেটিভ হয় তাহলে সাধারনত বাচ্চার ব্লাড গ্রুপও পজেটিভ হবে। যখন কোনো নেগেটিভ ব্লাড গ্রুপের মা পজেটিভ Fetus (ভ্রূন) ধারণ করবে তখন সাধারনত প্রথম বাচ্চার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না। কিন্তু সন্তান জন্ম দানের সময় পজেটিভ Fetus এর রক্ত প্লাসেন্টা ভেদ করে মায়ের শরীরে প্রবেশ করবে। মায়ের শরীরে সন্তান জন্ম দানের সময় যে রক্ত প্রবেশ করবে, তা কয়েক মাসের মধ্যেই মায়ের শরীরে Rh এন্টিবডি তৈরী করবে। যখন মা দ্বিতীয় সন্তান বহন করবে, তখন যদি তার fetus এর ব্লাড গ্রুপ পুনরায় পজেটিভ হয় তাহলে মায়ের শরীরে আগে থেকে তৈরী থাকা Rh এন্টিবডি প্লাসেন্টা ভেদ করে বাচ্চার শরীরে প্রবেশ করবে। fetus এর শরীরে Rh antibody ঢুকলে শরীরের লোহিত রক্ত কণিকাগুলো ভেঙ্গে যাবে। ডাক্তারি ভাষায় একে বলে Rh incompatibility।

এজন্য বিয়ের আগেই স্বামী-স্ত্রীর নিজেদের ব্লাড গ্রুপ জানতে হবে। এছাড়া বাচ্চা নেয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে বিষয়গুলেঅ বিস্তারিত জেনে নিতে হবে ও সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

InfotakeBD

View posts by InfotakeBD
InfotakeBD is a information sharing blog, We share information for you. Please visit us and if you want to contribute for this blog please email us infotakebd@gmail.com. Thank you

Leave a Reply

Scroll to top