ঈদের ছুটিতে অনেকেই বাড়ি যাচ্ছেন। প্রিয়জনের সাথে ঈদ উদযাপনের আনন্দে বড়ির পথে ভ্রমণও হয়ে উঠে আনন্দময়। কিন্তু মূহুর্তেই সে আনন্দ মাটি করে দিতে পারে বমি কিংবা বমির প্রবণতা। অনেকেরই গাড়িতে বা বাসে ভ্রমণ করলে বমি হয় কিংবা বমির ভাব হয়। কখনো কখনো মাথা ঘোরে বা মাথা ব্যথা করে। এই বিরক্তিকর সমস্যার জন্য অনেকেই গাড়িতে বা বাসে চড়তেই ভয় পান।
যাত্রাপথে বমির কারন:
যাত্রাপথে বমির প্রধান কারন মোশন সিকনেস। গতি জড়তার ফলে মস্তিষ্কে সমন্বয়হীনতার কারণে এটি হয়ে থাকে। এছাড়া আরো অনেক কারণে যাত্রাপথে বমি হতে পারে। যেমন-
১. বাস, গাড়ি বা ট্রেনের ঝাঁকুনি এবং লঞ্চের দুলুনি,
২. বিষাক্ত বা অস্বাস্থ্যকর কিছু খেলে,
৩. বাজে গন্ধ বা বাজে স্বাদের খাবারের গ্রহণের কারনে,
৪. গ্যাস্ট্রিক আলসার বা এই জাতীয় শারীরিক অসুস্থতা,
৫. অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম।
প্রতিকার:
১. যাত্রা শুরু করার আগে ঝাল-মশলাযুক্ত খাবার, কোমল পানীয় বা চিপস ইত্যাদি খাবেন না। যারা বমির সমস্যায় ভোগেন তারা প্রয়োজনে হালকা কিছু খেয়ে বাহনে উঠুন। যাত্রাপথে ভারী খাবার পরিহার করাই ভালো।
২. অতিরিক্ত ঘ্রাণ বা সুগন্ধযুক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। ভ্রমণের সময় সাথে বিশুদ্ধ খাবার পানি রাখুন এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। দারুচিনি, লবঙ্গ ও টক জাতীয় খাবার বমিভাব দূর করে। যাত্রাপথে এগুলো সাথে রাখতে পারেন।
৩. ট্রেন, বাস বা গাড়ি যেদিক মুখ করে সামনে এগুচ্ছে তার উলটো দিক ফিরে কখনোই বসবেন না। এতে বমিভাব আরো প্রবল হয়। বাহন যেদিকে এগুচ্ছেন সেদিক মুখ করে বসুন।
৪. বাসে কিংবা গাড়িতে পেছনের দিকের সিটে বসার ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। পেছনের দিকে সিটে ঝাঁকুনি বেশি লাগে যা অনেক সময় বমির কারন হয়ে দাঁড়ায়।
৫. ভ্রমণের সময় ধূমপান করবেন না। পান-সুপারি এবং অন্যান্য নেশা জাতীয় দ্রব্যও এড়িয়ে চলুন।
৬. চলন্ত অবস্থায় বই পড়া, মোবাইলে গেম খেলা বা নেট ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। এর ফলে সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।
৭. ভ্রমণের সময় মনকে শান্ত ও প্রফুল্ল রাখার চেষ্টা করুন। বমি হতে পারে এই কথা ভুলে থাকুন। মনকে প্রফুল্ল রাখতে গান শুনতে পারেন।
৮. যাত্রাপথে অন্য যাত্রীকে বমি করতে দেখে অনেকের বমি হতে পারে। তাই যাত্রীদের দিক থেকে মনোযোগ সরিয়ে অন্য দিকে মনোযোগ দিন। এক্ষেত্রে জানালার পাশে বসে বাইরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন।
৯. যাত্রা শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়া হচ্ছে সবচাইতে বুদ্ধিমানের কাজ। অল্প সময়েই ঘুমিয়ে পড়তে পারলে তা বমির সমস্যা এড়াতে ভালো কাজে দিবে।
১০. সমস্যা খুব বেশি হলে যাত্রা শুরু আগে বমি নিরোধক ট্যাবলেট খেয়ে নিতে পারেন। তবে যেকোন ওষুধ সেবনের পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।