শিশুর শীতকালীন ঠান্ডাকাশিতে ৫টি করণীয়

ষড়ঋতুর বাংলাদেশে আবহাওয়া বদলের সাথে সাথে রোগ জীবাণুর মেজাজ মর্জি যে বদলাবে এতো জানা কথা। শিশুদের জন্য স্বাভাবিক কারনেই সময়টি খুব স্পর্শকাতর। কারন অ্যাজমা, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কিওলাইটিস সহ ফুসফুস যেকোন প্রদাহ ও শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা এ সময় বাড়তে পারে। সাথে থাকে জ্বর, কাশি, হাঁচি, খাবারে অরুচি এবং চর্মরোগের প্রকোপ।

শীতের সময় তাপমাত্রার হ্রাস এবং একই সাথে বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়া ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া সংক্রমনের প্রবণতা বাড়িয়ে দেয়। বড়দের শরীরেও শীতকালীন রোগের উপদ্রব লক্ষণীয়। অ্যাজমা, ইনফ্লুয়েঞ্জা, ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়ার প্রকোপে বড়রাই ধরাশায়ী হয়ে পড়েন।

শিশুদের জন্য সতর্কতার কোন বিকল্প নেই। অসুস্থ শিশুর তিনটি বিপদচিহ্নের দিকে লক্ষ্য রাখুনঃ

১. শিশুর শ্বাস প্রশ্বাস স্বাভাবিক থেকে অতিদ্রুত হচ্ছে কি না

২. শ্বাস প্রশ্বাসের সময় বুকের পাঁজরের মাঝের অংশগুলো ভেতরে দেবে যাচ্ছে কি না

৩. নিঃশ্বাসের সময় ‘ঘর ঘর’ শব্দ হচ্ছে কি না

এসব লক্ষণ ছাড়াও শিশুর যদি কোন প্রকার শ্বাসকষ্ট বা খাবারের প্রতি অনীহা দেখা দেয়, দ্রুতই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন, অথবা আপনার নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যান।

শীতকালীন ঠান্ডাকাশিতে করণীয়:

১. সর্দির কারনে নাক বন্ধ থাকলে আপনি শিশুর নাকে নরসল না নসোমিস্ট ড্রপ ফোঁটায় ফোঁটায় দিয়ে শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক করতে পারেন। এতেও স্বাভাবিক না হলে উইন্ডেল প্লাস সলিউশন দিয়ে নেবুলাইজ করতে হবে শিশুটিকে। সালবিউটামল সিরাপও বিশেষ উপকারী এ সময় (ছয় মাস বয়সের নিচে আধ চামচ করে ২ বেলা, ৬ মাস থেকে ১ বছর আধ চামচ করে ৩ বেলা, ১ বছরের উপরে ১ চামচ করে ২ বা ৩ বেলা)। তবে চিকিৎসা নেয়ারে পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করবেন।

২. শীতের সময় শিশুদেরকে অল্প মধু দিয়ে তুলসী পাতার রস খাওয়ানো বিশেষ উপকারী। অল্প বয়সী বাচ্চাদের শীতের সময় কোন রকম ঠান্ডা খাবার, আইসক্রিম, কোল্ডড্রিঙ্কস বা কোমল পানীয় দেবেন না। এগুলো নিউমোনিয়া রোগের জন্য দায়ী হতে পারে।

৩. শীতকালীন শাকসবজির পাশাপাশি বিভিন্ন রকম ফল, লেবু শিশুর খাদ্যতালিকায় রাখুন। এতে শরীরের ত্বক যেমন শীতের রুক্ষতা থেকে রক্ষা পাবে, অপরদিকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পাবে।

৪. শীতের সময় সন্ধ্যা থেকে পরের দিন সকালে রোদ ওঠার আগ পর্যন্ত গরম কাপড় পরিয়ে রাখাই বাঞ্ছনীয়। খেয়াল রাখতে হবে শিশু যেন ঘেমে না যায়। উলের পোশাক যথাসম্ভব পরিহার করে স্বাভাবিক সুতি কাপড়ের গরম পোশাকই সর্বোত্তম। বাসায় কার্পেট ব্যবহার না করাই ভালো। বরং বাসার সবাই মোজা পড়ে থাকাটাই স্বাস্থ্যকর।

৫. শিশুকে বিনা প্রয়োজনে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়াবেন না। এতে তার লাভের চেয়ে ভয়াবহ এক ক্ষতির সম্ভাবনাই থেকে যায়। শুধুমাত্র চিকিৎসকের পরামর্শে শিশুকে ঔষধ খাওয়াবেন। এসেই পড়েছে শীত, আপনার শিশু থাকুক সুস্থ, হাস্যোজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত।

InfotakeBD

View posts by InfotakeBD
InfotakeBD is a information sharing blog, We share information for you. Please visit us and if you want to contribute for this blog please email us infotakebd@gmail.com. Thank you

Leave a Reply

Scroll to top