শিশুর শ্বাসকষ্ট বা ব্রংকিওলাইটিস রোগের ৬টি লক্ষণ ও চিকিৎসা
শীত এলেই বহু শিশুর কাশিসহ শ্বাসকষ্ট হয়। অনেকেই একে নিউমোনিয়া বা হাঁপানি বলে মনে করেন। কিন্ত শিশুর শ্বাসকষ্ট মানেই নিউমোনিয়া বা অ্যাজমা তা নয়। ডাক্তারি ভাষায় একে ব্রংকিওলাইটিস বলে। এই রোগ সম্পর্কে একটু সচেতন হলেই রোগ প্রতিরোধ ও নিরাময় দুটোই সহজে করা যায়।
ব্রংকিওলাইটিস শ্বাসতন্ত্রের একটি সাধারণ অসুখ যা শ্বাসতন্ত্রের সিনসাইটিয়াল ভাইরাস (respiratory syncitial virus -RSV) দ্বারা হয়ে থাকে। শিশু জন্মের পরে প্রথম দুই বছর এই ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। ৩ থেকে ৬ মাস বয়সী শিশুরা আরো বেশী ঝুঁকিতে থাকে। এছাড়া সময়ের আগে জন্ম নেয়া শিশু (প্রিম্যাচিউর শিশু), যেসব বাচ্চা মায়ের বুকের দুধ খায় না এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকা শিশুদেরও আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। ভাইরাসের মাধ্যমে খুব সহজেই ছড়ায় বলে শিশুকে ধরা বা কোলে নেয়ার আগে যে কারো ভাল করে হাত ধুয়ে নেয়া জরুরি।
রোগের লক্ষণ:
১. বাচ্চার সর্দি কাশির সাথে শ্বাসকষ্ট থাকবে,
২. বুকে বাঁশির মত শব্দ হবে,
৩. জ্বর থাকতে পারে,
৪. বাচ্চা হাসিখুশি (playful) ও স্বাভাবিক থাকবে,
৫. নিউমোনিয়াতে বেশি অসুস্থতার কারনে বাচ্চা দুর্বল হয়ে যাবে। ব্রংকিওলাইটিসে এমন হয় না।
৬. নিউমোনিয়ার সাথে ব্রংকিওলাইটিসের প্রধান পার্থক্য হচ্ছে, নিউমোনিয়াতে প্রচণ্ড জ্বর থাকে।
চিকিৎসা:
ব্রংকিওলাইটিস এর চিকিৎসা বাসায় ই করা যায়।এই অসুখ সাধারণত ৭ থেকে ১২ দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়।আক্রান্ত শিশু কে বেশি করে তরল জাতীয় খাবার দিতে হবে।বুকের দুধ তো অবশ্যই দিতে হবে। নাক বন্ধ (stuff nose and congestion) থাকলে নরমাল স্যালাইন এর ড্রপ (nasal drop) ব্যবহার করতে হবে। সাথে লক্ষণ বুঝে অক্সিজেন ও নেবুলাইজিং (সালবিউটামল আর নরমাল স্যালাইন) দেয়া যায়। কিন্ত সেক্রেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। মনে রাখা জরুরি, যেহেতু এটা ভাইরাসজনিত রোগ তাই অ্যান্টিবায়োটিকের কোন প্রয়োজন নেই। সুতরাং শ্বাসকষ্ট মানেই ভয় পাওয়া নয়।একটু সচেতনতাই আমাদের রোগমুক্তির পথ বাতলে দিতে পারে।