হিট স্ট্রোকের ১৫টি লক্ষণ ও চিকিৎসায় করণীয়

হিট স্ট্রোক মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ জনিত কোন রোগ নয়। প্রচন্ড গরম আবহাওয়ায় শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে যথেষ্ট ঘামের নিঃসরণ ঘটে। এই ঘাম বাষ্পীভূত হয়ে দেহকে শীতল হতে সাহায্য করে। কিন্তু যখন প্রচন্ড রোদে প্রচুর শারীরিক পরিশ্রম করা হয় কিংবা বায়ুর আদ্রতা অনেক বেড়ে যায়, তখন নিঃসৃত ঘাম বাস্পীভূত হতে পারে না। শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বাড়তে থাকে  এবং এক পর্যায়ে দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়ে হিট স্ট্রোক হয়। এ সময় মানবদেহের সাধারণ তাপমাত্রা ৯৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট থেকে বেড়ে ১০৫-১০৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্তও হতে পারে। হিট স্ট্রোক হলে রোগীর তাৎক্ষণিক চিকিৎসা হওয়া জরুরী। তা নাহলে রোগীর কার্ডিয়াক এরেস্ট কিংবা একিউট রেনাল ফেইলিউর সহ নানা ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে। এমনকি রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

যারা বেশি ঝুঁকিতে আছেনঃ

১. মূলত শিশু এবং বৃদ্ধরা বেশী আক্রান্ত হন। কারনে তাদের দেহের থার্মোরেগুলেটরী সিস্টেম পুরোপুরি ভাবে কাজ করতে পারে না।

২. যারা প্রচন্ড রোদে দীর্ঘক্ষণ কাজ করেন বা কায়িক পরিশ্রম বেশী করেন। যেমন: ট্রাফিক পুলিশ, শ্রমিক, রিকশা ওয়ালা, দিনমজুর প্রভৃতি পেশার লোকজন।

৩. ডায়াবেটিক রোগী ও যারা হৃদপিন্ড, কিডনি বা ফুসফুসের সমস্যায় ভুগছেন।

৪. যারা মানসিক রোগের ওষুধ, উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ, ইনসুলিন, অ্যান্টিহিস্টামিন, অ্যাসপিরিন জাতীয় ওষুধ নিয়মিত গ্রহণ করেন।

৫. যাদের  স্ক্লেরোডার্মা, একটোডার্মাল ডিসপ্লেসিয়া জাতীয় চর্মরোগ রয়েছে।

৬. যাদের ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি।

 

হিট স্ট্রোকের উপসর্গঃ

 ১. শরীর প্রচন্ড ঘামতে ঘামতে এক পর্যায়ে ঘাম নিঃসরণ বন্ধ হয়ে যাওয়া

২. দেহের তাপমাত্রা হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া

৩. মাথা ঝিমঝিম করা কিংবা তীব্র মাথা ব্যাথা করা,

৪. বমি হওয়া,

৫. দ্রুত শ্বাস প্রশ্বাস নেয়া

৬. দ্রুত হৃদ সঞ্চালন হওয়া কিন্তু  রক্তচাপ কমে যাওয়া

৭. পানি স্বল্পতা

৮. প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া

৯. অবসাদ গ্রস্থতা ও দুর্বলতা বোধ হওয়া

১০. মাংস পেশীর খিঁচুনি ভাব হওয়া

১১. চোখে ঝাপসা দেখা

১২. চামড়া খসখসে ও লাল হয়ে যাওয়া

১৩. অস্থিরতা বোধ করা কিংবা অসংলগ্ন আচরণ করা,

১৪. হ্যালুসিনেসন বা দৃষ্টি বিভ্রম হওয়া

১৫. অবস্থা বেশী জটিল হলে রোগীর খিঁচুনি হতে পারে।

চিকিৎসাঃ

১. রোগীকে কিছুটা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েই যতো দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

২. হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীকে দ্রুত ছায়াযুক্ত শীতল ও নিরিবিলি স্থানে নিতে হবে।

৩. শরীরের ভারী কাপড় খুলে নিয়ে গায়ে ঠান্ডা পানি ঢালতে হবে।

৪. সম্ভব হলে রোগীকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত  কক্ষে অন্তত ফ্যানের নিচে নিতে হবে। অথবা কোন শীতল পানির মাঝেও শরীর ডুবিয়ে রাখা যেতে পারে। তবে রোগী অজ্ঞান থাকলে এমনটা না করাই ভালো।

৫. রোগীর বগল ও ঊরুর ভাঁজে বরফ দেওয়া যেতে পারে।

৬. পানি স্বল্পতা সমাধানে রোগীকে স্যালাইন খাওয়ানো যেতে পারে। তবে তরল পান করতে না পারলে শিরা পথে স্যালাইন দিতে হবে।

৭. থার্মোমিটার দিয়ে রোগীর শরীরের তাপমাত্রা কিছুক্ষণ পর পর মেপে দেখতে হবে। ১০১-১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইট এ নেমে না আসা পর্যন্ত তার চিকিৎসা অব্যাহত রাখতে হবে।

InfotakeBD

View posts by InfotakeBD
InfotakeBD is a information sharing blog, We share information for you. Please visit us and if you want to contribute for this blog please email us infotakebd@gmail.com. Thank you

Leave a Reply

Scroll to top