মার্কেট অ্যানালাইসিস ও চার্টের ধরন

মার্কেট অ্যানালিসিস: ফরেক্স মার্কেটে ৩ ধরনের অ্যানালিসিস করা যায়।

  • টেকনিক্যাল অ্যানালিসিস
  • ফান্ডামেন্টাল অ্যানালিসিস
  • সেন্টিমেন্টাল অ্যানালিসিস

 

টেকনিক্যাল অ্যানালিসিস

টেকনিক্যাল অ্যানালিসিস পূর্বের প্রাইস ডাটা ব্যবহার করে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ মার্কেট মুভমেন্ট নির্ধারন করে। তাত্ত্বিকভাবে আপনার চার্ট পূর্বের প্রাইস মুভমেন্টের সব তথ্য দেয়। তাহলে আপনার যা দরকার তা হল প্রাইস একশন বুঝা এবং তা দিয়ে ট্রেড করা। এই প্রবাদটা হয়ত শুনেছেন “History tends to repeat itself। এটাই টেকনিক্যাল অ্যানালিসিসের মুলনিতী। পূর্বে যা ঘটেছিল তা আবার ভবিষ্যতে ঘটতে পারে। যদি প্রাইস কোন পয়েন্টে গিয়ে থামে আর সেই পয়েন্টের আশে পাশে ঘোড়াঘোরি করে তাহলে ট্রেডাররা সেই পরিস্থিতি দিয়ে মার্কেট থেকে লাভ বের করে নিতে পারে।

একজন ট্রেডার যখন টেকনিক্যাল অ্যানালিসিস শুনে তখন প্রথম যে জিনিষ তার মাথায় আসে তা হল চার্ট। আর এই চার্ট দিয়েই ট্রেডাররা ভবিষ্যৎ মার্কেট মুভমেন্ট নির্ধারণ করে থাকে। উপরের চার্টটা দেখুন। আপনি দেখতে পারবেন যে প্রাইস প্রথমে একটি নির্দিস্ট রেঞ্জের মধ্যে মুভ করছে। আর যখন সেই রেঞ্জ থেকে বের হয়েছে তখন প্রাইস অন্য দিকে ছুটছে। টেকনিক্যাল অ্যানালিসিসের জন্য অনেক টুল আছে যা আপনি চার্টে ব্যবহার করতে পারবেন ও সেগুলো দিয়ে মার্কেটে পরবর্তীতে কি হবে তা নির্ধারন করতে পাবেন।

 

ফান্ডামেন্টাল অ্যানালিসিস: ফান্ডামেন্টাল অ্যানালিসিস বিভিন্ন ধরনের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক ডাটা যেগুলো কারেন্সির সাপ্লাই ও ডিমান্ডে প্রভাব ফেলে তা পরিক্ষা করে। এটা শুনতে সহজ মনে হলেও সাপ্লাই ও ডিমান্ড পরীক্ষা ও বিশ্লেষন করা এত সহজ নয়। আপনার ট্রেডে ২ টা কারেন্সি জড়িত থাকে, তাই ২টা দেশের অর্থনিতী আপনার ট্রেডের সাথে জড়িত থাকে। এই ধরনের অ্যানালিসিসের পিছনে যে চিন্তাভাবনা থাকে তা হল, যদি একটি দেশের অর্থনিতী ভাল অবস্থায় থাকে তাহলে সেই কারেন্সির ভ্যালু বাড়বে আর যদি একটি দেশের অর্থনিতী খারাপ অবস্থায় থাকে তাহলে সেই দেশের কারেন্সির ভ্যালু কমবে। এখন ধরেন, ব্রিটিশ অর্থনিতী উন্নতির দিকে যাচ্ছে আর ইউএস অর্থনিতীতে বেকারত্বের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। তাহলেGBP/USD এর অবস্থা কি হবে? আপনি বুঝতে পারছেন যে GBP/USD এর ভ্যালু বাড়বে।

 

সেন্টিমেন্টাল অ্যানালিসিস

ফরেক্স মার্কেট আপনি, আমি এবং অরো অসংখ্য ছোট, বড় এরং অনেক বড় ট্রেডার নিয়ে গঠিত। প্রত্যেকেরই মার্কেট সম্পর্কে নিজস্ব মতামত আছে। আপনার মার্কেট সম্পর্কে যেই ধারনা হয় তার উপর নির্নয় করে ট্রেড করেন । কিন্তু আপনার মতামত যতই দৃঢ় হোক না কেন আপনি একা মার্কেট মুভ করতে পারবেন না। তাই আপনি যদি মনে করেন যে GBP/USD এর ভ্যালু বাড়বে, আর সবাই চিন্তা করে যে GBP/USD এর ভ্যালু কমবে তাহলে এখানে আপনার কিছুই করার নেই। ট্রেডার হিসেবে আপনাকে সবকিছু বিবেচনা করতে হবে, আর নির্নয় করতে হবে যে মার্কেট কি চিন্তা করছে। আর নির্নয় করতে হবে যে মার্কেট বুলিশ (bullish) না বিয়ারিশ (bearish)। এখানে

বুলিশ = একটি কারেন্সি পেয়ারের  ভ্যালু যখন বাড়ে।

বিয়ারিশ = একটি কারেন্সি পেয়ারের  ভ্যালু যখন কমে।

 

ফরেক্স মার্কেটে প্রতিটা অ্যানালিসিসের জন্যই কঠোর সমর্থনকারী আছে। তারা বলবে যে একটা আরেকটার চেয়ে ভাল। আসল কথা হল যে ৩ টাই ভাল আর প্রত্যেকের জন্য প্রয়োজনীয়। আপনি যেভাবে ট্রেড করতে সবচেয়ে সাচ্ছন্দ্যবোধ করেন সেটা আপনার জন্য সবচেয়ে ভাল। চলুন আবার একটু দেখি যে এতক্ষন কি দেখলাম:

  • টেকনিক্যাল অ্যানালিসিস পূর্বের প্রাইস ডাটা ব্যবহার করে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ মার্কেট মুভমেন্ট নির্ধারন করে।
  • ফান্ডামেন্টাল অ্যানালিসিস দেখে যে একটি দেশ অন্য দেশের তুলনায় কেমন করছে।
  • সেন্টিমেন্টাল অ্যানালিসিস নির্নয় করে যে মার্কেটবুলিশ না বিয়ারিশ।

এখানে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে ফান্ডামেন্টাল অ্যানালিসিস মার্কেট সেন্টিমেন্টকে আকার দেয় আর টেকনিক্যাল অ্যানালিসিস সেই সেন্টিমেন্টকে দেখতে সাহায্য করে। আর সেন্টিমেন্ট আমাদেরকে বাই অথবা সেল নির্ধারণ করতে সাহায্য করে। তাহলে বুঝতে পারছেন যে ৩ ধরনের অ্যানালিসিসই আমাদের কোন না কোন ক্ষেএে প্রয়োজন। কিন্তু সবগুলোতে আমাদের পারদর্শী হওয়ার প্রয়োজন নেই। আপনার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে লাভ করা, আর যেটা আপনাকে তা দিতে পারবে তাতে পারদর্শী হোন।

 

চার্টের ধরন

আমাদের টার্মিনালে সাধারনত ৩ ধরনে চার্ট থাকে। সেগুলো হল: লাইন চার্ট, বার চার্ট ও ক্যান্ডেলস্টিক চার্ট

লাইন চার্ট: খুবই সাধারন একটা চার্ট। আপনি চার্টে শুধু একটা লাইন দেখতে পারবেন। লাইনটা প্রতিটা পিরিয়োডের ক্লোজ প্রাইস দেখায়। একটা পিরিয়োডের ক্লোজ আরেকটা পিরিয়োডের ক্লোজের সাথে সংযুক্ত হওয়ায় এটাকে লাইন আকারে দেখা যায়। নিম্নে লাইন একটি লাইন চার্ট দেয়া হল।

 

বার চার্ট: বার চার্ট একটু জটিল কিন্তু বেশি তথ্যবহুল। বার চার্টে আপনি দেখতে পাবেন কোন পিরিয়ডের

ওপেনিং প্রাইস = কোন প্রাইসে বার শুরু হয়েছে।

হাই = প্রাইস কতটুকু উপরে উঠেছে।

লো = প্রাইস কতটুকু নিচে নেমেছে।

ক্লোজিং প্রাইস = কোন প্রাইসে বার ক্লোজ হয়েছে।

প্রতিটা বারে কি দেখতে পাচ্ছেন? বারগুলোর উপরের অংশ হাই এবং নিচের অংশ লো দেখাচ্ছে প্রতিটা পেরিয়ডের। প্রতিটা বারে আবার ২টা দাগও দেখাচ্ছে। বাম দিকে যে দাগ দেখছেন সেটা হল ওপেনিং প্রাইস আর ডান দিকে যে দাগটা দেখছেন সেটা ক্লোজিং প্রাইস।

 

ক্যান্ডেলস্টিক চার্ট: বার চার্টের মত ক্যান্ডেলস্টিক চার্ট ও একই তথ্য প্রদান করে থাকে। কিন্তু এটা ট্রেডারদের মধ্যে বেশি জনপ্রিয়। ক্যান্ডেলস্টিক চার্টে ওপেন, হাই, লোও ক্লোজ দেখায় এবং তার মধ্যে একটা ব্লক দেখায় যেটাকে বডি বলা হয়। এখন চার্টে দেখি কিভাবে এগুলো থাকে:

আগে বলেছিলাম যে ক্যান্ডেলস্টিক ট্রেডারদের মধ্যে জনপ্রিয়। এর কিছু কারন হল:

  • ক্যান্ডেলস্টিক ব্যাখ্যা করা সহজ।
  • আপনার চোখ সহজেই ক্যান্ডেলস্টিকের সাথে খাপ খাওয়াতে পারে।
  • অনেক ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন আছে যা আপনাকে মার্কেটের পরবর্তী মুভ সম্পর্কে ধারনা দেয়।
  • মার্কেট কখন ঘুরবে তার সম্পর্কে ধারনা দেয়।

InfotakeBD

View posts by InfotakeBD
InfotakeBD is a information sharing blog, We share information for you. Please visit us and if you want to contribute for this blog please email us infotakebd@gmail.com. Thank you

Leave a Reply

Scroll to top