বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের যে অটিজম ছিল তা হয়ত আমরা অনেকেই জানি। এ কারনে অনেকে মনে করেন অটিজম আক্রান্ত শিশুরা হয়ত অতি মাত্রায় মেধাবী হয়ে থাকে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, দৈনন্দিন অনেক কাজকর্মেই অটিস্টিক শিশুরা অন্যের উপর নির্ভরশীল। এ কারনে অটিস্টিক শিশুদের সমস্যাগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানা থাকা জরুরি। কেননা যথাযথ সহযোগিতা, সমর্থন ও শিক্ষা পেলে অটিস্টিক শিশুরাও পরিণত বয়সে আত্মনির্ভরশীলতা অর্জন করতে সক্ষম। চলুন অটিস্টিক শিশুদের ছয়টি সমস্যার কথা জেনে নেই-
১. ইন্দ্রিয়গত সমস্যা: অটিজম থাকা অনেক শিশুই দেখা, শোনা, গন্ধ, স্বাদ ও স্পর্শের প্রতি অতি সংবেদনশীল অথবা প্রতিক্রিয়াহীন থাকতে পারে।
২. ঘুমের সমস্যা: অটিস্টিক শিশুদের ঘুম আসা, ঘুমিয়ে থাকা বা ঘুম সম্পর্কিত অন্যান্য সমস্যা থাকে। এ কারনে তাদের মনোযোগ ও কাজের সক্ষমতা কমে যায় এবং আচরণেও এর প্রভাব পড়ে।
৩. বুদ্ধি-প্রতিবন্ধীতা: অনেক অটিস্টিক শিশুর মাঝেই অল্প মাত্রায় হলেও বুদ্ধি-প্রতিবন্ধীতা পরিলক্ষিত হয়।
৪. খিঁচুনির সমস্যা: সাধারণত এ ধরনের শিশুদের প্রতি চারজনে একজনের খিঁচুনি সমস্যা হয়। কারো খিঁচুনি শুরু হয় শৈশবে, কারো বা কৈশোরে।
৫. পেটের সমস্যা: অটিস্টিক শিশুদের অভিভাবকগণ প্রায়ই তাদের বাচ্চাদের হজমের অসুবিধা, পেট ব্যথা, ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, পেটের গ্যাস, বমি বা ব্লোটিং (bloating) এর অভিযোগ করে থাকেন।
৬. মানসিক অসুস্থতা: গবেষণায় দেখা যায়, অটিজম থাকা শিশুদের মানসিক অসুস্থতার ঝুঁকি বেশী। এদের বিষন্নতা, উদ্বিগ্নতা ও মনোযোগে ঘাটতিসহ বিভিন্ন সমস্যা থাকতে পারে।
চিকিৎসা :
শিশুর এ ধরনের সমস্যা আছে বলে মনে হলে অনতিবিলম্ব চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। অথবা শিশুকে অটিজম বিষয়ক প্রাক-প্রাথমিক সেবাদানকারী সংস্থায় নেয়া যেতে পারে। প্রাথমিক অবস্থায় অটিজম নির্ণয় করতে পারলে এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হলে অটিজম এর ক্ষতিকারক প্রতিক্রিয়াগুলো অনেক সফলভাবে মোকাবেলা করা যায়। নিবিড় ব্যবহারিক পরিচর্যা (intensive behavioral therapy), স্কুল ভিত্তিক প্রশিক্ষণ কর্মসুচি, সঠিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদান ও যথাযথ ওষুধের ব্যবহার একটি শিশুর অটিজমের সমস্যাগুলো অনেকাংশে হ্রাস করে। সর্বাপরি যথাযথ সচেতনতা সৃষ্টি হলে অটিস্টিক শিশুদের সঠিক ভাবে বেড়ে ওঠা নিশ্চিত হবে এবং এটা তাদের দক্ষতা বৃদ্ধিতেও সহায়ক হবে।