অবস্ট্রাকটিভ জন্ডিসের ৩টি প্রধাণ লক্ষণ ও চিকিৎসা

‘জন্ডিস’ শব্দটি সর্বজন পরিচিত এবং বহুল আলোচিত। ‘হলুদ পালং’, ‘কাওলা’, পান্ডু ইত্যাদি স্থানীয় প্রতিশব্দও জন্ডিস অর্থে ব্যবহৃত হয়। জন্ডিস সম্পর্কে অনেক ধরণের কুসংস্কার আজো সমাজে প্রচলিত। অনেকে মনে করেন, জন্ডিসের কোন এ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা নেই। এজন্য তারা ওঝা, বৈদ্য, কবিরাজ প্রভৃতির শরণাপন্ন হন। জন্ডিস কোন রোগের নাম নয়- এটি একটি উপসর্গ, যা বিভিন্ন রোগে হতে পারে। কোন কারণে রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে গেলে চোখের উপরের সাদা অংশ এবং মুখের ভিতরের আবরনী অর্থাৎ মিউকাস মেমব্রেন হলুদ হয়ে যায়, এটাই জন্ডিস। জন্ডিস বেশি হলে সারা শরীর হলুদ হতে পারে। তবে মনে রাখা দরকার, জন্ডিস এবং হেপাটাইটিস সমার্থক নয়; হেপাটাইটিস ছাড়াও অন্য অনেক কারণে জন্ডিস হতে পারে।

রক্তে বিলিরুবিনের পরিমান বেড়ে যাবার কারণে জন্ডিস হয়ে থাকে। এই বিলিরুবিন উৎপাদনের মূল কারখানা হচ্ছে লিভার বা যকৃৎ। যেখানে প্রতিদিন ৩০০ মিলিগ্রাম বিলিরুবিন তৈরী হচ্ছে, যার বেশিরভাগই পিত্তনালীতে গিয়ে খাদ্যনালী হয়ে পায়খানার সাথে বের হয়ে যায়। বিলিরুবিনের সামান্য পরিমান প্রস্রাবের সাথে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।

কারণভেদে জন্ডিসকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়। যেমন-

১. হিমোলাইটিক জন্ডিস

২. লিভারজনিত জন্ডিস

৩. অবস্ট্রাকটিভ জন্ডিস

আজকে আমরা অবস্ট্রাকটিভ জন্ডিস নিয়ে আলোচনা করবো।

অবস্ট্রাকটিভ জন্ডিস:

পিত্তনালী বন্ধ হয়ে যাবার কারণে যে জন্ডিস হয়ে থাকে তাকে অবস্ট্রাকটিভ জন্ডিস বলে। পিত্তনালীর পাথর, পিত্তনালীর ক্যান্সার, অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার, পিত্তনালীতে কৃমি আটকে যাওয়া অথবা অন্য কোন কারণে পিত্তনালী বন্ধ হয়ে গেলে অবস্ট্রাকটিভ জন্ডিস দেখা দেয়।

লক্ষণ:

অবস্ট্রাকটিভ জন্ডিসের প্রধান উপসর্গ হলো –

১. জন্ডিসের সাথে সারা গায়ে চুলকানি,

২. পায়খানার হলুদ রং পরিবর্তিত হয়ে মেটে রং হওয়া,

৩. উপরের লক্ষণগুলোর সাথে লিভার বড় হয়ে যেতে পারে।

রোগ নির্ণয়:

অবস্ট্রাকটিভ জন্ডিসের কারণ নির্ণয়ের জন্য আল্ট্রাসনোগ্রাম অন্যতম ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়া রক্তে বিলিরুবিন, অ্যালকালাইন ফসফেটেজসহ অন্যান্য লিভার ফাংশন টেষ্ট করতে হয়। ইআরসিপি এবং পিটিসি’র মাধ্যমে কারণ নির্ণয় করা যায়। আজকাল আধুনিক রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসার জন্য ইআরসিপি অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

চিকিৎসা:

অবস্ট্রাকটিভ জন্ডিসের চিকিৎসা উপসর্গ এবং কারণ অনুযায়ী করতে হয়ে। ইআরসিপি-র মাধ্যমে পিত্তনালীর পাথর অপসারণ করা যায়। এছাড়া ক্যান্সারসহ অন্যান্য কারণে পিত্তনালী বন্ধ হলে পিত্তনালীতে টিউব বসানো যায়। অপারেশনের মাধ্যমেও চিকিৎসা করা যেতে পারে।

InfotakeBD

View posts by InfotakeBD
InfotakeBD is a information sharing blog, We share information for you. Please visit us and if you want to contribute for this blog please email us infotakebd@gmail.com. Thank you

Leave a Reply

Scroll to top