কোন ওষুধ কখন খাবেন, কিভাবে খাবেন

ওষুধ আজ আমাদের সবার কাছেই খুব পরিচিত একটি বিষয়। আমরা সবাই কোন না কোন কিছু না কিছু ওষুধ খাচ্ছি হামেশাই। তাই ওষুধ খাওয়ার সময় ও নিয়ম সম্পর্কে জানাটা খুব জরুরি। যেকোনো ওষুধ খেতে হলে পুরো এক গ্লাস পানি দিয়ে খান। এক চুমুক পানি দিয়ে ওষুধ খেলে পাকস্থলীতে প্রদাহ (Inflammation) বা ঘা জনিত সমস্যা (Ulcer) হতে পারে। কারন ওষুধ গলে যাওয়ার পরে পুরোপুরি লঘু হওয়ার মত পানি সে পায় না । তাই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বেশি হয়। বলা হয়ে থাকে, সব ওষুধই খালি পাকস্থলী (Stomach)-তে ভালো শোষণ হয় । সেই হিসেবে সব ওষুধই খাবার ১ ঘন্টা আগে বা ২ ঘন্টা পরে খাওয়া উচিত। তবুও কিছু কিছু ওষুধ খাবারের সাথে অথবা খাবারের পর পরই খেতে হয়। আসুন জেনে নেই, কেন কিছু ওষুধ খাবারের পর পরই খেতে হয় ।

১। কিছু ওষুধ খেলেই বমি ভাব অথবা বমি হতে পারে। এই বমি ভাব যেন না হয় তা প্রতিরোধ করতেই কিছু ওষুধ খাবারের সাথে দেয়া হয়। যেমন: অ্যালোপিউরিনল (Allopurinol), ব্রোমোক্রিপটিন (Bromocriptine) ইত্যাদি।

২। কিছু কিছু ওষুধ খালি পাকস্থলীতে জ্বালা (Stomach irritation) তৈরী করে। যার ফলে বদহজম (Indigestion), প্রদাহ (Inflammation) অথবা পাকস্থলীতে ঘা বা Ulcer তৈরী করে। তাই তাদের খাবার পরে খাওয়া উচিৎ, যেন খাবারের কারনে তারা পাকস্থলী গাত্রের কাছে ভিড়তে না পারে। যেমন- অ্যাসপিরিন (Aspirin), যাবতীয় ব্যথার ওষুধ (Diclofenac and other NSAIDs) এবং স্টেরয়েড (Steroids) জাতীয় ওষুধ। কারন এরা পাকস্থলী গাত্রের প্রতিরোধক প্রোস্টাগ্লান্ডিন (Prostaglandin) তৈরির পথ বন্ধ করে দেয়।

৩। আমরা জানি পেটে খাবার থাকলেই বেশি এসিড রিলিজ হয়। যার ফলে রিফ্লাক্স (Reflux) ও রিগার্জিটেশন (Regurgitation) হয়ে থাকে। অর্থাৎ খাবার উল্টো দিকে প্রবাহিত হয়ে মুখ দিয়ে বের হয়ে অসে। এই জন্য এন্টাসিড জাতীয় ওষুধ খাবার পরে খাওয়া উচিৎ।

৪। যেই ওষুধগুলো খাবার দ্বারা ধৌত হয়ে যেতে পারে যেমন- মুখের জেল (Oral Gel), মুখের ড্রপ (Oral drop), মাউথ ওয়াশ (Mouth wash) এগুলো খাবার পরে ব্যবহার করা উচিৎ। নইলে খাবার সব ভাসিয়ে পেটে নিয়ে চলে যাবে। মুখের কোন কাজ হবে না।

৫। কিছু ওষুধ শোষণ হওয়ার জন্য খাবার খাদ্যনালীতে থাকা বাধ্যতামূলক। যেমন: টেট্রাসাইক্লিন, ডক্সিসাইক্লিন, স্যাকুইনাভির ইত্যাদি। তাই এগুলো খাবারের সাথে খাওয়া উচিৎ।

৬। বোতলের ওষুধ কিভাবে খাবেন তা নিয়ে অনেকেই জানেন না। কখন ঝাঁকানো লাগবে, আর কখন লাগবে না এ ব্যাপারে অনেকে দ্বিধায় পড়েন। বোতলের ওষুধ দুই প্রকার হয়- সিরাপ এবং সাসপেনশন। সিরাপগুলো সমস্বত্ত্ব দ্রবন, তাই এটাকে ঝাঁকানো লাগে না। এটা পুরা দ্রবনেই সমান ভাবে মিশে থাকে। আর সাসপেনশনগুলো অসমস্বত্ত্ব দ্রবন। ছোট ছোট ওষুধের দানাগুলো পানিতে ঠিকমত দ্রবীভূত হয় না। তাই রেখে দিলে ওষুধের গুঁড়াগুলা তলানি পড়ে যায়। তাই খাওয়ার আগে ঝাঁকুনি দিলে, তা পুরা পানিতে সমানভাবে মিশ্রিত হয়। সুতরাং যেসব বোতলের গায়ে সিরাপ লেখা, তা ঝাঁকানোর দরকার নাই। আর যেসব বোতলের গায়ে সাসপেনশন লেখা, তা খাওয়ার আগে ঝাঁকিয়ে খাওয়া বাঞ্চনীয়। নইলে একবার শুধুই পানি খাবেন, আর শেষের বার শুধুই ওষুধের দানা খাবেন।

যেসব ওষুধের উপরে উল্লেখিত ঝামেলাগুলো নাই, সেসব ওষুধ চোখ বন্ধ করে খাবারের আগে, সাধারণ ‍নিয়ম মেনে খেয়ে নিন। তবে ওষুধ খাওয়ার আগে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (Side effects) সম্পর্কে জেনে নিন। তাইলে সাইড ইফেক্টস হজম করতে সহজ হবে। কারন ওষুধ শরীরের একটা ভালো কাজ করলেও, একাধিক খারাপ কাজ করতে পারে। কেননা সব ওষুধই “কেমিকেল।

InfotakeBD

View posts by InfotakeBD
InfotakeBD is a information sharing blog, We share information for you. Please visit us and if you want to contribute for this blog please email us infotakebd@gmail.com. Thank you

Leave a Reply

Scroll to top
error: Content is protected !!