ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতার ১০টি লক্ষণ ও প্রতিকার

শরীরে পানিশূন্যতা বা পানির স্বল্পতাকে ডাক্তারি পরিভাষায় বলে ডিহাইড্রেশন। আমাদের দেহের বড় অংশ জুড়ে রয়েছে মূলত পানি বা তরল। দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণসহ নানাবিধ শারীরিক চক্র সচল রাখার জন্য তরল উপাদানের গুরুত্ব অপরিসীম। শরীর থেকে বিভিন্ন উপায়ে পানি বা তরল নিঃসরণ হয়ে থাকে। ঘাম, মূত্র ও মলের মাধ্যমে ছাড়াও শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে কিংবা ত্বক হতে বাষ্পীভবনের মাধ্যমে তরল নিঃসরণ হচ্ছে। গরমের দিনে শেষোক্ত প্রক্রিয়ায় অর্থাৎ ঘাম, শ্বাস-প্রশ্বাস এবং ত্বক হতে সরাসরি বাষ্পীভবনের মাধ্যমে তরল নিঃসরণের মাত্রটা বেশি হয়। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, গরমে পানিশূন্যতার মূল কারণ ঘেমে যাওয়া। আমরা যতটুকু ঘামি তার তুলনায় সাধারণত কম পানি পান করি। গরমের সময়ে অনেকেরই বেশ অনেকটা সময় বাইরে রোদে থাকতে হয়। আবার অনেকে ব্যায়াম করে থাকেন নিয়মিত। এই দুই কারনেও অতিরিক্ত ঘেমে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা হতে পারে।

ডিহাইড্রেশনের অন্যান্য কারন:

১. বিভিন্ন কারনে অপর্যাপ্ত পানি পান করা
২. ডায়রিয়া
৩. অতিরিক্ত বমি হওয়া
৪. জ্বর
৫. যেকোন শারীরিক পরিশ্রম বা খেলাধূলা জনিত অতিরিক্ত ঘাম
৬. ডায়াবেটিস বা ওষুধ গ্রহণের কারনে অতিরিক্ত মূত্রত্যাগ

ডিহাইড্রেশনের লক্ষণ:

১. অতিরিক্ত পিপাসা লাগা
২. মুখ শুকিয়ে যাওয়া এবং জিহ্বা ভারী হয়ে ফুলে উঠা
৩. শারীরিক দুর্বলতা
৪. মাথা ঘোরা
৫. অনিয়মিত হৃদস্পন্দন
৬. বুক ধড়ফড় করা
৭. প্রসাবের পরিমাণ কমে যাওয়া
৮. প্রসাবের রঙ গাঢ় হলুদ বর্ণের হওয়া
৯. বিভ্রান্তি বা অসামঞ্জস্যপূর্ণ মানসিক আচরণ
১০. খিঁচুনি কিংবা জ্ঞান হারানো

প্রতিকার:

১. বাইরে বের হবার সময় পানির বোতল সাথে রাখুন। যত বেশি ঘাম হবে তত বেশি পানি পান করুন।
২. তাপমাত্রা বেশি থাকলে শারীরিক পরিশ্রম ও ব্যায়ামের পরিমাণ কমিয়ে আনুন।
৩. বাইরে বের হবার সময়ে হালকা রঙের ঢিলেঢালা পোশাক পরুন।
৪. একটানা বেশি সময় উষ্ণ এলাকায় থাকবেন না। মাঝে মাঝে ছায়ায় কিংবা ফ্যান বা এসির নিচে অবস্থান নিন।
৫. গরমের সময় নিয়মিত সরস ফল বা ফলের রস খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
৬. ডিহাইড্রেশনের লক্ষন দেখা দিলেই খাবার স্যালাইন এবং প্রচুর পানি পান করতে হবে।
৭. শরীর ঠাণ্ডা করার চেষ্টা করতে হবে। দ্রুত এসি বা ফ্যানের নিচে অবস্থান নেয়া উত্তম।
৮. শরীরে ঠাণ্ডা পানির ছিটা দেওয়া যেতে পারে। সম্ভব হলে শরীরে একটু ভেজা তোয়ালে পেঁচিয়ে রাখলে ভালো হয়।

ডিহাইড্রেশনকে অবহেলা করা উচিৎ নয়। ডায়রিয়া কিংবা বমিজনিত ডিহাইড্রেশন অনেক সময় মানুষের মৃত্যুর কারন হয়ে থাকে। তাছাড়া বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা এবং দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের ক্ষতির কারনও এই ডিহাইড্রেশন। ডিহাইড্রেশনের প্রান্তিক পর্যায়ে রোগী যদি বারবার জ্ঞান হারায়, মারাত্মক দূর্বলতা অনুভব করে কিংবা খিঁচুনি দেখা দেয় তবে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।

InfotakeBD

View posts by InfotakeBD
InfotakeBD is a information sharing blog, We share information for you. Please visit us and if you want to contribute for this blog please email us infotakebd@gmail.com. Thank you

Leave a Reply

Scroll to top