রক্ত দেখলে একটু ভয় পায়না এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। আর তা যদি নিজের নাক দিয়ে পড়ে তাহলে হঠাৎ করে অস্থির হয়ে পড়া স্বাভাবিক। চলুন জেনে নেই নাক দিয়ে রক্ত পড়ার কিছু কারন এবং রক্তপাত হবার পরে প্রাথমিক করণীয়। বেশিরভাগ সময়ই নাক দিয়ে রক্ত পড়ার প্রকৃত কারন খুঁজে পাওয়া যায় না। আমাদের নাকে দুটো ছিদ্র রয়েছে। এগুলো একটি পর্দা দিয়ে পৃথক থাকে। এর ঠিক নিচের অংশটাকে বলা হয় লিটলস এরিয়া। এখানে অনেকগুলো ধমনী এসে মিলিত হয়।সাধারণত লিটলস এরিয়াতে আঘাতের ফলেই বেশিরভাগ সময় নাক দিয়ে রক্ত পড়ে। নাক দিয়ে রক্ত পড়ার অন্য কারনগুলো হচ্ছে-
১. নাকের ভেতরে কোন অতিরিক্ত পদার্থ বা ফরেন বডি আটকে থাকলে রক্ত পড়তে পারে।
২. অনেক সময় নাকে পাথর জমে রাইনোলিথ হয়। এটাও নাক দিয়ে রক্ত পড়ার উল্লেখযোগ্য কারন।
৩. অনেকেরই ঘন ঘন নাকের ভেতরে হাত দেওয়ার অভ্যাস রয়েছে। এতেও নাক দিয়ে রক্ত পড়তে পারে।
৪. নাকে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হলে রক্ত পড়তে পারে।
৫. নাকের ভেতরের কোন টিউমার থাকলে নাক দিয়ে রক্ত পড়তে পারে।
৬. উচ্চরক্তচাপ সরাসরি নাক দিয়ে রক্ত পড়ার কারন না হলেও এর উপস্থিতিতে নাক দিয়ে রক্ত পড়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
৭. রক্তের বিভিন্ন রোগ যেমন: লিউকেমিয়া, হিমোফেলিয়া ও ক্রিসমাস ডিজিজ হলে নাক দিয়ে রক্ত পড়ে।
৮. পর্বতারোহীরা যখন অনেক উঁচুতে উঠেন তখন বাতাসের চাপ কম থাকায় তাদের নাক দিয়েও রক্ত পড়তে পারে।
নাক দিয়ে রক্ত পড়লে করণীয়:
১. রক্ত পড়া শুরু হলে নাকে চাপ দিয়ে সামনের দিকে ঝুঁকে বসে পড়তে হবে। নাকের ছিদ্র চাপ দিয়ে ধরতে হবে যেন পর্দার নিচের লিটলস এরিয়ার ধমনিতে রক্ত সরবাহ বন্ধ হয়।
২. সম্ভব হলে ফ্রিজ থেকে বরফ এনে দ্রুত চাপ দিয়ে ধরতে হবে। মুখের তালুর যে অংশ নাক বরাবর সেখানে বরফ চাপ দিয়ে ধরলে সবচেয়ে ভালো হয়।
৩. হাতের কাছে সার্জিক্যাল গজ কাপড় কিংবা প্যাক থাকলে তার সাথে একটু প্যারাফিন মিশিয়ে নাকের ভেতরে ঢুকিয়ে রেখে সাময়িকভাবে রক্তপাত বন্ধ রাখা যায়।
৪. সর্বাপরি নাক রক্ত পড়লে তাৎক্ষণিক প্রাথমিক করণীয়গুলো করে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।