মূল্যবোধ :
• সমাজের বিবর্তনের ধারায় কিছু রীতিনীতি ও আচরণ সমাজের সাধারণ নিয়মে পরিণত হয়। এসব সাধারণ নিয়মগুলো সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাকে। আবার নিয়মগুলো ভঙ্গ করলে সমাজে শান্তি ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয়। এসব নিয়মকানুনগুলোই মূল্যবোধ।
• মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করা যায় না, এটি ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে।
• সাধারণত মানুষ মূল্যবোধ দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়।
• স্থান-কাল-পাত্র ভেদে মূল্যবোধ ভিন্ন হতে পারে।
• সময় পরিবর্তনের সাথে সাথে মূল্যবোধ পরিবর্তিত হতে পারে।
• মূল্যবোধ ভাঙলে/অমান্য করলে শাস্তি হয় না।
• মূল্যবোধের সাতে নৈতিকতা শব্দটি জড়িত।
• মূল্যবোধ একটি ইতিবাচক শব্দ, যার অনুপস্থিতিকে বলা হয়- মূল্যবোধের অবক্ষয়।
• মূল্যবোধ হতে পরে- নৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয়, রাজনৈতিক রাষ্ট্রীয় প্রভৃতি।
• ধর্মীয় জীবন যাপনের দিক থেকে যেসব মূল্যবোধ। যেমন বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাসরত ভিন্ন ভিন্ন ধর্মাবলম্বীরা নিজ ধর্ম পালন করে অপরের ধর্ম পালনকে বাধাগ্রস্ত করে না, অর্থাৎ "ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার" নীতি মেনে চলে, এটি একটি মূল্যবোধ। আবার, যখন এই মূল্যবোধের অবক্ষয় দেখা দেবে, তখনি ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতা দেখা দেবে।
• ধর্মও কিছু কিছু মূল্যবোধের নির্দেশনা প্রদান করে, সেগুলোও ধর্মীয় মূল্যবোধ। যেমন : বাবা-মার সেবা করা, কারো কুৎসা রটনা না করে, অভাবগ্রস্তকে সহায়তা করা প্রভৃতি।
• রাষ্ট্রের আইন-কানুন ও পরিচালনা ব্যবস্থা তথা সংবিধানের নির্দেশনার আলোকে যেসব মূল্যবোধ গড়ে ওঠে সেগুলোই রাষ্ট্রীয় মূল্যবোধ। যেমন- পরমত সহিষ্ণুতা, অন্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ না করা, রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ ও নাগরিক দায়িত্ব পালন প্রভৃতি।
• রাজনৈতিক মূল্যবোধ বলতে কিছু রাজনৈতিক আচরণকে বোঝায়, যেগুলো রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে রাজনীতি চর্চাকে স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে। সেগুলো হলও- সবার সমানাধিকার তথা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, রাজনীতিকে দেশের জন্য ও মানুষের জন্য কল্যাণকর করে তোলা, দেশের স্বার্থকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেয় তথা "ব্যক্তির চেয়ে দল বড় দলের চেয়ে দেশ বড়" নীতি অবলম্বন, দেশের সার্বভৌমত্ব, ইতিহাস ঐতিহ্য (বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন-মুক্তিযুদ্ধ) প্রভৃতিকে ধারণ-লালন ও বিস্তৃতি ঘটানো প্রভৃতি।
• সামাজিক সেসব রীতিনীতি ও আচরণ কালক্রমে নৈতিক ও সামাজিক নিয়মে পরিণত হয় সেগুলোই সামাজিক মূল্যবোধ। যেমন বড়দের শ্রদ্ধা ও ছোটদের ¯েœহ করার পাশাপাশি সামাজিক বন্ধন অটুট রাখা।