রক্তে সুগারের মাত্রা হঠাৎ কমে গেলে কি করবেন ?

রক্তে সুগার বা গ্লুকোজ পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় কমে যাওয়াকে হাইপোগ্লাইসেমিয়া বলে। অনেকে একে সংক্ষেপে হাইপো বলে থাকেন। আমাদের মস্তিষ্কের সঠিক কর্মক্ষমতার জন্য গ্লুকোজের সরবরাহ ঠিক থাকা অপরিহার্য। কিন্তু রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কমে গেলে মস্তিষ্কেও এর সরবরাহ কমে যায়। ফলে নানা উপসর্গ দেখা দেয়। রক্তে অতিমাত্রায় গ্লুকোজ কমে গেলে জ্ঞান হারানো থেকে শুরু করে মস্তিষ্কের স্থায়ী ক্ষতি পর্যন্ত হতে পারে। এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। তাই সঠিক সময়ে উপসর্গগুলো বুঝতে পারা এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া খুবই জরুরী।

 হাইপোগ্লাইসেমিয়া কেন হয় ?

 সাধারণত ডায়াবেটিস রোগীরাই হাইপগ্লাইসেমিয়াতে বেশি আক্রান্ত হয়। বিশেষ করে যারা ইনসুলিন ব্যবহার করে থাকেন তাদের আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি। ইনসুলিন নেয়ার পর খেতে ভুলে যাওয়া, অপরিমিত খাবার খাওয়া, দেরিতে খাবার গ্রহণ, অতিরিক্ত ব্যয়াম ও শারীরিক পরিশ্রম ইত্যাদি কারনে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে। এছাড়া মাত্রাতিরিক্ত ইনসুলিন ব্যবহার কিংবা অতিমাত্রায় ডায়াবেটিসের ওষুধ গ্রহণও এর জন্য দায়ী।

হাইপোগ্লাইসেমিয়া কিভাবে বুঝবেন:

 রক্তে গ্লুকোজ এর পরিমাণ কমে গেলে অনেকগুলো লক্ষণ দেখা দেয়। যেমন:

 

১. শরীর ঘামতে থাকা

২. গায়ে কাঁপুনি ধরা

৩. ক্ষুধা অনুভব করা

৪. দুঃশ্চিন্তাগ্রস্ত হওয়া

৫. ক্লান্তি অনুভব করা

৬. কথা বলতে কষ্ট হওয়া

৭. ঝিমুনিভাব অনুভূত হওয়া

৮. মাথা ব্যথা ও বমি বমি ভাব হওয়া

৯. মাত্রা বেশি হলে জ্ঞান হারানো

হাইপোগ্লাইসেমিয়া হলে করণীয়ঃ

হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে হবে। এ সময় করণীয়গুলো হচ্ছে-

১. দ্রুত রোগীকে গ্লুকোজ বা মিষ্টি জাতীয় কিছু খাইয়ে দিতে হবে।

২. কিছু পাওয়া না গেলে পানিতে চিনি গুলে খাওয়াতে হবে।

৩. যত দ্রুত সম্ভব রক্তের সুগার বা গ্লুকোজের পরিমাণ মাপতে হবে।

৪. ৩০ মিনিটের মধ্যে রোগী স্বাভাবিক না হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

৫. তবে মুখে খাওয়ানো সম্ভব না হলে বা রোগী জ্ঞান হারালে দ্রুত হাসপাতালে নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

 হাইপোগ্লাইসেমিয়া প্রতিরোধের উপায়:

১. নিয়মিত রক্তের সুগার বা গ্লুকোজ মাপতে হবে।

২. ইনসুলিন ব্যবহারকারীদের সবসময় মিষ্টি জাতীয় খাবার (যেমন: চকলেট, লজেন্স, বিস্কুট) সঙ্গে রাখতে হবে।

৩. ব্যয়াম করার সময় গ্লুকোজ মেশানো পানির বোতল সাথে রাখতে হবে।

৪. ভ্রমণের সময় সাথে মিষ্টি জাতীয় খাবার, গ্লুকোজ মেশানো পানি ও গ্লুকোমিটার রাখতে হবে।

৫. বারবার হাইপোগ্লাইসেমিয়াতে আক্রান্ত হলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

InfotakeBD

View posts by InfotakeBD
InfotakeBD is a information sharing blog, We share information for you. Please visit us and if you want to contribute for this blog please email us infotakebd@gmail.com. Thank you

Leave a Reply

Scroll to top