শিশুর কান্নার ৭টি কারন

শিশুর কান্না নিয়ে অনেক বাবা-মা’ই খুব চিন্তিত থাকেন। কান্নার কারন জানতে চান সবাই। তবে শিশুর কান্না নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। নয় মাস সম্পূর্ণ অন্য এক পরিবেশে বেড়ে উঠার পরে হঠাৎ করেই নতুন এক পরিবেশে আসার পরে নবজাতকের মানিয়ে নিতে একটু সময়ের দরকার হয়। এমন সময় কিছুটা কান্নাকাটি সে করতেই পারে। তাই বাচ্চা কেঁদে উঠলেই ভয় পেয়ে যাবেন না। শিশুরা প্রয়োজনের কথা বলতে পারেনা। তাদের প্রয়োজনের ও যোগাযোগের মাধ্যমই হল কান্না। তবে বেশি কান্নাকাটি করতে থাকলে অবশ্যই চিন্তার বিষয়। অতিরিক্ত কান্না থামানোও অনেক সময় বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।

শিশুরা সাধারণত ক্ষুধা লাগলে, ঘুম আসলে, ব্যথা পেলে ও ভয় পেলে কাঁদতে পারে। তবে বেশির ভাগ কান্নাই সাধারণ। যা একটু সচেতন হলে থামানো যায়। অনেক সময় তা বয়সের সাথে সাথে ভালো হয়ে যায়।

জন্মের পর পরই শিশুর প্রথম কান্না কি ভালো?

জন্মের পরপরই নবজাতকের চিৎকার করে কান্নার ব্যাপারটি স্বাভাবিক ও শিশু স্বাস্থ্যের জন্যে ভাল। জন্মের পর নবজাতকের কান্না দেরি করে হলে ধরে নিতে হবে শিশুটি অক্সিজেন পাচ্ছে না। প্রসব-পরবর্তী এক মিনিটের মধ্যে শ্বাস না নিলে শিশুর মারাত্মক ক্ষতি হয়। এ সমস্যাকে বলা হয় বার্থ অ্যাসফিক্সিয়া।

শিশুর কান্নার কারন:

১. ক্ষুধা লাগলে: শিশুর কান্না শুনে প্রথমেই যে ধারণাটি করা হয় তা হল শিশুর ক্ষুধা লেগেছে। সদ্যজাত শিশুর কিছু লক্ষণ দেখে এটা বুঝা যায়, যেমন- অস্থির হয়, ঠোঁট কামড়ায়, তাদের গালে হাত লাগানো হলে তাদের মাথা হাতের দিকে ঘুরায় এবং নিজের হাত মুখে দেয়।

২. ডায়াপার নোংরা হলে: কিছু শিশু ডায়াপার নোংরা হলেই অস্বস্তি প্রকাশ করে ও কাঁদে। আবার কিছু শিশু এটা অনেকক্ষণ সহ্য করতে পারে। তবে ডায়াপার নোংরা হলেই তা তৎক্ষণাৎ পাল্টানো উচিত। অনেকসময় ডায়াপার ব্যবহারে র‌্যাশ হতে পারে যার কারনেও বাচ্চা কান্না করতে পারে। তাই ডায়াপার যতকম ব্যবহার করা যায় তত ভালো।

৩. ঘুমের জন্য: শিশুরা অনেক ভাগ্যবান যে তারা যেকোনো সময় যেকোনো জায়গায় ঘুমিয়ে যেতে পারে। যখন শিশু ক্লান্ত হয় তখন ঘুমের প্রয়োজন হয়। আর তখনই শিশু কাঁদে, মাথা নাড়ে ও অস্থির হয়।

৪. বাবা-মায়ের সান্নিধ্য পেতে: শিশুরা আদরপ্রিয়। তারা পিতা-মাতার মুখ দেখতে চায়, তাদের কন্ঠ শুনতে চায়, তাঁদের হৃদস্পন্দন শুনতে চায় এমনকি তাদের গায়ের আলাদা গন্ধও তারা চিনতে পারা। শিশুর যখন বাবা-মায়ের সান্নিধ্য প্রয়োজন হয় তখন ও কাঁদতে পারে।

৫. পেটের সমস্যা হলে: প্রথম তিন মাস শিশুরা সাধারনত ইনফ্যান্টাইল কলিগ এ ভোগে। হঠাৎ করেই খাদ্যনালী কাজ শুরু করে বলে সাধারণত এমন ব্যথা হয়ে বলে অনেকসময় শিশুরা কেঁদে থাকে। শিশু যদি পেটের কোনা সমস্যায় ভোগে তাহলে অনেকক্ষণ ধরে কান্না করতে থাকে। যদি খাওয়ার পর পরই শিশু কাঁদে তাহলে বুঝতে হবে যে পেট ব্যাথার জন্য কাঁদছে। আর শিশুকে খাওয়ানোর পর ঢেঁকুর তুলালে পেটের গ্যাস অনেকাংশে ভালো হয়ে যায়।

৬. ঠাণ্ডা বা গরম লাগলে: ন্যাপি বা ডায়াপার বদল করার সময় যখন জামা খুলে শিশুর শরীর ঠাণ্ডা বা ভেজা টিস্যু দিয়ে মোছা হয় তখন শিশু কাঁদতে পারে। কারন এ সময় সে ঠাণ্ডা অনুভব করে। এছাড়া খুব বেশি গরম তাপমাত্রা অনুভূত হলেও শিশু কাঁদতে পারে। কারন শিশুরা গরম ও ঠাণ্ডা উভয়কেই অপছন্দ করে।

৭. অন্যান্য: উপরের কারনগুলো ছাড়া আরো কিছু কারনে শিশু কাঁদতে পারে। যেমন: হঠাৎ জোরে কোনো শব্দ শুনলে, ব্যথা পেলে বা ভয়ের কিছু দেখলে, নতুন পরিবেশে গেলে, এমনকি নতুন মানুষ দেখলেও শিশু কান্না করতে পারে।

কখন চিন্তার কারন?

বাচ্চার সব মৌলিক চাহিদা পুরন করা হয়েছে তারপরও যদি বাচ্চা কাঁদতে থাকে তবে প্রথমেই দেখে নিন বাচ্চার শরীরে জ্বর আছে কি না। বা তার কোনভাবে ঠাণ্ডা লেগেছে কিনা। অনেকসময় শিশুর কানে ব্যথা, মুখে ঘা, মস্তিষ্কে প্রদাহ হলে খুব কান্নাকাটি করে থাকে। তবে এসবের সাথে জ্বর থাকবে। এমন হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

InfotakeBD

View posts by InfotakeBD
InfotakeBD is a information sharing blog, We share information for you. Please visit us and if you want to contribute for this blog please email us infotakebd@gmail.com. Thank you

Leave a Reply

Scroll to top