দিন দিন বাড়ছে হৃদরোগ ও হৃদরোগ জনিত মৃত্যুর সংখ্যা। প্রতিরোধই হতে পারে এই ধরনের জটিলতা থেকে মুক্তির মোক্ষম উপায়। আর হৃদরোগ প্রতিরোধে অতুলনীয় ভিটামিন সি। হার্টের রোগী কিংবা অতিরিক্ত ওজনের মানুষ যাদের হার্ট অ্যাটাক এর ঝুঁকি বেশী, তাদের জন্য অমৃত হয়ে উঠতে পারে ভিটামিন-সি। অতিরিক্ত কোলেস্টেরল কিংবা অতিরিক্ত ওজন হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। সেই ঝুঁকি কমিয়ে দিতে পারে ভিটামিন-সি। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এমন চমকপ্রদ তথ্যই উঠে এসেছে।
অনেক ধরনের হৃদরোগের মধ্যে হার্ট অ্যাটাক বা মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন সবচেয়ে বেশী কমন ও জীবনঘাতি। এক্ষেত্রে হৃদপিন্ডের সূক্ষ্ণাতিসূক্ষ্ণ শিরা উপশিরায় রক্ত পরিবহন বাধাপ্রাপ্ত হয়ে নিকটবর্তী কার্ডিয়াক টিস্যুকে অকর্মক্ষম করে ফেলে। তখন মুহূর্তের মধ্যে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়ে রোগীর মৃত্যু হয়।
শিরা উপশিরায় রক্তে প্রবাহের এই বাধাপ্রাপ্ত হবার কারন ‘ভ্যাসোকন্সট্রিকশন’ বা রক্তনালী সরু হয়ে যাওয়া। যার জন্য অনেকাংশে দায়ী এন্ডোথিলিন-১ নামের একটি প্রোটিন।
গবেষনায় বলা হয়, প্রতিদিন ভিটামিন-সি খেলে এন্ডোথিলিন-১ প্রোটিনের দ্বারা ভ্যাসোকন্সট্রিকশন হবার হার কমে যায়। ফলে হৃদপিন্ডের সূক্ষ্ণ রক্তনালিকার রক্ত প্রবাহ বন্ধ হবার ঝুঁকিও বহুলাংশে কমে যায়। এছাড়া স্বাভাবিকভাবেই ভিটামিন-সি যেকোন রক্তনালীর রক্ত প্রবাহ ও কর্মদক্ষতা বজায় রাখতেও সাহায্য করে। সুতরাং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে প্রচলিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি ভিটামিন-সি গ্রহণও বেশ কার্যকর। তাই লক্ষ্য রাখুন, আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যেন ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ খাবারের উপস্থিতি থাকে।
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবারের তালিকায় রয়েছে কাঁচা মরিচ (প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁচা মরিচে রয়েছে ২৪২.৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি), পেয়ারা, আমড়া, সরিষা, সবুজ শাক-সবজি, ব্রকোলি, আমলকি, পেঁপে, কমলা, লেবু, স্ট্রবেরীসহ প্রায় সব ধরনের ফল। এমনিতেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, ত্বকের লাবণ্য বজায় রাখা, আক্রান্ত ক্ষতস্থানের দ্রুত আরোগ্য হওয়া সহ আরো অনেক গুণ আছে ভিটামিন-সি এর। আর এখন জানা গেল, হৃদপিণ্ড বা হার্টের জন্যও এই ‘টক’ ভিটামিন-সি বেশ উপকারী। তাই আজ থেকেই খাদ্য তালিকায় ভিটামিন-সি যোগ করুন।