অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কারের কারনে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছে হাজারো প্রাণ। কিন্তু জন্মের শতবর্ষ পূরণের আগেই অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বলা হচ্ছে বেশ কিছু রোগের ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটকের কার্যকারিতা কমে গেছে। গবেষকরা দাবী করছেন মূত্রনালীর সংক্রমণ, নিউমোনিয়া ইত্যাদি রোগের জন্য সাধারণভাবে ব্যবহৃত অ্যান্টিবায়োটিকগুলো এখন আর কাজ করছে না।
বিশেষজ্ঞদের দাবী অ্যান্টিবায়োটিকের অতি ব্যবহারই এর মূল কারন। কারণে-অকারণে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই মানুষ অ্যান্টিবায়োটিক কিনছে। বাংলাদেশের অবস্থা আরও নাজুক। এখানে ওষুধের দোকানগুলোতে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই ওষুধ কেনা যায়। অনেক সময় ওষুধের দোকানের বিক্রেতা রোগীর লক্ষণ শুনে নিজেই ব্যবস্থাপত্র দেন ও ওষুধ বিক্রি করেন। এভাবে অনিয়ন্ত্রিত ও মাত্রাজ্ঞানহীন ব্যবহারের ফলে গত কয়েক বছরে বেশ কিছু অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা হ্রাস পেয়েছে। চলুন, অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা হ্রাস প্রতিরোধে ৫টি করণীয় সম্পর্কে জেনে নেই-
১. কোন রেজিস্টার্ড অথবা সনদপ্রাপ্ত চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যাতিত অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করা যাবে না। ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী নিয়ম মেনে অ্যন্টিবায়োটিক ওষুধ খেতে হবে।
২. অ্যান্টিবায়োটিকের কোর্স শুরু করার পর ভালো বোধ করলে অনেকেই ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দেন। কিন্তু কখনোই এই কাজ করা যাবে না। ভালো বোধ করলে বা রোগের প্রকোপ কমে গেলেও অ্যান্টিবায়োটিকের কোর্স সম্পূর্ণ করতে হবে। কেননা যেকোন অ্যান্টিবায়োটিকের নির্দিষ্ট মাত্রা ও সেবনকাল রয়েছে। এর চেয়ে কম মাত্রায় ও কম দিন সেবন করলে রোগের জীবাণু সাময়িকভাবে কার্যকারিতা স্থগিত রাখে, কিন্তু পুরোপুরি ধ্বংস হয় না। পরে জীবাণুটি আবার সক্রিয় হয়।
৩. অনেকদিনের অব্যবহৃত অথবা ফেলে রাখা অ্যান্টিবায়োটিক কখনোই পুনরায় বা নতুন করে ব্যবহার করা যাবে না।
৪. ইঞ্জেকটেবল অ্যান্টিবায়োটিকের ক্ষেত্রে কখনোই একজনের ব্যবহৃত অ্যান্টিবায়োটিক আরেকজন ব্যবহার করতে পারবেন না।
৫. সর্বোপরি নিয়মিত হাত ধোয়া, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা, বিশুদ্ধ পানি পান করা, অসুস্থ রোগীর সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা, হাসপাতালের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ এবং রোগ প্রতিরোধে টিকা ব্যবহার করা মাধ্যমে সংক্রামক রোগ থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করতে হবে।