ব্যথা সহ্য করতে আমরা অনেকেই অপারগ। শরীরে সামান্য ব্যথা অনুভূত হলেই আমরা অনেকেই অস্থির হয়ে পড়ি। নিজে নিজেই গ্রহণ করি ব্যথা নাশক ওষুধ বা পেইন কিলার। অনেকে হয়ত ওষুধের দোকানদার, নিকট আত্মীয় বা কাছের বন্ধুদের পরামর্শেই অহরহ গিলছেন ব্যথানাশক ওষুধ। অথচ কোন ধরনের বিচার-বিবেচনা ও ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই ব্যথানাশক ওষুধ খেয়ে আমরা নানা ধরনের বিরূপ পার্শপ্রতিক্রিয়ার শিকার হচ্ছি। চলুন জেনে নেই ব্যথানাশক ওষুধের যথেচ্ছ ব্যবহারজনিত ১০টি বিরুপ প্রভাব-
১) গ্যাস্ট্রিক আলসার: গ্যাস্ট্রিক আলসার বলতে পাকস্থালীতে ক্ষত বা আলসার সৃষ্টি হওয়াকে বুঝায়। এর ফলে বুকে ব্যথা থেকে শুরু করে খাবারে অরুচি, বমি বমি ভাব, বমি হওয়া, রক্তবমি, পায়খানার সাথে কালো রক্ত যাওয়া, রক্তশূন্যতা ইত্যাদি হতে পারে।
২) গ্যাস্ট্রিক পারফোরেশন: সহজ ভাষায় একে বলা যায়, পেটের নাড়ী-ভুঁড়ি ফুটো হয়ে যাওয়া। গ্যাস্ট্রিক আলসারের মাধ্যমে ক্ষত সৃষ্টি হয়। সেই ক্ষত বাড়তে বাড়তেই একসময় পারফোরেশন হয়। বিশেষ করে আমাদের দেশের সরকারী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোতে অনুসন্ধান করলেই এই রোগের তীব্রতা বুঝা যায়।
৩) কিডনি ফেইলিউর: কিডনির নরমাল ফাংশন বা স্বাভাবিক কাজ করার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাওয়া। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে এটা হামেশাই ঘটছে।
৪) শ্বাস-প্রশ্বাসের নালী সংকুচিত হয়ে যাওয়া। এ কারনে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় আক্রান্ত রোগীদের শ্বাসকষ্ট আরও বেড়ে যায়।
৫) লিভার বা যকৃতের স্বাভাবিক কর্মক্ষমতার পরিবর্তন হয়ে যাওয়া।
৬) গর্ভাবস্থায় ব্যথানাশক ওষুধ খেলে বাচ্চার জন্মগত ত্রুটি হতে পারে। এছাড়া বাচ্চা স্বাভাবিক সময়ের আগেই জন্মগ্রহণ করতে পারে। ডাক্তারি পরিভাষায় যাকে বলে প্রি-ম্যাচিউর বেবি (premature baby)।
৭) হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে।
৮) স্ট্রোক করার সম্ভাবনা বুদ্ধি পায়।
৯) দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে চোখে ছানি পড়তে পারে।
১০) এছাড়া মাথাব্যথা, অ্যালার্জি জাতীয় সমস্যা, ঘুম ঘুম ভাবসহ আরো কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে যা দৈনন্দিন জীবনের কর্মকাণ্ডকে নানাভাবে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
স্বাভাবিক সুন্দর জীবনের জন্য ব্যথামুক্ত জীবন আবশ্যক। কিন্তু ব্যথা থেকে মুক্ত থাকতে অবশ্যই অনিয়ন্ত্রিতভাবে ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করা উচিত নয়। কারন এতে জীবন হয়ে উঠতে পারে আরো দুর্বিষহ। তাই ব্যথানাশক ওষুধ ব্যবহারে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহন করতে হবে।