মাইগ্রেন এক ধরনের মাথাব্যথা। এটা খুবই পরিচিত অসুখ। তবে সব মাথাব্যথাই কিন্তু মাইগ্রেন নয়। আমাদের এ নিয়ে অনেক ভুল ধারণা আছে। কারো মাথাব্যথা হলেই আমরা ভেবে বসি মাইগ্রেন। কিন্তু মাথাব্যথার সবচেয়ে বড় কারণ ‘টেনশন টাইপ হেডেক’।
মাইগ্রেন মাথার একদিকে হয়। তবে দুইদিকেও হতে পারে। মাইগ্রেনের সঠিক কারণ আজ পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে অনেক বিশেষজ্ঞ বলেছেন, মাথার ভেতরের রক্তনালীতে সমস্যা হলে মাইগ্রেন দেখা দেয়।
মাইগ্রেনের ব্যথা একবার শুরু হলে কয়েক ঘন্টা থেকে কয়েকদিন পর্যন্ত থাকতে পারে। এই ব্যথা স্বাভাবিক কাজকর্মে ব্যঘাত ঘটায়। টেনশন টাইপ হেডেক নিয়েও একজন স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারে। কিন্তু মাইগ্রেনের ব্যথা নিয়ে কাজ করা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়।
যাদের মাইগ্রেন আছে তারা ব্যথা উঠার আগেই বুঝতে পারে। অনেকে চোখের সামনে আলোর ঝলকানি দেখতে পান। বমিভাব, বমি হতে পারে। রোগী মাথাব্যথায় ছটফট করতে থাকেন।
যাদের মাইগ্রেন আছে তাদের বেশকিছু নিয়ম মেনে চলা উচিত। প্রতিদিন যাতে মাইগ্রেনের রোগীর ভাল ঘুম হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কফি, চকোলেট, অ্যালকোহল ও পনির খাওয়া বর্জন করতে হবে। মানসিক চাপ বেশি নেয়া যাবেনা। OCP বা জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি খেলে অনেকের সমস্যা হয়। তাদের ক্ষেত্রে বিকল্প জন্মনিয়ন্ত্রন পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। কিছু ওষুধ আছে যেগুলো মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হলে খেতে হবে। তা হলে উপকার পাওয়া যাবে। আবার কিছু ওষুধ খেলে মাইগ্রেনের অ্যাটাক হয় না বা কমে আসে। অভিজ্ঞ চিকিৎসকের কাছ থেকে এই বিষয়টি ভালভাবে জেনে-বুঝে নিতে হবে।
তবে মাথাব্যথা হলেই কেউ মাইগ্রেন ভাববেন না। বরং দ্রুত চিকিৎসক দেখান। তিনি যদি রোগ হিসাবে মাইগ্রেন নির্ণয় করেন, তখন আপনি মাইগ্রেন হয়েছে বলে নিশ্চিত হতে পারেন। কারন মাথাব্যথার আরো অনেক কারন রয়েছে। মাথাব্যথার প্রধাণ কারনগুলো হচ্ছে-
১. টেনশন টাইপ হেডেক,
২. সাইনুসাইটিস বা সাইনাসের প্রদাহ,
৩. কানে প্রদাহ,
৪. মস্তিষ্ক বা মস্তিষ্ক ঝিল্লীর প্রদাহ
৫. দাঁত ব্যথা,
৬. ব্রেইন টিউমার,
৭. মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ ও যক্ষ্মা
৮. প্যানিক ডিসঅর্ডার
৯. স্ট্রোক
১০. ট্রাইজেমিনাল নিউরালজিয়া
১১. গ্লুকোমা
১২. পানিশূন্যতা।
মনে রাখবেন, ৬০-৭০ ভাগ মাথাব্যথার কারন হচ্ছে টেনশন টাইপ হেডেক। তাই বুঝতে হবে মাথাব্যথা মানেই কিন্তু মাইগ্রেন নয়। মাথাব্যথা হলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। রোগ ডায়াগনসিস করে ওষুধ খাওয়া উচিত। তাহলে সহজেই অনেক জটিলতার হাত থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব।