ত্বকে ফাঙ্গাস বা ছত্রাকের সংক্রমণ খুবই সাধারণ ঘটনা। শীত এলে এই সমস্যা বেড়ে যায়। যেকোন মানুষের ত্বকেই ফাঙ্গাসের আক্রমণ হতে পারে। ত্বকের উপরিভাগে যেসব ফাঙ্গাস সংক্রমণ ঘটে তাদের মধ্যে ক্যানডিডা ও ম্যালাসেজিয়া নামক ইস্ট এবং ট্রাইকোফাইটন, মাইক্রোস্পোরাম ও ইপিভারমোফাইটন নামক ডার্মাটোফাইট প্রধান। মানুষের ত্বকের একেবারে বাইরের দিকে থাকে নির্জীব কেরোটিন। ডার্মাটোফাইটগুলো এই কেরোটিনকে আক্রমণ করে এবং এখানেই বসবাস ও বংশবৃদ্ধি করে থাকে। খুব কম ক্ষেত্রেই এরা ত্বকের বাইরের স্তর ভেদ করে ভেতরে প্রবেশ করে। ত্বকের উপরিভাগে ডার্মাটোফাইটের এরূপ সংক্রমণে ত্বকের কোষগুলোর অতিদ্রুত সংখ্যা বৃদ্ধি ঘটতে থাকে। ফলে ওই এলাকার ত্বক মোটা ও পুরু হয়ে যায়। ত্বকের এই ধরনের ডার্মাটোফাইট সংক্রমণকে সাধারণ অর্থে রিংওয়ার্ম, টিনিয়া সংক্রমণ বা দাদ বলে। টিনিয়া বিভিন্ন ধরনের হয়। নিচে বিভিন্ন ধরনের টিনিয়া সংক্রমণের লক্ষণ দেয়া হল-
১. টিনিয়া করপোরিস:
লক্ষণঃ
- সাধারণত দেহের যেসব স্থান কাপড় দিয়ে ঢাকা হয় না (যেমন: মুখ, হাত) সেসব স্থানে টিনিয়া করপোরিস হয়ে থাকে।
- আক্রান্ত স্থানটি লাল আংটির মতো হয়ে যাবে।
- আক্রান্ত অংশের সীমারেখা সুস্পষ্ট হবে এবং মাঝের অংশ পরিষ্কার থাকবে।
- আক্রান্ত স্থানটিতে চুলকানি থাকবে।
২. টিনিয়া ভার্সিকোলর
লক্ষণঃ
- সাধারণত দেহের যেসব স্থান ঢাকা থাকে, সে জায়গায় এটা হয়ে থাকে।
- সাধারণত বুক ও পিঠের চামড়া এবং গলায় হয়ে থাকে।
- চামড়ার ওপর চক্রাকার ও লাল আবরণ দেখা যায়।
- চামড়া গাঢ় বর্ণের হয়ে যায়।
- চামড়া মোটা, পুরু বা ভারী হয়ে যায়।
৩. টিনিয়া ক্রুরিস
লক্ষণঃ
- টিনিয়া ক্রুরিস সাধারণত কুঁচকি বা রানের চিপায় হয়ে থাকে।
- এটি খুব ছোঁয়াচে রোগ। রোগীর তোয়ালে বা গামছা, গোসলখানার মেঝে, হোটেলের কক্ষ ও বিছানার মাধ্যমে এই রোগের জীবাণু সুস্থ মানুষকেও আক্রমণ করতে পারে।
- আক্রান্ত স্থানের ত্বক লালচে বর্ণের হয়ে যায়।
- ত্বক আঁশের মত হয়ে ফুলে ওঠে।
- আক্রান্ত স্থান সব সময়ই চুলকায়।
- আক্রান্ত স্থানে অনেক সময় ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হতে পারে।
ফাঙ্গাস সংক্রমণগুলো বেশিরভাগ সময়ই খুব ছোঁয়াচে হয়। এ কারনে পরিবারের কারও এই রোগ হলে অন্যদেরও সতর্ক থাকতে হবে। ব্যবহার্য দ্রব্যাদি বিশেষ করে কাপড়-চোপড়, বিছানাপত্র, বসার স্থান ইত্যাদির ব্যবহার সীমাবদ্ধ করে রাখতে হবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।