আমাদের সমাজে আক্কেল দাঁত না উঠলে অনেক সময় বেআক্কেল বলা হয়ে থাকে। আক্কেল দাঁতের সাথে আক্কেল জ্ঞান হওয়ার কি সম্পর্ক সে প্রশ্ন মনে আসতেই পারে। আক্কেল দাঁতের ইংরেজি নাম Wisdom teeth। সাধারণত ১৭ থেকে ২১ বছর বয়সে আক্কেল দাঁত উঠে থাকে। এই বয়সে একজন মানুষ তারুণ্যের ছেলেমানুষি ছেড়ে দায়িত্ববান ব্যক্তিতে পরিনত হন। এ কারনেই সবদেশে সকল সভ্যতায় আক্কেল দাঁত উঠাটাকে পরিপূর্ণ মানুষে প্রদার্পনের প্রতীক হিসেবে ধরা হয়।
আমাদের দুইপাটি চোয়ালে ১৬টা ১৬টা করে মোট ৩২টা দাঁত থাকে। এর মধ্যে সবচেয়ে শেষের চারটি হচ্ছে আক্কেল দাঁত। চোয়ালের দৈর্ঘ্য যদি মোট দাঁতের পরিমাণের চেয়ে কম হয় তবে শেষ চারটি দাঁত মুখগহ্বরে জায়গা করে নেয়ার প্রতিযোগিতায় পেরে উঠেনা। তখন তারা একে অপরকে জড়িয়ে রয়ে যায় মাড়ির নিচে। অনেক সময় মাড়ির ভেতর দিয়ে একটু উঁকি দেয়ার চেষ্টা হকরে। কিন্তু এই জড়িয়ে রাখাটাই কাল হয়ে দাঁড়ায় তাদের জন্য। কারন এর জন্য দাঁতের মাঝখানে সুপ্ত জায়গা তৈরী হয়। সেখানে খাবার কণা জমা হয় এবং তা ব্রাশ করেও পরিষ্কার রাখা যায় না সবসময়। আর ঠিকমত দাঁত উঠতে না পারলে দাঁত ও মাড়ির মাঝখানে পকেট তৈরি হয়। এখানে খাবার জমে মাড়ির ইনফেকশন বা প্রদাহ হতে পারে।
আরো ভয়ংকর হল অনেকদিন ধরে খাবার জমে থাকতে থাকতে সামনের দাঁতে caries বা দাঁতের ক্ষয় হতে পারে। আর তারপরই শুরু হয় প্রচণ্ড ব্যথা। এ অবস্থায় কোন মতেই চুপচাপ বসে থাকা উচিত নয়। আগে থেকেই সাবধান হতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে দাঁতগুলো ঠিক সময়ে ঠিকঠাকমত উঠছে কিনা। ২৬ বছর বয়সের পরেও না উঠলে দাঁতের মায়া বাদ দেয়াই ভাল। সেক্ষেত্রে ডেন্টিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী এক্সরে করিয়ে দাঁতের অবস্থান নির্ধারণ করে দাঁত ফেলে দিতে হবে নাকি সংরক্ষন করা যাবে সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিতে হবে। নিয়মিত দাঁত ব্রাশ ও ফ্লোসিংসহ মুখ পরিস্কার রাখতে হবে। ইনফেকশন ভাল করার জন্য ডেন্টিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে। দেরি না করে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।তা না হলে সবার পিছনে লুকিয়ে থাকা দাঁতটিই হয়তো অগোচরে ভাল দাঁতগুলো নষ্ট করতে থাকবে। তাই সাবধান থাকুন, আক্কেল দাঁত নিয়ে আক্কেল সেলামি দেয়া থেকে সতর্ক থাকুন।