কি খাচ্ছেন: খাবার নাকি বিষ?

২৫ বছরে হার্ট অ্যাটাক (Heart Attack), ১২ বছর বয়সে ক্যান্সার (Cancer) কিংবা ৩০ বছরে স্ট্রোক (Stroke)! অল্প বয়সে বা অপ্রাপ্তবয়স্কদের এসব রোগ দেখলে আজকাল আর অবাক হওয়ার কিছু নেই। যদিও আমরা জেনে আসছি এসব হলো বৃদ্ধ বয়সের রোগ। এখন দৃশ্যপট বদলে গেছে। খুব অল্প বয়সেই এসব অসংক্রামক রোগগুলো আঘাত হানতে পারে। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, হার্ট অ্যাটাক (Heart Attack) অথবা বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে যত রোগী আসে তাদের ৪০ শতাংশের বয়স ৪০ বছরের কম। হার্ট অ্যাটাক সহ যাবতীয় অসংক্রামক রোগের সাথে খাদ্যাভ্যাস ও খাবারের বিশেষ যোগসূত্র আছে। চলুন, কি সেই যোগসূত্র তা জেনে নেই।

জিহ্বা হচ্ছে মানুষের স্বাদ অঙ্গ। মানুষ সব কিছু খায় শুধু স্বাদ পাওয়ার জন্য। কিন্তু খাওয়ার স্বাদ সাধের জীবনের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। বাইরের লোভনীয় খাবার দেখলে জিহ্বা নিয়ন্ত্রন করা কষ্টকর হয়ে যায়। কিন্তু আমরা একবারও ভাবার চেষ্টা করি না আসলে কি খাচ্ছি। ফলে সুস্বাদু খাবারের নামে নিজের পকেটের টাকায় নিজেই “বিষ” কিনে খাই অবলীলায়। বিদেশি পণ্য বা প্যাকেট মোড়ানো খাবার হলেই আমরা তাকে ভালো ও সুস্বাদু বলে গ্যারান্টি দিয়ে দেই। কিন্তু বুঝতে হবে, প্যাকেটজাত খাবারও সুকৌশলে প্রতারণার মাধ্যম হতে পারে। সেরকম কিছু খাবার সম্পর্কে এখন জানব।

১. বোতলজাত পানি: বোতজাত বিশুদ্ধ পানির নামে আমরা যা পান করছি তা কি বিশুদ্ধ? ওয়াসার সাপ্লাই দেয়া পানির সাথে ব্লিচিং পাউডার মিশালেই হয়ে যায় “মিনারেল ওয়াটার” (Mineral Water) । কিন্তু এই পানি না জীবাণুমুক্ত, না আছে এতে কোনো মিনারেল।

২. জুস: ম্যাংগো জুস (Mango Juice) খেয়ে আমরা তাজা আম খাওয়ার তৃপ্তি পাওয়ার ভান করি। জমকালো বিজ্ঞাপনগুলোতেও দেখায়– “সদ্য পাড়া আম ফেটে রস গুলো বোতলে ঢুকে পড়লো”। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঐসব জুসে ফরমালিন মেশানো আমের মধ্যে ক্ষতিকারক কেমিক্যাল মেশানো থাকে।

৩. ঘি: বাজারে পাওয়া বেশিরভাগ দুর্মূল্য “ঘি” এর প্যাকেটে “পোড়া ডালডা” ছাড়া আর কিছু নাই। এগুলো খেলে লাভের চাইতে ক্ষতিই বেশি অবধারিত।

৪. প্যাকেটজাত মশলা: প্যাকেটজাত “মশলা” এর পশলা মানুষের বাটাবাটির কষ্ট বাঁচিয়ে দিয়েছে। সাথে দিয়েছে মরিচ বা হলুদ বাটার পরিবর্তে “ইটের গুঁড়া” খাওয়ার অভিজ্ঞতা।

৫. সরিষার তেল: “সরিষার” তেলের মধ্যে মরিচের গুঁড়া দিয়ে বানানো হচ্ছে খাঁটি সরিষার মত ঝাঁজ। না জেনে খাচ্ছেন আর ডেকে আনছেন মরণঘাতি রোগ।

আজকাল প্রস্তুতকারকরা সবকিছুই মুখরোচক করে তৈরি করে। কিন্তু এসব মুখরোচক উপাদানের মাঝে লুকিয়ে আছে ভয়ংকর বিষ। যা শুধু শরীরের প্রত্যক্ষ ক্ষতিই করে না, বরং দীর্ঘ মেয়াদে বড় ধরনের অসুখ বা কেমিক্যাল টক্সিসিটির সম্মুখীন করে। আর যদি হয় তা কোনো carcinogen, তাহলে তো কথাই নেই। ক্যানসার আসন্ন, জীবন হবে বিপন্ন। বলা হয়ে থাকে যে, শুধুমাত্র খাবারের carcinogen এবং ধূমপান (smoking) বর্জন করতে পারলে পৃথিবীতে ক্যানসারের হারincidence দুই-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত কমানো সম্ভব।

মনে রাখতে হবে, ভোগ্য পণ্য যদি মানুষের শরীরে বিষক্রিয়া তৈরী করে তবে তা একটা সভ্য সমাজকে ধ্বংস করার জন্য যথেষ্ঠ । বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী এবং অটিস্টিক শিশুর সংখ্যা দিনে দিনে বাড়ছে । হয়তো কারণ খুঁজলে দেখা যাবে, এর সাথে এসব বিষাক্ত কেমিক্যালের যোগসুত্র আছে। তাই নিজের ও নিজের পরিবারের স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে আজই এসব বিষাক্ত পণ্য বর্জন করা উচিত। এতে মঙ্গল হবে নিজের, নিজের পরিবারের, সমাজের এবং সর্বোপরি গোটা জাতির।

InfotakeBD

View posts by InfotakeBD
InfotakeBD is a information sharing blog, We share information for you. Please visit us and if you want to contribute for this blog please email us infotakebd@gmail.com. Thank you

Leave a Reply

Scroll to top