গর্ভাবস্থায় ধূমপানের ১১টি ক্ষতিকর প্রভাব

গর্ভাবস্থায় ধূমপানের ১১টি ক্ষতিকর প্রভাব

ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এটা সবাই জানে। কিন্তু মানার ক্ষেত্রে অনেকেই ব্যতিক্রম। একটা সময় শুধু ছেলেদের মধ্যেই এই অভ্যাস সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু এখন আধুনিকতার বিস্তারে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নারী ধূমপায়ীর সংখ্যা। তবে এখনো পর্যন্ত আমাদের দেশে নারী ধূমপায়ীর সংখ্যা অনেক কম। তবে নিজে সক্রিয় ধূমপায়ী না হলেও স্বামী বা পরিবারের অন্য পুরুষ সদস্যরা ধূমপান করলে তার প্রভাব অধূমপায়ী নারীর উপর পড়ে।

এই অবস্থাকে সেকেন্ড হ্যান্ড স্মোক বা প্যাসিভ স্মোকিং বলে। এই অবস্থায় জলন্ত সিগেরেট থেকে উৎপন্ন ধোঁয়া এবং ধূমপানকারীর শ্বাস-প্রশ্বাস থেকে নির্গত ধোঁয়া দুটোই মায়ের শরীরে প্রবেশ করে। গর্ভাবস্থায় সরাসরি ধূমপান বা প্যাসিভ স্মোকিং উভয়ই মা ও শিশুর জন্য বেশ ক্ষতিকর ।

ধূমপান কিভাবে ক্ষতি করে: 

 ধূমপান করার সময় নিকোটিন, কার্বন মনো অক্সাইড ও টারসহ প্রায় চার হাজার রাসায়নিক উপাদান মায়ের শ্বাসনালীতে প্রবেশ করে। এগুলো পরে রক্তের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে মায়ের প্লাসেন্টা অতিক্রম করে শিশুর শরীরে প্রবেশ করে। শিশুর দেহে প্রবেশের পর এরা শিশুর বিকাশে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি সাধন করে। গর্ভাবস্থায় ধূমপানজনিত জটিলতাগুলো হচ্ছে-

১. ধূমপানের কারনে শরীরে নিকোটিন ও কার্বন মনো অক্সাইড প্রবেশ করে। নিকোটিন রক্তনালীকে সংকুচিত করে দেয় এবং কার্বন মনো অক্সাইড রক্তে অক্সিজেন এর মাত্রা কমিয়ে দেয়। ফলে শিশুর দেহে অক্সিজেন প্রবাহ কমে যায়।

২. ধূমপান শিশুর হৃদযন্ত্রের গতি বাড়িয়ে দেয়।

৩. গর্ভপাতের প্রবণতা বাড়িয়ে দেয়। সাধারণত গর্ভধারণের প্রথম ৩ মাস এই ঝুঁকি বেশি থাকে।

৪. মৃত বাচ্চা প্রসবের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

৫. প্রিম্যাচিউর বেবি বা ওজনে কম শিশু জন্ম দেয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।

৬. শিশুর শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে। বিশেষ করে হাঁপানি (এজমা), এলার্জি ও কানে ইনফেকশন হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়।

৭. শিশুর জন্মগত ত্রুটি হতে পারে।

৮. ‘সাডেন ইনফ্যান্ট ডেথ সিন্ড্রোম’ হতে পারে। অর্থাৎ দৃশ্যমান কোন কারন ছাড়াই শিশুর মৃত্যু হতে পারে।

৯. একটোপিক প্রেগন্যান্সি নামক জটিলতা তৈরী হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়।

১০. শিশুর বুদ্ধির বিকাশ বাধাগ্রস্থ হতে পারে। শিশুর আচরণগত সমস্যা এবং শিক্ষাগত ত্রুটিও হতে পারে।

১১. ভবিষ্যতে শিশু স্থূলতার সমস্যায় ভুগতে পারে।

ধূমপানজনিত জটিলতা থেকে বাঁচার উপায়: 

 অতি অবশ্যই ধূমপান পরিত্যাগ করা। পরিবারের কোন সদস্য ধূমপায়ী হলে তাকে বিশেষভাবে কাউন্সেলিং করে ধূমপান ত্যাগ করতে উৎসাহিত করতে হবে। ধূমপান ত্যাগ করতে অনেকে অনেক ধরনের কৌশল অবলম্বন করে। অনেক চেষ্টার পরও অভ্যাস ছাড়তে না পারলে ডাক্তার কিংবা মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেয়া যেতে পারে।

InfotakeBD

View posts by InfotakeBD
InfotakeBD is a information sharing blog, We share information for you. Please visit us and if you want to contribute for this blog please email us infotakebd@gmail.com. Thank you

Leave a Reply

Scroll to top