গর্ভাবস্থায় সর্দি-কাশি প্রতিরোধের ৬টি উপায়

গর্ভাবস্থায় সর্দি-কাশি প্রতিরোধের ৬টি উপায়

গর্ভকালীন সময়টি মা ও অনাগত সন্তান উভয়ের জন্যই বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় মায়ের বিভিন্ন অসুখ-বিসুখ সন্তানের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। গর্ভাবস্থায় হরমোনজনিত পরিবর্তনের কারণে মায়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ফলে মা খুব সহজেই নানা রোগে আক্রান্ত হতে পারে। বিশেষ করে শীতকালীন সর্দি-কাশিতে অনেক মাই ভুগে থাকেন। শীতকালে এমনিতেই প্রায় সবারই সর্দি কাশি হয়। বায়ুবাহিত বলে হাঁচি-কাশির মাধ্যমে গর্ভবতী মাও সহজেই সংক্রমিত হতে পারে।

সাধারণত সর্দি লাগলে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিলেই তা সেরে যায়। কিন্তু ভাইরাসজনিত সর্দি লাগলে গর্ভবতী মায়ের জ্বর হতে পারে। এমনকি ফুসফুসে প্রদাহও হতে পারে। এছাড়া মায়ের শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ হলে শিশুর শারীরিক গঠনেরও ক্ষতি হতে পারে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সর্দি-কাশি এক সপ্তাহের মধ্যেই কোন ওষুধ ছাড়াই নিজে নিজেই ভালো হয়ে যায়। বাচ্চার শরীরের উপর এর কোন প্রভাব পড়ে না।

যদি ঠাণ্ডা লেগেই যায় তাহলে মাকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। পাশাপাশি বেশি বেশি পানি পানকরতে হবে এবং পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। খুব কম ওষুধই গর্ভাবস্থায় নিরাপদ। তাই যেকোন ধরনের ওষুধ গ্রহণের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নিতে হবে। অবশ্য অনেক সময় ওষুধ ছাড়াই ঘরোয়া উপায়ে সর্দি-কাশি নিরাময় সম্ভব। চলুন সর্দি-কাশি নিরাময়ের কিছু ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জেনে নেই-

১. পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে

ঠাণ্ডা লাগা থেকে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই সর্দি-কাশিকে অবহেলা করা যাবে না একেবারেই। ঠাণ্ডা লাগলে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া জরুরি।

২. ফুটন্ত পানির ভাপ নেয়া যেতে পারে

একটি গামলায় ফুটন্ত পানি নিন। তারপর গামলার উপরে মুখ নিয়ে গরম পানির ভাপ টেনে নিন। নাক বন্ধ থাকলে এটি প্রাকৃতিকভাবে সমাধান করবে।

৩. হালকা গরম পানিতে সামান্য লবণ মিশিয়ে গার্গল করা যেতে পারে

গলা খুসখুস করলে গার্গল করুন। এটি খুসখুসে কাশি দূর করার জন্য খুবই কার্যকর পদ্ধতি। হালকা গরম পানিতে সামান্য লবণ মিশিয়ে গার্গল করতে হবে। প্রতিদিন কমপক্ষে দুই থেকে তিনবার গার্গল করলে গলা ব্যথা ও খুসখুসে ভাব কমে যাবে। চাইলে গার্গলের পানিতে লবঙ্গ অথবা আদা কুচি মেশানো যেতে পারে।

৪. আদা চা পান করলে উপকার পাওয়া যায়

সর্দি-কাশি অথবা গলা ব্যথায় আদা চা খুবই কার্যকর। আদা চায়ের নানা রকম ভেষজ গুণ রয়েছে। ফলে এ চা ঠাণ্ডা লাগার অস্বস্তি থেকে দ্রুত মুক্তি দেয়।

৫. মধু খাওয়া যেতে পারে

মধু চটজলদি সর্দি-কাশির উপশম করে। বিশেষ করে সর্দি দূর করতে মধু খেলে খুবই উপকার পাওয়া যায়। চাইলে চায়ের সঙ্গে মিলিয়েও মধু খাওয়া যেতে পারে।এছাড়া লেবু এবং মধু একসঙ্গেও খাওয়া যায়। এতেও ভালো ফল পাওয়া যায়।

কখন ডাক্তারের কাছে যেতে হবে:

১. যদি জ্বর ১০০.৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি থাকে।

২. কাশির সাথে যদি রক্ত যায়।

৩. যদি সবুজাভ বা হলুদ রংয়ের কফ থাকে।

৪. যদি কাশির সাথে শ্বাসকষ্ট ও বুকে ব্যথা থাকে।

৫. নিঃশ্বাসের সাথে যদি শোঁ শোঁ শব্দ হয়।

৬. সর্দি-কাশি যদি এক সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয়

৭. গর্ভবতী মা যদি শারীরিকভাবে অনেক বেশি দুর্বল হয়ে পড়ে

 

প্রতিরোধের উপায়:

১. মাকে পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে,

২. নিয়মিত ভিটামিন সি যুক্ত ফল-মূল খেতে হবে,

৩. মায়ের পর্যাপ্ত ও পরিমিত ঘুম নিশ্চিত করতে হবে,

৪. নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করা যেতে পারে,

৫. যথাসম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে,

৬. আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকতে হবে।

InfotakeBD

View posts by InfotakeBD
InfotakeBD is a information sharing blog, We share information for you. Please visit us and if you want to contribute for this blog please email us infotakebd@gmail.com. Thank you

Leave a Reply

Scroll to top