ধনী বা সম্পদশালী হওয়ার কার্যকর ১০১টি উপায়

ধনী বা সম্পদশালী হওয়ার কার্যকর ১০১টি উপায়

ধনী হতে কে না চায় বলুন কিন্তু এটা তো আর ছেলের হাতের মোয়া নয় যে চাইলেই ধনী হওয়া যাবে। খুব সহজ কৌশলে কিন্তু আপনি, হ্যাঁ আপনিও হয়ে উঠতে পারেন আগের চাইতে ধনী।
টাকা জীবনের সবকিছু নয়, কিন্তু তার পরেও টাকার জন্য বহু মানুষ পাগলপ্রায় হয়ে যায়। তাদের টাকা উপার্জনের ইচ্ছাকে বাস্তব রূপদানের জন্য প্রয়োজন কিছু পদক্ষেপের। এ কাজগুলো সহজ নয়। তবে লেগে থাকলে এতে সফলতা অর্জন করা সম্ভব।

প্রথমে জেন নি ৯ জন ধনী ব্যক্তির মতামত

বিল গেটস = বিনিয়োগ: অনেকেই আমরা রোজগার শুরু করার অনেক পর বিনিয়োগ শুরু করি। বেশি লাভ পেতে অল্প বয়স থেকে বিনিযোগ শুরু করুন। যত আগে থেকে শুরু করবেন তত বেশি রিটার্ন পাবেন।

ওয়ারেন বাফে = অটোমেটিক সঞ্চয়: খরচ কমানোর সবচেয়ে ভাল উপায় এটা। ব্যাঙ্ক চেকিং অ্যাকাউন্টের সঙ্গে রেকারিং সেভিংস অ্যাকাউন্টে অটোমেটিক লিঙ্ক করিয়ে রাখুন। যাতে প্রতি মাসে নিজে থেকেই সঞ্চয় হয়।

স্টিভ জবস = অবদান বাড়ান: অল্প বিনিয়োগ দিয়ে শুরু করলেও প্রতি বছর অন্তত এক শতাংশ করে বাড়াতে থাকুন। প্রতি বছর বেতন যেমন বাড়ে তেমনই বিনিয়োগের পরিমাণও বাড়ান। আয়ের অন্তত ২০ শতাংশ বিনিয়োগে লাগান।

মার্ক জুকারবার্গ = ক্রেডিট কার্ড ব্যালান্স: বেশি সুদযুক্ত ঋণ বয়ে চললে কখনই ধনী হতে পারবেন না। তাই প্রতি মাসে ন্যূনতম বিল নয়, বেশি করে টাকা দিয়ে তাড়াতাড়ি ঋণ শোধ করুন।

এলিজাবেথ হোমস = মিতব্যয়: জীবনে খরচের ব্যাপারে সচেতন হন। পৃথিবীর ধনী ব্যক্তিই বেশ সাধারণ ভাবেই জীবন কাটিয়েছেন এক সময়। কিপটেমি নয়, তবে জীবনের অপ্রয়োজনীয় খরচ বাদ দিন।

মুকেশ অম্বানি = লোভ: লেটেস্ট মডেল, হাল ফ্যাশনের জিনিস কিনতে সকলেই চান। কিন্তু লোভ সম্বরণ করাও প্রয়োজন। খরচ করার সময় ভাবুন কোনটা আপনার প্রয়োজন, আর কোনটা শুধুই লোভে পড়ে বা দেখনদারির জন্য করছেন।

লক্ষ্মী মিত্তল = আয়ের উত্স: ধনী, সফল ব্যক্তিরা কখনই আয় বা বিনিয়োগের ব্যপারে একটা উত্‌সের উপর ভরসা করেন না। বিভিন্ন দিকে নিজেদে পোর্টফোলিও বাড়ান। অল্প বয়স থেকে আয়, বিনিয়োগ, সঞ্চয়ের একাধিক উত্স তৈরি করুন।

রতন টাটা = রিসার্চ: সফল বিনিয়োগকারীরা বাজারের ওঠানামা, বিভিন্ন বিনিয়োগ, সঞ্চয় পরিকল্পনা নিয়ে যথেষ্ট গবেষণা করেন। হুটহাট সিদ্ধান্ত না নিয়ে এই বিষয়ে নিজের জ্ঞান বাড়ান।

 

সুধা মূর্তি = দান: ধনী ব্যক্তিরা সকলেই দান, ধ্যান করেন। তাঁরা বিশ্বাস করেন দান করলে সম্পদ বাড়ে। আয়ের ১০ শতাংশ দান করুন। এতে আপনার আয়ও বাড়বে।

 

টাকার মোহ বাদ দিন

(১) এ বিষয়টি অর্থ উপার্জনের ইচ্ছের সঙ্গে অনেকটা সাংঘর্ষিক মনে হতে পারে। কিন্তু বাস্তবে শুধু টাকার দিকে তাকিয়ে থাকলে তা আপনাকে ‘অর্থলোভী’ উপাধিতে ভূষিত করবে। তার বদলে আপনাকে অর্থ উপার্জনের কাজ করতে হবে, যার ফসল হিসেবে আসবে অর্থ। অর্থাৎ সরাসরি অর্থলিপ্সু হওয়া যাবে না কোনোভাবেই।

যাদের সহায়তা করছেন, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন

(২) ধনী ও সফল ব্যক্তিদের খুবই সহায়তাকারী হিসেবে দেখা যায়। তারা সব সময় মানুষকে নানাভাবে সহায়তা করে এবং সহায়তাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরাই আবার তাদের ধনী হয়ে উঠতে সাহায্য করেন। এ কারণে আপনি যাদের সহায়তা করছেন, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন। তারাই একসময় আপনাকে ধনী ও সফল হতে সাহায্য করবে।

কোটি টাকা উপার্জনের বদলে কোটি মানুষকে সাহায্যের কথা ভাবুন

(৩) আপনার যখন অল্প কয়েকজন গ্রাহক বা সেবাগ্রহিতা রয়েছেন তখন তাদের মাধ্যমে কোটি টাকা উপার্জন করার চিন্তা বাদ দিন। তার বদলে চিন্তা করুন, কিভাবে এ গ্রাহকদের ভালো সেবা দেওয়া যায়। এতে আপনার গ্রাহক সংখ্যা বাড়বে আর তাহলেই আপনার অর্থ উপার্জনের পথ সুগম হবে।

‘টাকা’ বাড়ানোর বদলে বাড়িয়ে নিন টাকা বাড়ানোর ‘পন্থা’

(৪) সরাসরি টাকা বাড়ানোর চেষ্টা খুব একটা কাজ করে না। কিন্তু তার বদলে টাকা বাড়ানোর নানা পন্থার ব্যবস্থা করা হলে তা এ লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হবে। উপার্জনের জন্য প্রতিনিয়ত নতুন নতুন পন্থার খোঁজ করা ও এই পন্থাগুলোকে সঠিকভাবে ব্যবহার করা হলেই এ পদ্ধতি কাজ করবে।

 

ভালোভাবে একটি কাজ করুন

 

(৫) আপনি যে কাজটিতে অন্যের তুলনায় ভালো, সে কাজটিতে দৃষ্টি নিবদ্ধ করুন। এরপর সে দক্ষতা ব্যবহার করে অর্থ উপার্জনের পথ বের করুন। আর পাশাপাশি এ দক্ষতাকেও বাড়িয়ে চলুন। দেখা গেছে, আর্থিকভাবে সফল ব্যক্তিদের অন্তত এক দিকে অন্যদের চেয়ে ভালো দক্ষতা রয়েছে। এটা ব্যবহার করেই তাদের অনেকে উন্নতি করেছেন।

কোনো এক বিষয়ে বিশ্বসেরা ১০ জনের তালিকা করুন

(৬) আপনার আগ্রহের কোনো একটি বিষয়ে বিশ্বের সেরা ১০ জনের তালিকা করুন। তারা হতে পারেন সঙ্গীত শিল্পী, ব্যাংকার কিংবা অন্য কোনো পেশার মানুষ। তাদের সাফল্যের পেছনের কাহিনী অনুসন্ধান করুন। সফল ব্যক্তিদের শুধু সম্মান করলেই হবে না, তাদের সাফল্যের পেছনের কাহিনীও জানতে হবে। এরপর সে কাহিনী থেকে নেওয়া শিক্ষা নিজের জীবনে কাজে লাগাতে হবে।

 

উন্নতি পর্যবেক্ষণ করুন

 

(৭) ধনী হওয়ার যদি সংকল্প করেই থাকেন, তাহলে মাঝপথে গিয়ে গন্তব্যের কথা ভুলে গেলে চলবে না। তা পথ যথই দীর্ঘ হোক না কেন। এ কারণে প্রতিনিয়ত আপনার উন্নতি পর্যবেক্ষণ করতে হবে। আপাত দৃষ্টিতে এ পথচলা খুবই ধীর মনে হবে। কিন্তু মনে রাখবেন, হাজার মাইলের পথ চলা একটি পদক্ষেপ দিয়েই শুরু হয়। আর এখানে প্রতিটি পদক্ষেপই অতি মূল্যবান।


রুটিন তৈরি করুন, সে অনুযায়ী কাজ করুন

(৮) ধনী হওয়ার জন্য আপনার নির্দিষ্ট একটি রুটিন তৈরি করতে হবে এবং সে রুটিন অনুযায়ী চলতে হবে। যেমন ধরুন আপনি ২০০ পৃ্ষ্ঠার একটি বই লিখতে চান। তাহলে এ বইয়ের জন্য প্রতিদিন চারটি করে পাতা লেখা হতে পারে আপনার দৈনন্দিন রুটিনের অংশ। অথবা কোনো ব্যবসার কাজে আপনি যদি সফল হতে চান তাহলে প্রতিদিন ১০০ ক্রেতার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের লক্ষ্য নির্ধারণ করতে পারেন। এটি সে ক্ষেত্রে হতে পারে আপনার রুটিনের অংশ।

 

ঝুঁকি নিন, ভুল করুন, নিজের ওপর বিশ্বাস রাখুন।

(৯) অধিকাংশ মানুষ বিবেচনা না করে অথবা সাধ্যের অতিরিক্ত ঝুঁকি নিয়ে ফেলে, যা তাদের নেয়া উচিত নয়। তার বদলে স্মার্ট ঝুঁকি নিতে হবে,যা বাস্তবে পূরণ করা সম্ভব। নিজের ওপর বিশ্বাস রেখে সামনে এগিয়ে যান। ভুল হলেও তা স্বাভাবিক। আঘাত না পেয়ে কেউ সামনে এগোতে পারে না।

 

অনেক ত্যাগ করে সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করুন।

(১০) জীবনের পথে চলতে গেলে ত্যাগ স্বীকার করতেই হবে। কিছু পেতে হলে কিছু হারাতে হয়- এই নীতি সামনে রেখে লক্ষ্য অর্জনের দিকে এগোতে হবে। আর সর্বশক্তি ও নিজের সবটুকু দিয়ে কাজ করতে হবে।

শূন্য থেকে শুরু করে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠুন।

(১১) বহু সফল ব্যক্তি খালি হাতেই তাদের কাজ শুরু করেছিলেন। স্টারবাকস প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও হাওয়ার্ড স্কুলজ ও গোল্ডম্যান সাক্স-এর সিইও লয়েড ব্ল্যাংকফেইন বড় হয়েছেন এভাবেই। প্রতিযোগিতা ও দুর্ভাগ্য তৈরি করে বড় নেতা।

 

বড় লক্ষ্য নির্ধারণ করুন।

(১২) অনেকেই লক্ষ্য নির্ধারণে বুদ্ধির পরিচয় দেয় না। এ কারণে তারা লক্ষ্যমাত্রাই অল্প করে ধরে রাখে। ফলে মূল উপার্জন এর চেয়েও কমে যায়। তাই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণে বিচক্ষণতার পরিচয় দিন, এক কোটির জায়গায় টার্গেট করুন ১০ কোটি টাকার। এ ক্ষেত্রে পুরো টাকাটা না পেলেও এর কাছাকাছি অন্তত পৌঁছাতে পারবে।

 

নিজের ভাগ্য নিজেই তৈরি করুন।

(১৩) এটা বলা হয় যে, সুযোগ যখন প্রস্তুতির সঙ্গে মিলে যায় তখন সৌভাগ্য আসে। এ কারণে অপ্রয়োজনীয় কাজ বাদ দিয়ে বাস্তব জগতের সফল মানুষদের সঙ্গে পরিচিত হতে হবে এবং নিজের ভাগ্যকে নিজেই গড়ে নিতে হবে।

সিলিকন ভ্যালি অনুসরণ করুন।

(১৪) যুক্তরাষ্ট্রের হাইটেক ইন্ডাস্ট্রির কেন্দ্র সিলিকন ভ্যালি বহু মানুষের ভাগ্য ফিরিয়েছে। শুধু প্রধান নির্বাহীরাই নয়, বহু চাকরিজীবীও এখানে খুব ভালো আছেন। এর কারণ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো হয়ে উঠেছে বহু মানুষের সমৃদ্ধির সোপান।

লাভ ছাড়া ঋণ নয়

(১৫) সরাসরি আর্থিক লাভ হয় না, এমন ঋণ বাদ দিন। ঋণ নিয়ে একটি গাড়ি কিনতে হলেও আপনার চিন্তা করতে হবে, এ থেকে কী লাভ হবে? যদি ব্যবসাক্ষেত্রে বড় অঙ্কের আর্থিক লাভ আনতে পারে গাড়িটি, তা হলেই তা কেনা যেতে পারে।

 

যা ভালো লাগে, তাই করুন
(১৬) আপনার নিজের ভালোলাগার কাজটি করুন। আপনি যদি নিজের আগ্রহের বিষয়ে কাজ করেন তাহলে গ্রাহকরাও আপনাকে খুঁজে বের করবে। আর এভাবে টাকাও খুঁজে বের করবে আপনাকে।

 

কাজে বৈচিত্র্য আনুন
(১৭) বহু ধরনের ধারণা আনুন নিজের কাজে। এতে অনেক কষ্ট ও সময় ব্যয় হতে পারে। তবে প্রাথমিকভাবে কষ্ট হলেও ভবিষ্যতে এর সুফল অবশ্যই পাবেন।

 

টাকাকে অগ্রাধিকার দিন
(১৮) বহু মানুষই আর্থিক স্বাধীনতা আশা করে কিন্তু একে বাস্তবে অগ্রাধিকার দেয় না। যদি বাস্তবেই টাকাকে ভালোবাসেন তা হলে সে আপনার কাছে আসবেই। তবে এ জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে হবে।

 

গুরু খুঁজে নিন
(১৯) মধ্যবিত্ত সমাজে ধনী হওয়ার কলাকৌশল নিজে নিজে রপ্ত করা অনেক কঠিন। এ ক্ষেত্রে একজন ধনী ব্যক্তির আন্তরিক পরামর্শ প্রয়োজন। এ কাজে উপযুক্ত ব্যক্তি খুঁজে নিন।

 

অবিলম্বে উপার্জন শুরু করুন
(২০) ধনী হতে চাইলে অল্প বয়স থেকেই উপার্জন করা শুরু উচিত। কেননা, যত বেশী বয়সে উপার্জন শুরু হবে ততই উপার্জন করার বয়স কম পাওয়া যাবে। তাছাড়া, বেশী বয়সে উপার্জন শুরু করলে, তখন আপনার পিছু টান থাকবে অনেক। আর আপনি টগবগে তরুণদের মতো কাজ ও তেমন করতে পারবেন না।

সর্বাত্মক চেষ্টা করুন।
(২১) সর্বাত্মক চেষ্টাই আপনাকে পৌঁছে দেবে লক্ষ্যে। আপনি যখন কিছু চাইবেন, প্রকৃতি আপনাকে তা পাইয়ে দিতে তোলজোড় শুরু করে। সুতরাং চেষ্টা করুন, পেয়ে যাবেন।
বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে আপনি সহজেই ধনী হতে পারবেন না। এ জন্য প্রথমেই যে কাজটি করতে হবে তা হলো টাকা উপার্জন বাড়ানোর জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা। আর এতে যে পথগুলো সফল হবে সে পথে উপার্জন বাড়ানোর জন্য ক্রমাগত চেষ্টা করতে হবে।

লোক দেখানো বন্ধ করুন
(২২) সামান্য কিছু টাকা হলেই তা দিয়ে বিভিন্ন বিলাসদ্রব্য কেনা অভ্যাস বন্ধ করুন। পর্যাপ্ত টাকা না আসা পর্যন্ত দামি মোবাইল ফোন, ঘড়ি, গাড়ি ইত্যাদির পেছনে এক পয়সাও ব্যয় করা যাবে না। অর্থ ব্যয় করার বদলে তা জমিয়ে নতুন করে অর্থ উপার্জনের কাজে লাগান।

বিনিয়োগ ক্ষেত্র বের করুন
(২৩) আপনার টাকা জমানোর মূল উদ্দেশ্য হবে তা দিয়ে যুৎসই বিনিয়োগ করা। আপনার যে টাকাটাই জমবে তাই বিনিয়োগ করার পথ খুঁজুন।

বিশ্রাম বাদ দিন
(২৪) মানুষের মতো টাকা ঘুমায় না। এর নেই সাপ্তাহিক ছুটির দিন কিংবা অন্য কোনো বিশেষ দিবস। সারা বছর একটানা কাজ করে যায় টাকা। আর তাই টাকাকে ধরতে হলে আপনারও বিশ্রামের কথা ভুলে যেতে হবে। শুধু যে বিশ্রামটুকু না করলেই নয়, তাই করতে হবে।

গরিব অবস্থাকে ভয় করুন
(২৫) অনেক ধনী মানুষই অতীতে গরিব ছিলেন। বিল গেটস বলেন, ‘গরিব অবস্থায় জন্মগ্রহণ করা আপনার ভুল নয়। কিন্তু গরিব অবস্থায় মৃত্যুবরণ করাটা আপনার ভুল।’ গরিব হওয়াকে ভয় পাওয়া দারিদ্র্যের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে বহু ব্যক্তিকে উৎসাহিত করেছে।

বড় লক্ষ্য নির্ধারণ করুন
(২৬) অনেকেই লক্ষ্য নির্ধারণে বিচক্ষণতার পরিচয় দেয় না। এ কারণে তারা লক্ষ্যমাত্রাই অল্প করে ধরে রাখে। ফলে মূল উপার্জন এর চেয়েও কমে যায়। তাই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণে বিচক্ষণতার পরিচয় দিন, এক কোটির জায়গায় টার্গেট করুন ১০ কোটি টাকার। এ ক্ষেত্রে পুরো টাকাটা না পেলেও এর কাছাকাছি অন্তত পৌঁছাতে পারবেন।

তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠা
(২৭) সকালে ঘুম থেকে ওঠা স্বাস্থ্যসম্মত। বিশেষজ্ঞরা বলেন, সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠলে স্বাস্থ্যবান, জ্ঞানী আর ধনী হওয়া যায়। বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিনের ভাষায়, আরলি টু বেড অ্যান্ড আরলি টু রাইজ, মেকস অ্যা ম্যান হেলদি, ওয়েলদি অ্যান্ড ওয়াইজ।

বিশ্বে যারা ধনী তারা এই পন্থা অবলম্বন করেন, যা আপনি করেন না। তারা সকাল সকাল ওঠেই কাজে বেরিয়ে পড়েন। অর্থ আয়ের নেশায় খুঁজে পান বেশি সময়। তাই ধনী হতে চাইলে আপনারও দরকার অর্থ আয়ে সকাল সকাল ঘুব থেকে ওঠে কাজে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করা।

অতিরিক্ত কাজ করছেন-এমন ধারণা ত্যাগ করা
(২৮) আপনি অতিরিক্ত কাজ করছেন এই ধারণা আপনার শত্রু হয়ে ওঠতে পারে। সব কাজ করছেন এবং করতে হবে- এমন ধারণা কাজে গড়িমসি ভাব আনতে পারে। যা আপনার ধনী হওয়ার পথে অন্যতম বাধা। তাই ধনী হতে চাইলে এ অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। জীবনের পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে সম্মুখ পানে।

শুরু করা
(২৯) কোনো কিছু না করার চেয়ে কিছু শুরু করাটা ভালো। তাই দ্রুত ব্যবসায় নেমে পড়তে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে সমস্যাও আছে। ছোট কিছু দিয়ে শুরু করলে তার প্রাথমিক ফলও ছোট হবে। তাই বলে ঘাবড়ে গেলে চলবে না। ধৈর্য্য ধরতে হবে। দেখবেন একদিন সাফল্য আসবেই।

মিতব্যয়ী হওয়া
(৩০) অকারণেই অর্থ অপচয় করা থেকে বিরত থাকতে হবে। হতে হবে মিতব্যয়ী। আপনি যদি আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি করেন, সেটা হবে সম্পদ অর্জনের অন্তরায়। সুতরাং মাসিক খরচ কোথায় কত করলেন সেটা লক্ষ্য করতে হবে। খরচ কমানোর উপায় বের করে বাস্তবসম্মত বাজেট তৈরি করতে হবে।
তাই ক্রেডিট কার্ড বয়ে বেড়ানোর মানসিকতা পরিহার করতে হবে। যেখানে সেখানে অর্থ ব্যয় থেকে থাকতে হবে বিরত।

গরীবের মতো জীবনযাপন করা
(৩১) আমাদের চারপাশে অনেকেই আছে যারা ধনী কিন্তু তাদের চলাফেরায় সেটা বোঝা যায় না। তারা শুধু টাকা সঞ্চয় করেন। মানুষের সামনে বড়লোকী ভাব দেখান না। এটার উপকারিতা হচ্ছে আপনাকে কম খরচ করাতে শেখাবে।

প্রলোভন এড়িয়ে চলা
(৩২) অর্থ আয় করতে হবে, অর্থ সঞ্চয় করতে হবে। তার মানে এটা নয় যে আপনাকে কারো প্রলোভন জালে জড়াতে হবে। কারণ অতিরিক্ত প্রলোভন ভালো নয়। আপনার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে এমন প্রলোভন সর্বদাই এড়িয়ে চলুন। প্রলোভনকে তৈরি করুন অর্থ আয়ের মাধ্যম হিসেবে।

শিক্ষিত হওয়া
(৩৩) ধনী হওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ উপায় হচ্ছে শিক্ষিত হওয়া। শিক্ষা ছাড়া আপনি কোথাও উন্নতি করতে পারবেন না। বিশেষ করে একজন সফল বিনিয়োগকারী হিসেবে নিজেকে গড়তে দরকার অর্থনৈতিক ধারণা। তাই বেশি করে জানতে হবে দৈনন্দিন খবর, অর্থনৈতিক খবর।

অর্থ তৈরিতে অর্থ ব্যয় করা
(৩৪) অর্থ ব্যয় করুন, বিনিয়োগ করুন। তবে তা শুধু ব্যয় নয়, এর মাধ্যমে কিভাবে সঞ্চয় বাড়ানো যায়; নতুন করে অর্থ তৈরি করা যায় সে বিষয়ে ভাবুন।

বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অর্থকে দুই ভাগে ভাগ করা
(৩৫) বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কখনই এক ঝুড়িতে সব অর্থকে ঢেলে ফেলবেন না। বিনিয়োগ করার আগে অবশ্যই হাতে কিছু সঞ্চয় রেখে দিতে হবে। এটা আপনার বিনিয়োগকৃত অর্থকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাবে।

মাত্রাতিরিক্ত খরুচে স্বভাব
(৩৬) আপনার যদি সাধ্যের বাইরে বেহিসেবি খরচ করার বদভ্যাস থাকে তাহলে আপনার জেনে ভালো লাগবে যে, পৃথিবীতে আপনি একাই নন। একটি জরিপের তথ্য অনুযায়ী সারা বিশ্বে প্রায় ৫২ শতাংশ মানুষের মাত্রাতিরিক্ত খরচের বদভ্যাস আছে।

ইচ্ছে হলেই সঞ্চয় ভেঙ্গে বেহিসেবি খরচ করা বন্ধ করা উচিত। প্রতিমাসে আপনার উপার্জনের প্রতিটি কণা উড়িয়ে দেওয়া আর আপনার ধনী হওয়ার বাস্তবতার মাঝে বিস্তর ফারাক আছে। আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে আপনার সারা মাসের উপার্জন কোথায় খরচ হচ্ছে। কোথায় একটু সঞ্চয় করা যায় সে চেষ্টা করুন। হোক না অল্প, তাও চেষ্টা করুন।

আপনি অবশ্যই আপনার সারা মাসের খরচের জন্য একটি বাজেট বানাবেন। আপনার অবসর জীবন অথবা আপদকালীন বিপদের কথা ভেবে কিছু সঞ্চয় করার চেষ্টা করুন। আখেরে লাভ হবে।

পর্যাপ্ত সঞ্চয় না থাকা
(৩৭) অসঞ্চয়ীদের আড্ডায় স্বাগতম! সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গিয়েছে, মাত্র ৪ শতাংশ আমেরিকান মাস শেষে একটি ক্ষুদ্র সঞ্চয় করার চেষ্টা করার চেষ্টা করে। আপনি যদি ভবিষ্যতে নিজেকে একজন সচ্ছল ব্যক্তি হিসেবে দেখতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই সঞ্চয়ের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।

সঞ্চয় তো করবেন, কিন্তু শুরুটা কিভাবে হতে পারে? আপনার পরিবারের যে কেউ যে কোন সময়ে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। তাঁদের কথা মনে রেখে আজই একটি ইমার্জেন্সি ফান্ড তৈরি করে ফেলুন। যখন আপনার ইমার্জেন্সি ফান্ড ভালো একটা আকার পাবে তখন এটা রেখে দিয়ে আপনার কলেজের টিউশন ফি অথবা আপনার পছন্দের কোন জিনিস কেনার জন্য আরেকটি ফান্ড করতে পারেন। এইভাবেই শুরু হোক সঞ্চয়ের পথে পথ চলা।

অতিরিক্ত ঋণ
(৩৮) অতিরিক্ত ঋণের বোঝা আপনার ধনী হওয়ার পিছনে একটি বড় বাধা। কিছু কিছু ঋণ অর্থনৈতিক সাফল্যের পিছনে ভূমিকা রাখে, যেমন আপনি কোন রিয়েল এস্টেট অথবা নতুন কোন ব্যবসায় বিনিয়োগ করলেন –এটা আপনার জন্য লাভজনক হতেও পারে। কিন্তু আপনি চড়া সুদে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে আপনার পছন্দসই জিনিস কিনলেন আর অপরদিকে ব্যাংকে আপনার খাতায় লাল ফিগার বাড়তে লাগলো – এটা আপনার ধনী হওয়ার ক্ষেত্রে একটি বড় অন্তরায়।

পরিকল্পনা শূন্য জীবন
(৩৯) কোন ধরণের সুনিশ্চিত পরিকল্পনা ছাড়া ধনী হওয়ার চিন্তা করা আর বামুন হয়ে আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখা অনেকটা একইরকম। কথায় আছে, যারা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ তারা মূলত পরিকল্পনা করতেও ব্যর্থ। কিভাবে খরচ করবেন বা সঞ্চয় করবেন পরিকল্পনা করুন। হয়তো প্রথমেই পেরে উঠবেন না। অভ্যস্ত হতে নিজেকে খানিকটা সময় দিন।

 

ইমার্জেন্সি ফান্ড না থাকা
(৪০) ইমার্জেন্সি ফান্ডের কথা আগেই বলেছিলাম। বিশেষজ্ঞরা বলেন, অনাগত বিপদের কথা ভেবে অবশ্যই আপনার উচিত অন্তত ৬ মাসের রোজগার জমিয়ে রাখা। আমাদের জীবনটা একটা অনিশ্চয়তার খেলা। আপনার কাছে এমন কোন নিশ্চয়তা নেই যে, আপনার হাশিখুশি মুহূর্তগুলো কখন যে শোকে পরিণত হবে তা আপনি নিশ্চিতভাবে বলতে পারবেন।

অভিযোগের ফিরিস্তি
(৪১) মাসে অল্প কয়েকটা টাকা কামাই, খরচের বহর দিন দিন বাড়ছে, আমার জীবনে আর কি হবে, দেনা পরিশোধ করা এ জীবনে আর সম্ভব না – সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত আমরা এই অভিযোগগুলো করি। এটা ঠিক যে, পুরানো অভ্যাস দূর করা অনেক কঠিন। তবে কোন কিছুই পরিবর্তন হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি নিজে না পরিবর্তন করার চেষ্টা করছেন। অনুযোগ আর কারণ দর্শানো এই বেলা বাদ দিন। এর পরিবর্তে বাজে অভ্যাসগুলোর জন্য নিজেকেই দায়ি করুন এবং কিভাবে নিজেকে পরিবর্তন করা যায় তা নিয়ে চিন্তা করুন। লেগে থাকলে আপনি অবশ্যই পারবেন।

আগামিকালের চিন্তা পরে
(৪২) উহু, এটা কোন মজার বিষয় নয়। আপনাকে অবশ্যই আপনার অবসরকালিন জীবনের কথা ভাবতে হবে। বাজারের নতুন আইফোন বা ট্যাব কেনার জন্য আপনি যে ধার করেন দয়া করে এই বদভ্যাসগুলো আপনার অবসর জীবনের দিকে তাকিয়ে এখনই বাদ দিন। হ্যাঁ, অবশ্যই আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী আপনার প্রয়োজনীয় জিনিশ কিনবেন, কিন্তু টিনএজারদের মত ফালতু আবেগে জড়াবেন না। তো ঝেড়ে ফেলুন এখনই ‘কিনে ফেলব’এই মানসিকতা। একটু সঞ্চয় করুন।আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন, আপনিই হচ্ছেন আগামি দিনের ধনী!

সব সোনার ডিম এক বাক্সে নয়
(৪৩) আপনার সমস্ত উপার্জন এক খাতে বিনিয়োগ করে হয়তো বা আপনি লাভবান হলেও হতে পারেন। যেমন আপনি আপনার সমস্ত সঞ্চয় শেয়ারের পিছনে বিনিয়োগ করলেন, কে জানে হয়তো বা ভাগ্য খুলেও যেতে পারে। কিন্তু জেনে রাখুন এটা কখনোই ধনী হওয়ার রাস্তা হতে পারে না।
আপনার সমস্ত উপার্জন এক জায়গায় বিনিয়োগ করা আপনাকে মাত্রাতিরিক্ত ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে। আপনি অল্প অল্প করে বিভিন্ন খাতে আপনার সারা জীবনের উপার্জন বিনিয়োগ করুন। খারাপ কিছু হলে অন্তত ভেসে থাকার জন্য খড়কুটো পাবেন!

দেরিতে শুরু করা
(৪৪) সময় এগিয়েই যাবে। কিন্তু আপনি বসে থাকবেন কী না সেটাই দেখার বিষয়। আপনার ইনকাম কম হলে আজ থেকেই অল্প অল্প করে জমানো শুরু করুন। ঋণ থাকলে আজ থেকেই শোধ করার জন্য জমাতে থাকুন। যা করবেন, আজ থেকেই করুন।

শুরু হোক আজ থেকেই
(৪৫) আপনিও হয়তো বা সাধারণ আর দশটা মানুষের মত। যারা বিশ্বাস করে, কেউ অথবা কোন কিছু আপনাকে আসন্ন বিপদ থেকে উদ্ধার করবে। এটা ঠিক, যে কোন সময় আপনার ভাগ্য খুলে যেতে পারে, হঠাত করে কর্পোরেট হাউজে একটা জব পেয়ে গেলেন, শেয়ারে চড়া লাভ হলো কিংবা উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পদ অথবা লটারিতে জিতে গেলেন লক্ষ লক্ষ টাকা – যাই হোক যে কোন সময় আপনার ভাগ্যের চাকা ঘুরে যেতে পারে, কিন্তু একটা কথা জেনে রাখুন আপনি যদি সত্যি নিজেকে একজন সচ্ছল মানুষ হিসেবে দেখতে চান, আপনাকে হঠাত করে সম্পদ লাভের স্বপ্ন ঝেড়ে ফেলতে হবে। যা করতে হবে আজ থেকেই করতে হবে, এখন থেকেই করতে হবে।
এটা ঠিক আমাদের জীবন খুবই অনিশ্চিত। কেউ জানে না কী হবে আর কী হবে না। সবার জীবনেই ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে, তাহলে আজকের দিনের আপনি কেন ‘আপনার জীবনে কী উন্নতি সাধন করতে পারবেন’ সে ব্যাপারে নজর দিচ্ছেন না?
একটা ব্যাপার আপনার জেনে ভালো লাগবে যে, আপনি কিন্তু এখনই ধনী।এই কথাটা নিয়ে একটু চিন্তা করুন।আপনাকে কেউ যদি বলে আপনার একটা হাতের বিনিময়ে আপনাকে ১০ লক্ষ টাকা দিবে, আপনি কি আপনার হাত দিয়ে দিবেন? আপনার মাথায় কি এই চিন্তা আসবে যে, আমার তো দুইটি হাত আছে,একটি গেলে সমস্যা কি? উত্তর ‘না’।
শারীরিক সুস্থতা আর ধনী হওয়া দুটো এক জিনিশ নয়।আপনি যখন একটু সচ্ছলতার জন্য উদয়স্ত পরিশ্রম করেন তখন এই কথাগুলো নিয়ে চিন্তা করুন। আপনার দুটো হাত আছে। আপনি শারীরিক ভাবে সুস্থ।

বাজেট তৈরি করুন
(৪৬) পুরো মাসের, যদি সম্ভব হয় পুরো বছরের আয়-ব্যয়ের আনুমানিক হিসাবটা মাস কিংবা বছরের শুরুতেই করে ফেলুন। আপনার যা যা কিনতে ইচ্ছা করে তার লিস্ট নয় বরং লিখে ফেলুন যা যা আপনার একান্তই কেনা দরকার। প্রথম মাসের বাজেটের সঙ্গে মিলিয়ে দ্বিতীয় মাসের বাজেটটা করুন। এতে আগের মাসের ভুলভ্রান্তি শুধরে নেওয়া যাবে।

সঞ্চয় করুন
(৪৭) আপনার আয় যা-ই হোক না কেন এমনভাবে ব্যয় করুন যাতে মাস শেষে কিছু না কিছু সঞ্চয় থাকে। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন মাসিক কামাইয়ের ১০-১৫ শতাংশ টাকা সঞ্চয়ের জন্য। এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয় মিলেই এক সময় বড় একটা অঙ্ক হয়ে দাঁড়াবে। এটাই হবে আপনার ধনী হওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।

ইনভেস্ট করুন বুঝেশুনে
(৪৮) অন্যের কথা শুনেই হুট করে কোনো কিছুতে টাকা ইনভেস্ট করে ফেলবেন না। কমপক্ষে তিনজন ব্যক্তি বা তিনটি স্থান থেকে যাচাই করুন, আজ থেকে ১০ বছর পরে ব্যাপারটা কী দাঁড়াবে_ এসব কিছু বিচার-বিবেচনা করে তবেই ইনভেস্ট করুন। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে হেলথ, লাইফ বা মূল্যবান জিনিসপত্রের ইন্স্যুরেন্স করুন। বিভিন্ন লাভজনক স্কিমের খবর রাখুন।

পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বসুন
(৪৯) আপনাকে যদি পরিবারের ব্যয় বহন করতে হয় তবে অন্তত মাসে একবার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বসুন। সংসারের আয়-ব্যয়ের হিসাব সম্পর্কে সবাইকে কিছুটা ধারণা দিন। পরিবারের ছোটদের সঠিক নির্দেশনা দিন কোথায় কীভাবে ব্যয় করা উচিত। সবার পরামর্শ এবং সহযোগিতাই পারে আপনাকে ধনী হওয়ার পথে এগিয়ে নিতে।

ছাঁটাই-বাছাই করুন
(৫০) নিজের এবং সংসারের অপ্রয়োজনীয় খরচগুলো চিহ্নিত করুন। তারপর সেগুলো বাদ দিয়ে দিন। যেসব প্রয়োজনীয় খাতে বেশি খরচ হচ্ছে সেসব ক্ষেত্রে খরচ কীভাবে কমানো যায় পরিকল্পনা করুন। যেমন_ অসচেতনার কারণে অনেক সময় বিদ্যুৎ বিল অনেক বেড়ে যায়, একটু সচেতন হলেই এ খাতে খরচ কমিয়ে আনা যায় অনেকাংশে। সঞ্চয় করা যায় অনেকখানি।

দূরদর্শী হোন
(৫১) দশ, পনেরো বা বিশ বছর পর পরিবারের সদস্যদের পড়াশোনা, বিয়ে এবং অসুস্থতার কথা মাথায় রেখে পরিকল্পনা করুন। প্রত্যেকটা খাতের জন্য কিছু না কিছু সঞ্চয় করার চেষ্টা করুন। এতে হঠাৎ প্রয়োজনে আপনাকে অস্থির হতে হবে না, কিংবা জমানো অর্থ খরচ করে পথে বসতে হবে না।

পরিশ্রমী হোন
(৫২) শুধু ইচ্ছা এবং সুযোগ থাকলেই হয় না। ধনী হওয়ার জন্য চাই কঠোর পরিশ্রম। জীবনের লক্ষ্য স্থির করে তবেই সে লক্ষ্যে পেঁৗছার জন্য পরিশ্রম করতে হবে। ধনী হওয়াটা যদি আপনার লক্ষ্য হয়, তাহলে পরিশ্রম করে অর্থ উপার্জন করুন। এবং সে অর্থ যেন সঠিকভাবে সঞ্চিত হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন।

(৫৩) ধনীরাই পথ দেখালেন ধনী হওয়ার
১. পরিশ্রমের অর্থ যাবতীয় সবকিছু। প্রত্যেক ধনী তার সফলতার পেছনে পরিশ্রমকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
২. শিক্ষার ভূমিকাও অস্বীকার করা যায় না। এখানে সাধারণ ও বিশেষ শিক্ষার মাঝে পার্থক্য না করা গেলেও পরিবেশ ও পরিস্থিতি থেকে ক্রমাগত শিক্ষাগ্রহণকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন ধনীরা।
৩. ঝুঁকি হলো পুরস্কারের মাতৃগর্ভ। অংশগ্রহণকারী ধনীদের অর্ধেকের বেশি ঝুঁকিকে সফলতার অন্যতম শর্ত বলে মত দিয়েছেন। তবে এই ঝুঁকি অবশ্যই বুদ্ধিমত্তাপ্রসূত হতে হবে। বোকার মতো ঝুঁকি নিলেই চলবে না।
৪. যা উপার্জন করছেন তাকে ধরে রাখতে মিতব্যয়ী হতে হবে। যদিও ঝুঁকি গ্রহণ ও মিতব্যয়ীতার মধ্যে অনেকে বিপরীত ধর্ম দেখতে পারেন কিন্তু দুটোকেই সঙ্গী করে নিতে হবে।
৫. ভাগ্যের সহায়তা বড় বিষয়। সঠিক সময় সঠিক বিষয়ে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাগ্যের সহায়তা প্রয়োজন। এর মাধ্যমে নিজের ভাগ্যকে সুপ্রসন্ন করে তোলা যায়।
৬. যারা নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন তাদের এক-তৃতীয়াংশ উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া অর্থকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সহায়ক বলে মনে করেছেন। অর্থাৎ, তাদের দুই-তৃতীয়াংশ নিজের চেষ্টায় ধনী হয়ে উঠেছেন।

দৈনিক লক্ষ্য নির্ধারণ করুন
(৫৪) দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ নির্ধারন করা সহজ নয় তাই প্রতিদিন নিজের লক্ষ নির্ধারন করুন। দিন শেষে পিছনে দেখুন সারাদিন আপনি কি করেছেন এবং ভাবুন আপনার কার্মগুলা কি করে আপনার লক্ষে এক ধাপ সামনে নিয়ে যেতে পারে। ভাবুন নিজের পরিবর্তন আনতে আপনি কি কি করতে পারেন এবং পরবর্তি দিনের লক্ষ নির্ধারন করুন।

ঠিক মতো শোনার অভ্যাস করুন
(৫৫) কোন কিছু ঠিক মতো শোনার অভ্যাস একটি গুরুত্বপূর্ন মাধ্যম যা আপনাকে বুঝিয়ে দেবে অন্যরা আপনার কাছে কি চাচ্ছে । যেমন- আপনি যদি কম কথা বলে ও বেশি শুনে কোন ব্যবসা শুরু করেন তাহলে সেটি হবে আপনার সফলতার মূল চাবিকাঠি। ঠিক মতো শোনার দক্ষতা অর্জন করুন তাহলে আপনি অনেক কিছু শিখতে পারবেন ও অন্যকে সঠিকভাবে বুঝবে শিখবেন।

নিজের স্বাস্থ্য সচেতন হোন
(৫৬) নিয়মিত চর্চা এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্য আপনার সাফলতার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যদি আপনি নিয়মিত চর্চা করেন তাহলে আপনি আপনার প্রতিদিনের সঠিক অভ্যাস গড়ে তুলতে পারবেন যা আপনাকে আরো দক্ষ ও কোন কিছু সহজে ও দ্রুত পেতে সহযোগীতা করবে।

সম্পর্ক বজায় রাখুন ও সেচ্ছা সেবক হোন
(৫৭) সবার সাথে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখুন তাহলে অন্যের সহযোগীতাই হবে আপনার প্রধান সফতলা ও সম্পদের চাবাকাঠি। অন্যের কাছে নিজেকে উপস্থাপন নিশ্চিত করুন এবং নিজেকে সঠিক ভাবে প্রকাশ করুন তাহলেই সফলতা ধরা দিবে।

টেলিভিশন কম দেখুন
(৫৮) সফল ব্যক্তি প্রতিদিন এক ঘন্টার বেশি টেলিভিশন দেখা সব সময়ই এড়িয়ে চলে। কেউ কেউ কখনোই টিভি দেখেন না, কিন্তু কেন? কারন তারা জানে একটি বাক্সের সামনে বসে থাকার চেয়ে কোন কিছু করার চেষ্টা অনেক ভালো।

প্রতিদিন কমবেশি পড়ুন
(৫৯) প্রতিদিন পড়ার অভ্যাস নিজেকে উন্নত করতে, জ্ঞান অর্জন এবং বিশ্বকে ভিন্নভাবে দেখার অনুপ্রেরোনা জোগায়। যে কোন একটা পছন্দের বই খুজে বের করুন ও প্রতিদিন কমপক্ষে তা কমপক্ষে ৩০ মিনিট পড়ার চেষ্টা করুন। আপনি শিক্ষা সংক্রান্ত বই পুস্তক কিনতে পারেন যা আপনাকে পেশাগত ভাবে উন্নত করতে পারে অথবা নিয়মিত ওয়েব সাইট বা সংবাদ পড়তে পারেন।

কর্ম দক্ষতা বৃদ্ধি করার চেস্টা করুন
(৬০) নিজেকে উন্নত করার একটা কার্যকর উপায় হচ্ছে নিজে নিজে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়া। যদি আপনার জীবনকে সুন্দর ভাবে গোছাতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন তাহলে অবশ্যই একটা ভালো বেতনের চাকরী আপনার জন্য অপেক্ষা করবে। আপনাকে জীবনে অবশ্যই আপনার মেধা ও দক্ষতা কাজে লাগাতে হাবে তাহলেই আপনি সুন্দর ভাবে সামনে এগয়ে যেতে পারবেন।

হ্যা বোধক চিন্তা করুন
(৬১) হ্যা বোধক চিন্তাধারা আপনার জীবনের একটি সঠিক পথ। আপনি যদি না বোধক ও সংকির্ন চিন্তাধারা ত্যাগ করতে পারেন তাহলে জীবনে হ্যা বোধক ফলাফল আশা করতে পারবেন। বন্ধুত্বপূর্ণ এবং উৎসহী হতে হবে এবং নিশ্চিত করতে হবে আপনি সব সময়ই নতুন কিছুর জন্য আগ্রহী।

অর্থ সাশ্রয়ী হোন
(৬২) গবেষণায় দেখা গেছে, অর্থের সঠিক ব্যবহার আপনাকে ধনী হতে কর্যকরী ভূমিকা পালন করে। যদি আপনি আপনার ব্যয় নিয়ন্ত্রন করতে পারেন ও প্রতিদিন একটা নির্দিষ্ট পরিমান উপার্জন থেকে জমা করতে পারেন তাহলে নিশ্চিত আপনি সহজেই ধনী হতে পারবেন।

সমমনা মানুষের সাথে ঘুরা ফিরা করুন
(৬৩) সমমনা মনুষের সাথে ঘোরাফেরা কেবল মাত্র আপনার মতামতই সঠিক ভাবে প্রকাশ করতে পারবেন না বরং আপনি আপনার গন্তব্যে খুব দ্রুত পৌছাতে পারবেন।
যদি আপনি ধনী হতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে আত্ননির্ভর হতে হবে তাহলেই আপনার পরিকল্পনা আপনাকে ফল দেবে। এই সকল অভ্যাগুলা শুধুমাত্র আপনাকে আপনার লক্ষেই পৌছে দেবে না বরং আপনি আপনার চলার পথ এক ধাপ বেশি উপভোগ করতে পারবেন ।

উন্নতির চেষ্টা করুন
(৬৪) ৭৭ বিলিয়ন ডলারের মালিক বিল গেটস। তিনি বিশ্বের অন্যতম সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। বিল গেটস ২০১৪ সালে এক সাক্ষাৎকারে রোলিং স্টোনকে বলেন, উন্নতি প্রায়ই কোনো একটি প্রকল্পের মতো মনে হয়, যেখানে নির্দিষ্ট একটি কাজ করা হয় এবং এর বাইরে বড় কোনো কাজ হয় না। কিন্তু আপনি যদি শুধু সেদিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করেন তাহলে হবে না। এক্ষেত্রে আপনার যা করতে হবে তা হলো ক্রমাগত উন্নতি ও উদ্ভাবনের চেষ্টা করে যাওয়া।

দীর্ঘমেয়াদে চিন্তা করুন
(৬৫) বিশ্বের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সফলতম ব্যক্তির কথা বলতে গেলে সবার আগে ওয়ারেন বাফেটের কথা বলতে হবে। তিনি বর্তমানে ৬৬ বিলিয়ন ডলারের সম্পদের মালিক। ওয়ারেন বাফেট বলেন সফল বিনিয়োগের জন্য সময়, নিয়ম-শৃঙ্খলা ও আগ্রহ থাকা প্রয়োজন। আপনার প্রচেষ্টা যতই দারুণ হোক না কেন, এটি সফল হতে কিছু সময় লাগবেই।

উদ্দেশ্য ঠিক রাখতে ‘ধর্মপ্রচারক’ হয়ে উঠুন
(৬৬) অ্যামাজন ডট কমের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও জেফ বেজোস নিজের প্রচেষ্টায় তার সম্পূর্ণ সম্পদ গড়েছেন। বর্তমানে তার ৫২.১ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ রয়েছে। তিনি ২০১০ সালে এক সাক্ষাৎকারে জানান, তিনি ব্যবসাকে একটি ধর্মপ্রচারের মতো বিষয় হিসেবেই দেখেন। তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি এটি শুধু ব্যবসা নয়, এটি ব্যবসার চেয়েও বড় কিছু।

হ্যাকারের মতো চিন্তা করুন
(৬৭) ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ বর্তমানে ৪৯.৪ বিলিয়ন ডলারের মালিক। তিনি হারভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটি তৈরি করেন ২০০৪ সালে। এরপর তাকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি। জাকারবার্গ জানান, ক্রমাগত উন্নতি করার জন্য আপনাকে হ্যাকারদের মতোই চিন্তা করতে হবে। হ্যাকররা যেমন বিশ্বাস করেন কোনো বিষয়ে আরও উন্নতি সম্ভব এবং কোনো বিষয়ই পরিপূর্ণ নয়।

অধিগ্রহণ করতে আগ্রাসী হোন
(৬৮) সিআইএর জন্য ডেটাবেজ তৈরি করে ক্যারিয়ার শুরু করেন ল্যারি এলিসন। তিনি বর্তমানে ৪৮.৮ বিলিয়ন ডলারের মালিক। এরপর তিনি ১৯৭৭ সালে ওরাকল নামে ডেটাবেজ সফটওয়্যার কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। ওয়াল স্ট্রিটকে তিনি বলেন, আমরা বহু কাজে আমাদের অর্থ ব্যয় করি। আমরা স্টক কিনতে পারি, ডিভিডেন্ডের জন্যও অর্থ ব্যয় করতে পারি। কিন্তু আমরা প্রায়ই বড় অংকের অর্থ ব্যয়ে অধিগ্রহণ করতে আগ্রহী হই না। যদিও এ বিষয়টি খুবই সম্ভাবনাময়।

কখনোই শেখা বন্ধ করবেন না
(৬৯) নিউ ইয়র্কের সাবেক মেয়র মাইকেল ব্লুমবার্গ বর্তমানে ৪৩.১ বিলিয়ন ডলারের মালিক। তিনি ব্লুমবার্গ এলপির প্রতিষ্ঠাতা। ব্লুমবার্গকে তিনি জানান, তার সাফল্যের সূত্র হলো কখনোই শেখা বন্ধ না করা। সব সময়েই নিত্যনতুন বিষয় শিখতে হবে এবং শেখার এ আগ্রহ কখনোই বাদ দেওয়া যাবে না বলে তিনি মনে করেন।

প্রমাণিত ব্যবস্থাপনা স্টাইল ব্যবহার করুন
(৭০) চার্লস কোচ তার বাবার কোচ ইন্ডাস্ট্রিজ উত্তরাধিকার সূত্রে পেলেও তিনি কখনোই তাতে থেমে থাকেননি। তিনি বহু ক্ষেত্রেই তার সাফল্য বিস্তৃত করেছেন। বর্তমানে তার মোট সম্পদের অর্থমূল্য প্রায় ৪২.৯ বিলিয়ন ডলার। তিনি জানান ব্যবস্থাপনায় প্রমাণিত স্টাইল ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মার্কেট-বেজড ম্যানেজমেন্ট (এমবিএম) কোনো প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘমেয়াদে সাফল্য এনে দিতে পারে। এছাড়া ফ্রি স্পিচ, প্রপার্টি রাইটস ও প্রগ্রেস হতে পারে স্বাস্থ্যকর প্রবৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়।

প্রতিযোগীদের থেকে এগিয়ে থাকুন
(৭১) বার্নার্ড আর্নল্ট বিলাসবহুল পণ্য নির্মাতা এলভিএমএইচের কর্নধার। তিনি ৩৪.৭ বিলিয়ন ডলারের সম্পদের মালিক। তার প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় রয়েছে বেশ কিছু বিলাসবহুল পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। তিনি বলেন ‘আমি খুবই প্রতিযোগী মনোভাবসম্পন্ন। আমি প্রতিযোগিদের কাছ থেকে এগিয়ে থাকতে পছন্দ করি এবং সামনে এগিয়ে যেতে চাই।’

ভোক্তার প্রয়োজনীয় প্রযুক্তির দিকে লক্ষ্য রাখুন
(৭২) লেরি পেইজ সার্চ ইঞ্জিন গুগলের প্রতিষ্ঠাতা। তার বর্তমান সম্পদের পরিমাণ ৩৭.৫ বিলিয়ন ডলার। ল্যারি পেইজ বলেন ব্যবসার সাফল্যের জন্য ভোক্তার প্রয়োজনীয় প্রযুক্তির দিকে লক্ষ্য রাখুন। আপনি চাইলেই ১০ জনকে নিয়ে একটি ইন্টারনেট কোম্পানি খুলতে পারেন, যেখানে থাকতে পারে বিলিয়ন ব্যবহারকারী। এতে বড় অংকের বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে না। এ থেকে বড় অংকের অর্থ উপার্জনও সম্ভব হবে। এটি স্বাভাবিক ও এ ধরনের বিষয়ে বহু মানুষই এখন মনোযোগী হচ্ছেন।

ব্যর্থতা থেকে শিখুন
(৭৩) মেক্সিকান এ ব্যবসায়ীর মালিকানায় রয়েছে কয়েকশ প্রতিষ্ঠান। কার্লোসের মোট সম্পদের পরিমাণ ৫৮.২ বিলিয়ন ডলার। তিনি ২০১০ সালে আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব বৈরুতে বলেন ‘আমরা যখন সমস্যার মুখোমুখি হই, তারা চলে যায়। এ কারণে ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিন এবং সাফল্যকে গোপনে ডেকে আনুন।’

মাত্রাতিরিক্ত খরচ না করা
(৭৪) মাত্রাতিরিক্ত খরচ ধনী হবার প্রদান অন্তরায়। আপনি যদি ধনী হতে চান তাহলে আপনাকে এই অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। তা না হলে আপনি কখনই ধনী হতে পারবেন না। বাংলাতে একটা কথা আছে আয় বুজে ব্যয় কর।

সঠিক পরিকল্পনা
(৭৫) সঠিক পরিকল্পনা ছাড়া ধনী হওয়া যায় না। পরিকল্পনার ছাড়া ধনী হবার চিন্তা করা গাছে কাঁঠাল গুফে তেল এর সামিল। সুতরাং ধনী হতে চাইলে ভাল পরিকল্পনা থাকতে হবে।

কাজের প্রতি মূল্যায়ন
(৭৬) কাজকে ভালবাসা হছে ধনী হবার মূল মন্ত্র। যে কাজ কে ভালবাসে না তার ধারা ধনী হওয়া অসম্ভব।যে যেই কাজ করে তাকে সেই কাজ ভালবাসতে হবে। কাজের প্রতি আগ্রহ, ভালবাসা না থাকলে সেই কাজে সাফল্য পাওয়া যায় না।

সঞ্চয় করা
(৭৭) কথায় আছে ছোট ছোট বালুকনা বিন্দু বিন্দু জল গড়ে তলে মহাদেশ সাগর অতল। সুতরাং ধনী হতে হলে সঞ্চয় করতে হবে। অল্প অল্প টাকা জমিয়ে একটা কিছু করা যায়। টাকায় টাকা আনে কথাটা মনে রাখতে হবে।

ঋণ না করা
(৭৮) ধনী হতে হলে ঋণ করা বন্ধ করতে হবে। সুদে ঋণ করা ধনী হবার পথের অন্তরায়। ধনী হবার জন্য ঋণ থেকে মুক্ত হতে হবে।

একাধিক আয়ের পথ
(৭৯) ধনী হবার জন্য একাধিক আয়ের পথ খুলা রাখতে হবে। একই সোর্স এর উপর ভরসা করে বসে থাকলে ধনীত দুরের কথা বেচে থাকাই কষ্টের হয়ে দারাবে।

অলসতা পরিহার করা
(৮০) কথায় আছে অলসতা দরিদ্রতা আনে পাপে আনে দুখ। ধনী হতে চাইলে অলসতা পরিহার করতে হবে। সঠিক সময়ে সঠিক কাজ শেষ করতে হবে।

সময়ের সঠিক ব্যাবহার
(৮১) সময়ের সঠিক ব্যবহার ছাড়া ধনী হওয়া যায় না। আজকের কাজ আজকেই শেষ করতে হবে। কালকের জন্যে ফেলে রাখলে কাজ বাড়তেই থাকবে। ধনী হতে হলে সময় এর সঠিক ব্যাবহার করতে হবে।

 

অর্থ অনুসরন করুন
(৮৩) প্রথম কাজই হলো উপার্জন বাড়ানো। আমার উপার্জন ছিলো প্রতি মাসে $৩০০০ এবং নয় বছর পর তা $২০,০০০ এ দাড়িয়েছে। তাই বলি, অর্থ অনুসরন করুন, আর সে ই আপনাকে বিভিন্ন সুযোগ তৈরি করে দিবে।

সদম্ভে না দেখিয়ে, দৃষ্টিগোচর করুন
(৮৪) আমার ব্যবসায় যতক্ষন পর্যন্ত নিরাপদ উপার্জনের ব্যবস্থা না করেছে, তার আগে আমি উচ্চাভিলাসি ঘড়ি বা গাড়ী ক্রয় করি নি। আমি এখন কেবল মিলিয়নিয়ার তাই এখনও টয়োটাতেই আছি।

বিনিযোগের জন্য সঞ্চয় করুন, সঞ্চয়ের জন্য সঞ্চয় নয়
(৮৫) সঞ্চয়ী হওয়ার একমাত্র উদ্দেশ্য হবে অন্য কোন খাতে আবার বিনিয়োগ করা। আপনার জমানো টাকা নিরাপদ ও বিশুদ্ধ বিনিয়োগে রাখুন। এই হিসাবের টাকাগুলো অন্যকোন কাজে ব্যবহার করবেন না, এমনকি কোন জরুরি প্রয়োজনেও না। এই কাজটি আপনার প্রথম পদক্ষেপটি পুরন করবে (উপার্জন বাড়ানো)।

ঋণ করা থেকে বিরত থাকুন যা আপনার উপার্জন বাড়াবে না:
(৮৬) এমন একটি নিয়ম গেথে রাখুন যে আপনি কখনই ঋণ করে কিছু করবেন না, যা আপনাকে উপার্জন বাড়াবে না। আমি ধার করে গাড়ী কিনেছি, কারন তা আমার উপার্জন বাড়াতে সহায়তা করবে। ধনী লোকেরা কর্জ করে বিনিয়োগ করে, কারন, বিনিময়ে ফেরত হিসেবে অর্থের ধারা বৃদ্ধি করতে পারবে। দরিদ্র লোকেরা কর্জ করে দৈনন্দিন জিনিসপত্র কেনে যা দরিদ্রকে আরও দরিদ্র করে এবং ধনীকে আরু ধনী।

টাকা কখনও ঘুমায় না
(৮৭) ঘড়ি, শিডিউল বা ছুটির দিন বোঝে না এবং আপনারও বোঝা উচিত নয়। যার ভালো কাজ করার উদ্যম আছে, অর্থ তাকেই ভালোবাসে। ২৪ বছর বয়সে আমি সুপারস্টোর এ কাজ করতাম। স্টোরটি সন্ধ্যা সাতটায় বন্ধ হয়ে যেতো। কিন্তু অতিরিক্ত উপার্জনের জন্য দশটা পর্যন্ত কাজ করতাম। ভাগ্যবান ব্যক্তি হওয়ার আশায় কখনও বসে থাকা যাবেনা। অন্যের চেয়ে বেশি পরিশ্রম করতে হবে।

দরিদ্রতার কোন ভিত্তি নেই
(৮৮) আমিও দরিদ্র ছিলাম, এখন তা দুধু পান করতে গেছে। যেসব আইডিয়া আপনাকে দরিদ্র বানাচ্ছে, ঝেড়ে ফেলে দিন। বিল গেটস এর উক্তিটি নিশ্চয়ই মনে আছে, “যদি দরিদ্র হয়ে জন্মাও সেটা তোমার দোষ নয়। কিন্তু যদি দরিদ্র হয়ে দুনিয়া ত্যাগ করো সেটা তোমার দোষ।”

মিলিয়নিয়ার পরামর্শক নিন
(৮৯) আমাদের অনেকেই দরিদ্র অথবা মধ্যম শ্রেণীর পরিবার থেকে এসেছি এবং আমাদের ধারনাগুলো সেই মধ্যম মানেরই। আমি অনেক মিলিয়নিয়ারকে অধ্যয়ন করেছি এবং তারা যা যা করেছে আমিও তাই সরাসরি অনুসরন (ডুপ্লিকেট) করেছি। আপনার ব্যক্তিগত মিলিয়নিয়ার নির্বাচন করুন এবং তাদের নিয়ে অধ্যয়ন করুন।

 

লক্ষ্য স্থির করুন ১০ মিলিয়নের, ১ মিলিয়ন নয়
(৯০) সবচেয়ে বড় ভুল করেছি, বড় চিন্তা না করে। আমি যেটা বলতে চাচ্ছি, লক্ষ্য যেন এক মিলিয়নের চেয়ে বেশি হয়। এই গ্রহে অর্থের অভাব নেই, আছে শুধু বড় চিন্তার।
(৯১) প্রতিজ্ঞা করুন ধনী হওয়ার জন্য আপনার লক্ষ্য থাকতে হবে উচ্চ। আর এ উচ্চ লক্ষ্য ধরে রাখতে সবার সঙ্গেই আপনার সে বিষয়ে আলোচনা করতে হবে। তাদের সবাইকেই যথাযথভাবে বড় লক্ষ্য বিষয়ে জানাতে হবে। এ জন্য বড় প্রতিজ্ঞাও করতে হবে অহরহ। তবে শুধু প্রতিজ্ঞাই নয়, তা যেন বাস্তবতা পায়, প্রতিজ্ঞাগুলো যেন পালিত হয়, সে জন্যও লক্ষ্য রাখতে হবে। আর এতে বহু মানুষই আপনাকে সহায়তা করতে এগিয়ে আসবে।
(৯২) নিজেকে গ্রহণ করুন আপনি যদি অন্যের কাছে গ্রহণীয় হতে চান তাহলে সবার আগে নিজেকে গ্রহণ করতে শিখুন। এ জন্য আপনার প্রচেষ্টা থাকতে হবে নিজের সব বিষয়কে গ্রহণ করে নেওয়া। আপনি সবচেয়ে ভালো কাজ করেছেন, এ বিষয়ে সন্তুষ্টি অত্যন্ত জরুরি বিষয়। আপনি যখন নিজেকে গ্রহণ করতে শিখবেন তখন অন্যরাও আপনাকে গ্রহণ করতে শুরু করবে।

(৯৩) নিজের সম্পদের দায়িত্ব নিন আপনার নিজের সম্পদের সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিজের হাতেই রাখতে হবে। অন্যদের ওপর নির্ভর করে আপনি ধনী হতে পারবেন না। বহু মানুষই রয়েছেন, যারা নিজের ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে কত টাকা আছে সে সম্পর্কে জানেন না। এ ধরনের ক্ষেত্রে সঠিকভাবে অর্থ ব্যয় কিংবা অন্যান্য বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয় না। তাই নিজের সম্পদ বাড়াতে হলে বর্তমানে যা রয়েছে, তার ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে।
(৯৪) ঋণ নিয়ন্ত্রণ বিশ্বের অসংখ্য মানুষের জীবনধারণ ঋণের কারণে বাধাগ্রস্ত হয়। ঋণের চাপে তারা অনেকটা জেলে থাকার মতোই অবস্থায় পড়ে। নিয়মিত কিস্তি পরিশোধের চাপে তাদের নতুন কিছুই করা সম্ভব হয় না। এ অবস্থায় যে কোনো মানুষেরই ধনী হওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। এটি অনেকটা ফাঁদে আটকা পড়ার মতো। তাই ঋণের জালে জর্জরিত হওয়ার আগেই কিভাবে আপনার অর্থ উপার্জন বাড়ানো যায় এবং তা দিয়ে ধনী হওয়া যায় এ বিষয়ে সচেতন হোন।

(৯৫) ভাগ্যকে জয় করুন দুর্ভাগ্যকে সৌভাগ্যে রূপান্তর করা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন যথাযথভাবে চিন্তাভাবনা ও প্রচেষ্টা। প্রত্যেকবার দুর্ভাগ্যের মুখোমুখি হলেই নিজেকে প্রশ্ন করুন, এ বিষয়টিকে আমি কিভাবে সৌভাগ্যে রূপান্তরিত করতে পারি? এতে আপনার সামনে সৌভাগ্যের নতুন দিগন্ত খুলে যেতে পারে। দুর্ভাগ্য নিয়ে কেউ জন্মায় না। ভাগ্যকে গড়ে নিতে হয়। আপনিও চেষ্টা করলে দুর্ভাগ্য দূর করে সৌভাগ্য আনতে পারবেন।

(৯৬) নিজের স্থান খুঁজে নিন আপনি যদি একজন ধনী ব্যক্তি হয়ে উঠতে চান তাহলে নিজের জন্য সুবিধাজনক একটি স্থান খুঁজে বের করতে হবে। এক্ষেত্রে অনেকেই জানান, তারা তৃতীয় বিশ্বের দেশে বাস করেন এবং সঠিকভাবে স্থান খুঁজে পান না। এ ক্ষেত্রে বলতেই হয়, নিজের জন্য সুবিধাজনক একটি স্থান খুঁজে নেওয়া জরুরি। যেখানে আপনার মনে হবে যথেষ্ট উপার্জন, পরিচিতি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা গড়ার ব্যবস্থা রয়েছে, সেখানেই নিজের অবস্থান গড়ুন।

(৯৭) শিক্ষা নিন ধনী হওয়ার জন্য এ বিষয়ে শিক্ষা নিন। এ ক্ষেত্রে ধনী হওয়ার বিস্তারিত জেনে নিতে পারেন বিভিন্ন বই থেকে। এছাড়া কিছুটা খরচ করে হলেও কোনো কোচের সহায়তা নিতে পারেন। বিভিন্ন অনুকরণীয় ব্যক্তিকেও আপনি গুরু হিসেবে মানতে পারেন, যাদের কাছ থেকে নিয়মিত পরামর্শ নিতে পারলে ধনী হওয়ার বহু বিষয় শিখতে পারবেন।

(৯৮) রাসুলে করীম (সঃ) বর্ণিত নিম্নে আমল টি ধনী হওয়ার জন্য অধিক ফলপ্রদ । ইহা একটি বহু পরিক্ষিত আমল । এই আমল আরম্ভ করিবার পর সপ্তাহকাল যাইতে না যাইতে ইনশাল্লাহ ফল পাওয়া যাইবে । জুম্মার দিন জুম্মার নামায শেষ করে কাহারো সাথে কথা না বলে কেবলা মুখী অবস্তায় ৭০ বার দোয়াটি বিনয় সহকারে পাঠ করিবে ।
আল্লাহূম্মা আকফীণী বিহাল্লীকা আন হারা মিকা অ আগ নি নী বি ফাদ লিকা আম্মান সিওয়াকা ।
ধনী হবার বিশেষ আমল ২

(৯৯) যে ব্যাক্তি ৭ দিন নিম্মোক্ত কালামটি ৭৮৬ বার পাঠ করবে গরীব থাকলে ধনি হবে, ব্যবসায়ী হলে ব্যবসায় প্রচুর লাভ হবে।
কালামটি হলোঃ ﺑﺴﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺍﻟﺮﺣﻴ ﻢ
উল্লেখ্যঃ নিয়মমাফিক করতে হবে। অন্যথা কোন উপকার পাবেন না। নিয়মমতো পালনের তাওফিক দাও খোদা

বিকল্প আয়ের রাস্তা খুঁজুন
(১০০) আয় করার বিকল্প অনেক রাস্তা আছে। তবে আপনাকে এ রাস্তাগুলো থেকে আয় করার জন্য একটু উদ্যোগী হতে হবে। বর্তমানে অনলাইনে খুব সহজে বাড়তি আয় করা যায়। আপনি চাইলে একটু পরিশ্রমের মাধ্যমে ব্লগ, ওয়েবসাইট, ইউটিউব ইত্যাদি থেকে আয় করতে পারেন। প্রথম দিকে আপনার হয়তো খুবই কষ্ট হবে। কিন্তু একটা পর্যায়ে আপনি যখন অডিয়েন্স তৈরি করে ফেলবেন তখন আপনার জন্য কাজটি খুবই সহজ হয়ে যাবে। সুতরাং প্রযুক্তির যুগে অনলাইনের সহযোগিতা নিয়ে বাড়তি আয়ের চেষ্টা করুন।

চাকরির পাশাপাশি ছোটখাট ব্যবসা শুরু করুন
(১০১) আয় বাড়ানোর সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হল, চাকরির পাশাপাশি ছোটখাট একটা ব্যবসা শুরু করা। যদিও এটি হবে আপনার মূল কাজের পাশাপাশি পার্টটাইম কাজ, তবুও একদিন এটিই হয়ে পড়তে পারে আপনার মূল কাজ। যদি আপনি যথেষ্ট দক্ষতা ও বুদ্ধিমত্তা খাটিয়ে কাজটিকে অনেক দিন চালিয়ে যান তবেই আপনি এখান থেকে অসাধারণ একটি ফল পাবেন। চাকরির পাশাপাশি এমন একটি কাজ করা শুরু করুন যেটাতে আপনি মজা পান। এটা নিশ্চিত যে, কয়েকদিন পর থেকেই আপনার পরিবারের আর্থিক সমস্যা কাটতে শুরু করবে।

InfotakeBD

View posts by InfotakeBD
InfotakeBD is a information sharing blog, We share information for you. Please visit us and if you want to contribute for this blog please email us infotakebd@gmail.com. Thank you

Leave a Reply

Scroll to top
error: Content is protected !!